নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা চট্টগ্রাম
নিরাপত্তার অজুহাতে একবার সফর বাতিল করা অস্ট্রেলিয়ানদের চাহিদা মোতাবেক সর্বোচ্চ ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেয়ার নিশ্চয়তা আগেই দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকায় নেয়া হয়েছিল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। একদম প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি যেমন নিরাপত্তা পান স্টিভেন স্মিথের দলকে সে রকম নিরাপত্তাই দেয়া হয়েছে।
বন্দর নগরীতেও ছিল তেমন কঠোর ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দলের আসা যাওয়ার পথে পুলিশ, র্যাব, সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকে। টিম বাস যে সব সড়ক দিয়ে টিম হোটেল, বিমান বন্দর থেকে মাঠে যায় ও আসে, তার দু'দিকে শত শত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন ।
তারপরও গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে টিম অস্ট্রেলিয়া জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে হোটেলে (রেডিসন ব্লু) ফেরার পথে কে বা কারা অসি টিম বাসে ঢিল ছোড়ে। ঢিলে জানালার কাঁচ ভেঙে গেলেও অস্ট্রেলিয়ার কোন ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ কিংবা অফিসিয়ালদের কেউ আহত হননি।
এই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার সিকিউরিটি টিম প্রধান শন ক্যারোল চট্টগ্রামে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তারাও অস্ট্রেলিয়ান নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পূর্ণ নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
এদিকে সেই ঘটনার পর থেকে বন্দর নগরিতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এক কথায় নিরাপত্তার চাদরে পুরো চট্টগ্রাম শহরের একটা বড় অংশ ঢেকে ফেলা হয়েছে। টিম হোটেল, হোটেল থেকে মাঠে যাতায়াতের সড়ক এবং জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথে সংযুক্ত সব সড়কে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নগরীর অলংকার মোড়, এ কে খান এবং সাগরিকা মোড়ের প্রায় পুরোটা এখন পুলিশ, সশস্ত্র পুলিশ ও র্যাব দিয়ে ঘেরা।
কঠোর নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আজ সকালে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ দল মাঠে আসার আগে থেকে খেলা শুরুর এক ঘন্টা পরও অলংকার ও সাগরিকা মোড় থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের অন্তত দুই থেকে তিন কিলোমিটারের সব সংযোগ সড়কে জনসাধারণকে পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হয়েছে।
সাধারণত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলে ঢাকার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মূল স্টেডিয়ামের ২০০ থেকে ৩০০ গজ দূর থেকে নিরাপত্তা বেষ্টনি শুরু হয়। ঐ অংশে বিসিবির স্টিকারযুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য গাড়ী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। চট্টগ্রামেও সব সময় ঐ ধারাই অব্যাহত ছিল। এবার বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে থেকেই সাগরিকার মোড় থেকে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম পর্যন্ত এক কিলোমিটারের বেশি পথে নিরাপত্তা বেষ্টনি রাখা হয়েছিল। টেস্ট চলাকালীন ঐ জায়গায় জনসাধারণের যানবাহন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করাই ছিল।
গতকাল টিম অস্ট্রেলিয়ার বাসে ঢিল ছোড়ার ঘটনার পর থেকে এখন নিরাপত্তা বেষ্টনি আরও অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করা হয়েছে। সকাল থেকে অলংকার মোড়, এ কে খান ও সাগরিকা মোড় থেকে স্টেডিয়ামের দিকে আসার সব সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ।
এআরবি/এমআর/জেআইএম