ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

চোখ রাঙাচ্ছে সেই ফতুল্লা

ক্রীড়া প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৫৯ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭

তবে কী মিরপুর টেস্টও ১১ বছর আগের ফতুল্লা টেস্টের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে? দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জয়টি অধরা থেকে যাবে না তো মুশফিকুর রহীমদের? মিরপুর টেস্টের তিনদিন শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তাতে টেস্টের চালকের আসনে এখন অস্ট্রেলিয়া। টেস্টের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও এখন তাদের হাতে। বাংলাদেশের জয়ের আশা করাটা যেন স্রেফ বোকামিই।

তৃতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেট হারিয়ে ১০৯। জয়ের জন্য আর প্রয়োজন মাত্র ১৫৬ রান। উইকেটে ইতোমধ্যেই সেট হয়ে গেছেন ডেভিড ওয়ার্নার এবং স্টিভেন স্মিথ। ওয়ার্নার ব্যাট করছেন ৭৪ রান নিয়ে। স্মিথ রয়েছেন ২৫ রানে। দু’জনের ৮০ রানের জুটি ম্যাচটা ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পকেট থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে।

চতুর্থ দিন (আগামীকাল) সকালের সেশনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সেশনে যদি দ্রুত স্মিথ আর ওয়ার্নারকে ফেরানো না যায়, তাহলে জয় সুদুর পরাহত। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। বাস্তবের মুখ দেখবে না আর। ১১ বছর আগে ফতুল্লার ভাগ্যই বরণ করতে হবে মুশফিকদের।

২০০৬ সালে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সফরের প্রথম টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ফতুল্লায়। সেবার টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। শাহরিয়ার নাফীসের সেঞ্চুরির পর অনবদ্য ১৩৮ রানের ওপর ভর করে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৪২৭ রানে।

জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে অলআউট মাত্র ২৬৯ রানে। তাও অ্যাডাম গিলক্রিস্ট একাই ১৪৪ রান করেছিলেন বলে মান রক্ষা হয়েছিল অসিদের। বাংলাদেশ লিড নিয়েছিল ১৫৮ রানের। ওইদিনও সবাই প্রায় নিশ্চিত ছিলেন, বাংলাদেশই জয় পেতে যাচ্ছে। প্রথম ইনিংসে যেখানে ১৫৮ রানের লিড, সেখানে জয় না পাওয়ার কোনো কারণই নেই!

কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে এসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ভরাডুবি উপহার দিলেন। ওয়ার্ন-গিলেস্পিদের তোপের মুখে মাত্র ১৪৮ রানে অলআউট হাবিবুল বাশাররা। ফলে অস্ট্রেলিয়ার সামনে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ৩০৬ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন স্বাভাবিকভাবেই ৩০৭।

ফতুল্লার স্লো এবং লো ট্র্যাকে মোহাম্মদ রফিক আর এনামুল হক জুনিয়রের ঘূর্ণি ফাঁদে আবারও আটকে যাবে অস্ট্রেলিয়া। এমনই ধারনা ছিল সবার; কিন্তু সবার ধারনাকে পাল্টে দিলেন রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। তিনি খেললেন ১১৮ রানের দুরন্ত এক ইনিংস। তার এই এক ইনিংসের ওপর ভর করেই ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায় সেদিন। পন্টিংয়ের সঙ্গে ৭২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ওপেনার ম্যাথ্যু হেইডেনও।

১১ বছর পর বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসে ঠিক একই পরিস্থিতিতে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবার বাংলাদেশের করা ২৬০ রানের জবাবে ২১৭ রানে অলআউট অসিরা। ৪৩ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সেই করুণ অবস্থাই হলো টাইগারদের। অলআউট হলো ২২১ রানে।

জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৫ রান। এবারও ঠিক হেইডেন আর পন্টিংয়ের ভুমিকায় দাঁড়িয়ে গেলেন ডেভিড ওয়ার্নার আর স্টিভেন স্মিথ। এবারও বাংলাদেশের স্পিনাররা, বিশেষ করে সাকিব আর মিরাজ প্রথম ইনিংসে বেশ দাপট দেখালেন। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও দাপট দেখাতে শুরু করে দিয়েছেন তারা; কিন্তু ওয়ার্নার আর স্মিথের ৮০ রানের জুটি বাংলাদেশের বোলারদের প্রতিরোধ সব ভেঙে দিচ্ছে। জয়ের আশা ধীরে ধীরে দুরে সরিয়ে দিচ্ছে।

শেষ পর্যন্ত যদি হেরেই যায় বাংলাদেশ, তাহলে বলতে হবে ১১ বছরে শুধু ভেন্যুটাই পাল্টেছে। ভাগ্য এবং চিত্রনাট্যের কোনো কিছুই পাল্টায়নি। একই ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। যদিও, নাটকের শেষ অংশে এমন মিল দেখতে চাচ্ছে না বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা। তারা চায়, চতুর্থ দিন (আগামীকাল, বুধবার) সকালে আবারও জ্বলে উঠুক সাকিব-মিরাজ। আবারও ধ্বস নামাক অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ে। অসাধারণ একটি জয় উপহার দিক বাংলাদেশকে।

আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন