দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারানো সম্ভব : মুশফিক
দুই টেস্টের সিরিজ ০-২ ব্যবধানে হারলেও এই তো কয়েক মাস আগে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করেনি বাংলাদেশ। ট্রেন্ট বোল্ট আর টিম সাউদির দুর্দান্ত গতি ও ভয়ঙ্কার সুইংয়ের মুখে এতটুকু না দমে প্রচন্ড সাহস, আত্মবিশ্বাস আর অবিচল আস্থায় প্রথম টেস্টে লিড নিয়েছিল মুশফিকের দল।
সাকিব আল হাসানের অনবদ্য ডাবল সেঞ্চুরি (২১৭) আর অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির (১৫৯) মিশেলে ৩৫৯ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপ গড়ে ওয়েলিংটনে প্রথম টেস্টে ৫৯৫ রানের পাহাড় সমান ইনিংস দাঁড় করিয়েছিল টাইগাররা।
এবার দক্ষিণ আফ্রিকায় তেমন উজ্জ্বল পারফরমেন্সের আশায় মুশফিকুর রহীম। দেশ ছাড়ার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরের ওই উজ্জ্বল পারফরমেন্সের কথাই মনে হচ্ছে বাংলাদেশ অধিনায়কের।
ভাবটা এমন- আমরা বোল্ট ও সাউদির দুর্দান্ত ফাস্ট বোলিংয়ের কাছে নতি স্বীকার করিনি। আশা করি দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও মাথা নিচু থাকবে না। বীরের মত লড়াই করবে। সে লড়ার সত্যিকার মানদÐ কি? হার এড়ানো?
আজ প্রেস কনফারেন্সে এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ অধিনায়কের স্পষ্ট জবাব, ‘অনেকেই হয়ত মনে করছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আমাদের বুঝি কোনই সুযোগ নেই। আমি সে ধারণার সাথে মোটেই একমত নই। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি মন থেকে সাফল্য না চাইলে বা সাফল্যের বিশ্বাস ভিতরে না জন্মালে সাফল্যের নাগাল পাওয়া যায় না। তাই আমি বিশ্বাস করতে চাই, দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারানো সম্ভব।’
মুশফিক সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমাদের মধ্যে তিন বছর আগেও এই বিশ্বাসটা ছিল না। ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্ন করলে আমি বলবো, তিন ফরম্যাটে আমাদের ভালো সুযোগ আছে। গত কিছুদিন যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছি সেই ধারা ধরে রাখতে পারি, তাহলে যে কোন কন্ডিশনেই আমাদের সুযোগ আছে। হয়তো আমাদের বোলিং আক্রমণ কিছুটা অনভিজ্ঞ। অনভিজ্ঞ হলেও তারা অনেক স্কিলফুল। তারা যদি মান অনুযায়ী বোলিং করতে পারে, তাহলে আমার মনে হয় ওদের ব্যাটসম্যানদেরও অনেক সংগ্রাম করতে হবে। ইনশা আল্লাহ আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এই সিরিজটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য বড় মাইলফলক হতে পারে। সেই চ্যালেঞ্জের জন্য আমরা প্রস্তুত।’
মুশফিকের ধারনা, বড় চ্যালেঞ্জ হবে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট ও বাউন্সি উইকেটে প্রোটিয়া ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়াই করা আর সাহস-আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের মিশেলে ভাল ব্যাটিং করাই প্রথম চ্যালেঞ্জ।
সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বার বার তার মনে হচ্ছে নিউজিল্যান্ডে প্রচন্ড ঠান্ডায় কিউই ফাস্ট বোলিং মোকাবিলার স্মৃতিটাই বড় অনুপ্রেরণা। তাই তার মুখে এমন কথা, ‘ক্রিকেট খেলাটাই হচ্ছে চ্যালেঞ্জের খেলা। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে আমরা ভেবেছিলাম বø্যাক ক্যাপ্সদের সুইংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কুলিয়ে উঠতে পারবে না। মুখ থুবড়ে পড়বে; কিন্তু আমরা সেখানে সফল হয়েছি। ব্যাটসম্যানরা সব সময়ই ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এবারের টেস্ট সিরিজটাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জি হবে।’
তবে সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাহস জোগানোর রসদও আছে অধিনায়কের। তার ধারণা, ‘আট বছর আগে যে দলটি দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট খেলতে গিয়েছিল সেখান থেকে এই দলের ব্যাটসসম্যানরা অনেক বেশি পরিণত। আশা করি এই চ্যালেঞ্জ ব্যাটসম্যানরা নিতে পারবে। আমাদের দলে বেশকিছু ম্যাচ উইনার ব্যাটসম্যন আছেন।’
এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম