ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

পার্লের উইকেটও অজানা মাশরাফিদের!

আরিফুর রহমান বাবু | প্রকাশিত: ০২:৫৪ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০১৭

নিয়মিত খেলা না হলে কিংবা নিজেরা নিকট অতিত ও সাম্প্রতিক সময়ে না খেললে যা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশের ঠিক তাই হয়েছিল। কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভালের উইকেট আসলে কেমন? ওই উইকেটে কত রান নিরাপদ, কত স্কোর তাড়া করা সম্ভব- তার সবই ছিল অজানা টাইগারদের।

কারণ, ওই মাঠে বাংলাদেশ শেষ খেলেছিল ১৫ বছর আগে ২০০২ সালের ৯ অক্টোবর। বলার অপেক্ষা রাখে না, ওই ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে যারা খেলেছিলেন, তারা এখন আর কেউ দলে নেই। শুধু ওই ম্যাচের কথা বলা কেন, কিম্বার্লির ডায়মন্ড ওভালে শেষ ওয়ানডেই হয়েছিল চার বছর আগে, ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি।

তখন ওই মাঠের উইকেটের যে চরিত্র ছিল, তার সাথে এখনকার আচরণ ও গতি-প্রকৃতির মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। পার্থক্যর মাত্রাটা কেমন শুনবেন? তাহলে একটা ছোট্র পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। মিলিয়ে নিন।

ইতিহাস জানাচ্ছে, বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার গত ১৫ অক্টোবরের ম্যাচের আগে ডায়মন্ড ওভালে ২০১৩ সালে হওয়া শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছিল ২৭ রানে। বাংলাদেশ যে রান করে ১০ উইকেটে হেরেছে, প্রায় সমান ২৭৯ স্কোর নিয়ে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। অথচ রোববার মনে হলো ২৭৮ কোনো রানই না। বোদ্ধা-পন্ডিত, বিশেষজ্ঞ ও সাবেক তারকা ক্রিকেটার- সবার ধারণা, কিম্বার্লিতে ৩২০-৩৩০‘র কম করে লড়া কঠিন। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের কাছে তাই ভক্ত ও সমর্থকদের প্রত্যাশা বেশি।

আগামীকাল (বুধবার) দ্বিতীয় ওয়ানডে। এবারে ভেন্যু পার্লের বোল্যান্ড পার্ক। বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হবে ম্যাচটি। দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে প্রত্যাশার পাশাপাশি কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্নও সবার মনে। অধিনায়ক মাশরাফি প্রথম ম্যাচ শেষেই বলে রেখেছেন, ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। ওপরের দিকে একজনার লম্বা ইনিংস খেলার তাগিদও ছিল অধিনায়কের কন্ঠে। আর প্রথম ম্যাচের হতাশাব্যাঞ্জক বোলিংয়ের পর বোলারদের বোধোদয় এবং দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে বাড়তি সচেতনতার জোর তাগিদ দিয়েছেন মাশরাফি।

পারফরমেন্সে উন্নতি ঘটাতে হবে। প্রথম দিন মুশফিকের সেঞ্চুরিতে তবু রান আড়াইশো পার হয়েছিল। বাকিরা কেউ কিন্তু ৩০‘এর ঘরেও পা রাখতে পারেননি। কিন্তু কঠিন সত্য হলো, কিম্বার্লির মত পার্লের বোল্যান্ড পার্কের উইকেট সম্পর্কেও কোন ধারণা নেই টাইগারদের। এ মাঠেও গত চার বছরে কোন ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়নি।

১৯৯৭ সালের ২৭ জানুয়ারী ভারত-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয়েছিল বোল্যান্ড পার্কের। আর শেষ একদিনের খেলা হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারী। প্রতিপক্ষ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ড। ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে সেই ম্যাচটি ছিল ‘লো স্কোরিং।’ যাতে কিউইরা জিতেছিল মাত্র ১ উইকেটের ব্যবধানে।

স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে দু’শোর আশপাশে বেঁধে (২০৮/১০, ৪৬.২ ওভার) ১ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল কিউইরা। ওই ম্যাচের স্কোরলাইন দেখে ভাবার কোনই উপায় নেই যে, বোল্যান্ড পার্কে রান হয় না; হয়। এই মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ স্কোর ৩০১/৮, (২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। লঙ্কানদের ৪৩ রানে অলআউট করে প্রোটিয়ারা বোল্যান্ড পার্ক ওভালে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (২৫৮ রানে) জয়ের স্বাদও নেয়।

কিম্বার্লিতেই প্রমাণ হয়েছে উইকেটের চরিত্র ও আচরণ, গতি-প্রকৃতি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে। পার্লে যদি উইকেটের আচরণ আগের মত থাকে, তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাবনাও একটু বেশি থাকবে। কারণ ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে, এই মাঠে পেসারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও সফল।

উইকেট আছে দুই ফাস্ট বোলার অ্যাডো ব্রান্ডেস (জিম্বাবুয়ের) ৪১ রানে ৫টি, ভারতের বিপক্ষে ১৯৯৭ সালের ২৭ জানুয়ারি। আর লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার (২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫/৫৪)। নয়জন বোলার এখন পর্যন্ত বোল্যান্ড পার্ক ওভালে ৪ উইকেট করে পেয়েছেন। যার মধ্যে আছেন তিন স্পিনার কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড), ভারতের অনিল কুম্বলে ও শ্রীলঙ্কান অরবিন্দ ডি সিলভা।

বাংলাদেশ সমর্থকদের আশাবাদি হবার আরও একটি তথ্য, ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারি এই মাঠে হওয়া শেষ ওয়ানডেতে হেরেছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই ম্যাচে ৭.২ ওভারে ২২ রানে ৪ উইকেট দখল করে কিউইদের জয়ের রূপকার হন কেন উইলিয়ামসন। কাজেই এ মাঠে হয়ত বাঁ-হাতি সাকিব আল হাসানের সঙ্গে অফস্পিনার মেহেদী হাসান ামিরাজকে একাদশে দেখা যেতে পারে।

এআরবি/আইএইচএস/আইআই

আরও পড়ুন