মাশরাফির মুখোমুখি মুশফিক-স্যামি
সাকিব-নাসির মোকাবিলা দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে বিপিএলের পঞ্চম আসর। শনিবার উদ্বোধনী দিনে রয়েছে আরও একটি ম্যাচ। সন্ধ্যা সাতটায় মাঠে নামবে মাশরাফি বিন মুর্তজার রংপুর রাইডার্স। প্রতিপক্ষ ড্যারেন সামি ও মুশফিকুর রহিমের রাজশাহী কিংস।
কাগজে কলমে এগিয়ে মাশরাফির দল। তবে ড্যারেন স্যামির সাথে মুশফিকের মিশেলে রাজশাহীকে হালকা ভাবে নেয়ার কোনোই কারণ নেই।
সীমিত ওভারের ফরম্যাটের ভয়ঙ্কর ওপেনার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম হতে পারেন রংপুরের সবচেয়ে বড় সম্পদ ও সেরা ব্যাটিং অস্ত্র। যে কোন ম্যাচ একা বদলে দেয়ার পর্যাপ্ত সামর্থ আছে তার। আজকের ম্যাচে এই কিউই ড্যাশিং ওপেনারকে দেখা গেলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না।
সিলেটে চাওর হয়ে গেছে, শনিবার সকালে রাজধানীতে পৌঁছে হেলিকপ্টারে সিলেটে এসে শনিবার সন্ধ্যার ম্যাচ খেলবেন ম্যাককালাম। ম্যাককালাম খেললে তো কথাই নেই। এই ব্ল্যাক ক্যাপস না খেললেও ম্যাচে ফেবারিট মাশরাফির রংপুরই। কেননা বিপিএলে সর্বাধিক তিন বারের চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়কত্ব করা মাশরাফি বিন মুর্তজা রংপুরের অন্যতম নির্ভরতা, দেশের অভিজ্ঞ ও পরিণত পারফরমার।
শাাহরিয়ার নাফীস আর মোহাম্মদ মিঠুনের মত অভিজ্ঞ উইলোবাজ আছেন ওপরের দিকে। সাথে লঙ্কান কুশল পেরেরা, জনসন চার্লস , ইংলিশ স্পেশালিষ্ট রবি বোপারা , ডেভিড উইলি। মাঝখানে থিসারা পেরেরা আর জিয়াউর রহমানের মত হার্ড হিটার কাম পেসার। পেসার রুবেল হোসেনও রংপুরে।
স্পিন ডিপার্টমেন্টে সব পরিণত ও পরীক্ষিত পারফরমার- আব্দুর রাজ্জাক, সোহাগ গাজী ও স্যামুয়েল বদ্রি। এদের সাথে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম যুক্ত হলে মাশরাফির দলের শক্তি বাড়বে বহুগুণে। প্রথম ম্যাচে এ দলকে হারানো হবে খুব কঠিন ।
তবে রাজশাহীও হেলাফেলার দল না এবার। অভিজ্ঞ ও কুশলী কোচ সারোয়ার ইমরান ছক কষছেন। গতবার অল্পের জন্য শিরোপা জিততে না পারা রাজশাহী এবার আরও সমৃদ্ধ। ড্যারেন সামি আগের বারই দেখিয়ে দিয়েছেন, ক্লোজ ম্যাচ একাই টানতে পারেন। তার সাথে এবার মুশফিক যোগ হয়েছেন, প্রতি খেলায় যার ব্যাট অনেক বেশী বিশ্বস্ত। ইংলিশ লুক রাইট, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান লেন্ডল সিমন্স, ম্যালকম ওয়েলার, মোহাম্মদ সামিও আছেন।
বিপিএলের প্রথম তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। গতবারই শুধু শিরোপা জেতা হয়নি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়ন করা মাশরাফি এবারই প্রথম মাঠে নামছেন ভিন্ন পরিচয়ে। এবার আর তিনি চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে মাঠে নামতে পারছেন না।
রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফির অবশ্য তা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। তার সোজা সাপটা কথা, ‘আমার কাছে মনে হয় , সবাই এক আছি। দল হয়ে খেলার চেষ্টা করবো। এসব টুর্নামেন্টে একেক জন আসেন একেক জায়গা থেকে। সুতরাং কম্বিনেশন গড়ে তোলা খুব জরুরী। সেটা তৈরীর চেষ্টা করছি। তা করতে পারলে ভালো হবে আশা করি।’
মাশরাফি মনে করেন, এই আসর স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য বড় সুযোগ। তিনি বলেন, ‘লোকাল যারা আছে, তাদের জন্য এটা বড় সুযোগ। অনেক ভাল ক্রিকেটার আসছেন। অনেক আকর্ষণীয় ও উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ হবে। যদিও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে শেখার সুযোগ কম। তারপরও কুমারা সাঙ্গাকারার মত অনেক বড় মাপের ব্যাটসম্যান আছেন। মাহেলা জয়বর্ধনে কোচ হয়ে এসেছেন। তাদের কাছ থেকে শেখার আছে অনেক কিছু।’
অন্যদিকে ড্যারেন সামিও আশাবাদি। তার কথা, ‘গতবার কাছাকাছি গিয়েও পারিনি। এবার মুশফিক এসেছে। লেন্ডন সিমন্স আর লুক রাইটের মত মারকুটে টপ অর্ডারকে পেয়েছি। শুরুর ৫/৬ ওভারে আমাদের রান চাকা সচল থাকবে। আমার বিশ্বাস, মুশফিক উইকেটের পিছনে থেকে আমাদের সাহায্য করবে।’
তবে স্যামির দুঃখ, কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের ইনজুরি। তাই তো খানিক আফসোস রয়েই গেছে তার।
এআরবি/এমএমআর/আইআই