ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

ইচ্ছা করেই উইকেটের বাইরে এতগুলো ডেলিভারি!

আরিফুর রহমান বাবু | প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টাইগাদের শেষ পরিনতি কি হবে? তা বলে দেবে সময়। তবে আজ দ্বিতীয় দিন শেষে মুশফিক বাহিনীর কৌশল, লক্ষ্য-পরিকল্পনা ও অ্যাপ্রোচ সমর্থকদের মন ভরাতে পারেনি।

শেরে বাংলার টার্নিং পিচেও তামিম-সাকিব, মুশফিক ও নাসির যে দায়িত্ব নিয়ে ইনিংসকে বড় করার প্রাণপন চেষ্টায় ছিলেন, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ‘স্লো ও লো’ ট্র্যাকেই তাদের ভিন্ন রুপ।

আগের টেস্টে স্পিন বান্ধব উইকেটে বেশি সময় উইকেটে কাটানো কঠিন ছিল। সে কারণেই বুঝি এখানেও দীর্ঘ সময় ক্রিজে থাকার ইচ্ছেটাই গেছে কমে। উইকেটে পড়ে থাকলে রান আসবে, অধিনায়ক মুশফিক ছাড়া আর সবার মাথা থেকে এ চিন্তা যেন সরে গেছে। আর তাই ইনিংস শেষ হয়েছে ৩০৫ রানে।

অথচ দীর্ঘ সময় উইকেটে কাটানোর দুর্নিবার আগ্রহ আর ধৈর্য্য ও সংযমি ব্যাটিংয়ের কারণে পাল্টা ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া একই পিচে মাত্র ২ উইকেট খুইয়ে সোয়া দু‘শো রান তুলে ফেলেছে।

আগামীকাল সকালে অতি নাটকীয় কিছু ঘটাতে না পারলে এবার আর লিড নেয়া হবে না মুশফিক বাহিনীর। আর বেশি রানে পিছিয়ে পড়লে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কাও আছে। এই যখন খেলার অবস্থা, সেখানে বাংলাদেশের বোলারদের অ্যাপ্রোচ নিয়েও কথা উঠছে।

অনেকেরই প্রশ্ন, বাংলাদেশের বোলাররা কি একটু বেশি রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়েছেন? তাই যদি না নেবেন, তাহলে কেন ৭০ শতাংশ ডেলিভারি উইকেটের বাইরে করা?

ক্রিকইনফোর বল টু বল কমেন্ট্রি ও পরিসখ্যান পরিস্কার জানিয়েছে, বাংলাদেশের বোলাররা ৭০ ভাগের বেশি ডেলিভারি উইকেটের বাইরে করেছেন। টিভির পর্দায় তা দেখে অনেকেই বিস্মিত! কেন মোস্তাফিজ, সাকিব, মিরাজ ও তাইজুলরা এমন করছেন?

তারা মেলাতেই পারেননি কেন এমন বাইরে বল করা? টেস্টে যেখানে ব্যাটসম্যানকে আক্রমণ না করলে উইকেট পাওয়া খুব কঠিন- সেখানে ক্রমাগত উইকেটের বাইরে বিশেষ করে লেগ স্ট্যাস্পের বাইরে বল ফেলে কি লাভ? তবে কি বাংলাদেশের বোলাররা রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করলেন?

দিন শেষে নাসির দিলেন এ প্রশ্নের জবাব। মিডিয়ার সাথে কথা বলতে এসে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রেস কনফারেন্স কক্ষে বসে নাসির জানিয়ে গেলেন, বাইরে বল করা ইচ্ছাকৃত এবং তাদের কৌশলেরই একটা অংশ।

বোলাররা ভেবে চিন্তেই উইকেট সোজা বল কম করে বেশিরভাগ ডেলিভারি বাইরে ফেলেছেন। কেন? নাসিরের ব্যাখ্যা, স্ট্যাম্পের বল তেমন টার্ন করছে না। বাইরে যে জায়গায় বোলারের বুটের স্পাইক ও ব্যাটসম্যানের বুটের আঘাতে ক্ষত তৈরি হয়ে গেছে, সেখানে বল ফেলতে পারলে টার্ন হচ্ছে।’

তার মানে বাংলাদেশের বোলাররা বিশেষ করে স্পিনাররা টার্ন পেতেই পপিং ক্রিজের আশ-পাশের ক্ষত জায়গায় বল ফেলার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু ৭০ ভাগের বেশি বল ওই ক্ষত স্থানে ফেলেও কোন লাভ হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার একজন ব্যাটসম্যানও ওই ক্ষত স্থানে পড়ে বাড়তি টার্ন করা ডেলিভারিতে আউট হননি। যে দুই অজি ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন তার একজন ম্যাট রেনশ মোস্তাফিজের লেগ স্ট্যাস্পের অনেক বাইরের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।

রেনশর ব্যাটে লেগে বল চলে যাচ্ছিল প্রায় ফাইন লেগে। কিপার মুশফিক লেগ সাইডে অনেকদূও শরীর ফেলে অসামান্য দক্ষতায় তা ধরে ফেলেন। এছাড়া অসি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বোল্ড হয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুলের বলে।

তাইজুলের উইকেট সোজা ডেলিভারি অজি ক্যাপ্টেনকে বোকা বানিয়ে উইকেট ভেঙ্গে দেয়। স্মিথ টার্নের অপেক্ষায় ছিলেন; কিন্তু বল সোজা গিয়ে তার স্ট্যাম্পে গিয়ে আঘাত হানে।

এদিকে নাসির ওয়ার্নার ও স্মিথের বিরুদ্ধে বাইরে বল করার আরও একটা কারণও উপস্থাপন করলেন। তার ভাষায়, ওয়ার্নার-স্মিথ খুব বেশি রান করতে চায়। তারা সব সময়ই রানের চাকা সচলের চেষ্টা করে। আমাদের চেষ্টা ছিলো ওদেরকে ব্লক করার। ওরা যাতে কোনো ভুল করে সেই চেষ্টা ছিল।

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন