শক্তিতে কারা এগিয়ে-শান্তর আবাহনী নাকি হৃদয়ের মোহামেডান?

কাকতালীয়ভাবে আকাশি-হলুদ ও সাদা-কালোদের এবারের যাত্রা শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। নাজমুল হোসেন শান্তর আবাহনীর লিগ যাত্রা শুরু হয় ইমরুল কায়েসের অগ্রণী ব্যাংকের কাছে হেরে। আর মোহামেডান প্রথম দিন হোঁচট খেয়েছিল নবাগত গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে।
প্রথম ম্যাচের হারের ধাক্কা সামলে নিয়েছে আবাহনী। তারপর টানা ৯ ম্যাচ জিতেছে আকাশি-হলুদরা। অন্যদিকে মোহামেডান একটি ম্যাচ বেশি হেরেছে; গুলশানের পর হেরেছে এনামুল হক বিজয়ের গাজী গ্রুপের কাছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
দুই দলই বেশ ভালো খেলেছে। আবাহনীর পক্ষে বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আছেন ফর্মের তুঙ্গে। মাত্র ১৫ বলে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির নতুন রেকর্ড গড়া এ বাঁহাতি ওপেনার ১০ ম্যাচে ৫৩৩ রান করেছেন। রান তোলায় এখন তিন নম্বরে অবস্থান করছেন তিনি।
এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স (১৯ উইকেট ও ৩৪৩ রান) আবাহনীর সবচেয়ে বড় আস্থা ও নির্ভরতার জায়গা। এবারের লিগে মোসাদ্দেকই ছিলেন আবাহনীর প্রধান চালিকাশক্তি। ব্যাট ও বল হাতে দলের প্রয়োজনে সেরা পারফর্ম করেছেন এ অলরাউন্ডার।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
ব্যাটারদের মধ্যে মোহাম্মদ মিঠুন (৯ ম্যাচে ৩৩৬ রান) এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও (৮ ম্যাচে ২৮২ রান) মোটামুটি পারফর্ম করেছেন।
বোলারদের মধ্যে আবাহনীর সবচেয়ে সফল পারফরমার বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান। ২১ উইকেট দখল করে রাকিবুল এখন উইকেট শিকারে দ্বিতীয়।
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে মোহামেডানের সবচেয়ে বড় আফসোস ও অনুশোচনার নাম তামিম ইকবাল। হার্ট অ্যাটাকের আগে দু-দুটি ম্যাচ জেতানো শতক উপহার দিয়ে ৭ ম্যাচে ৩৬৮ রান করে ফেলেছিলেন মোহামেডানের প্রধান ভরসা।
তামিমের অসুস্থতাজনিত অনুপস্থিতির পর মোহামেডান ব্যাটিংয়ের হাল ধরেছেন মূলত দুজন-মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (১০ ম্যাচে ৩৮৩ রান) এবং অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয় (৭ ম্যাচে ৩৬৫ রান)।
এছাড়া ওপেনার রনি তালুকদার (৩১০ রান) ও মেহেদী হাসান মিরাজও (২৪৪ রান) মাঝেমধ্যে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে দলকে এগিয়ে নিতে রেখেছেন কার্যকর অবদান।
বিজ্ঞাপন
তবে দুই সিনিয়র ও অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম (৭ ম্যাচে ১৭৩ রান) আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৪ ম্যাচে ব্যাট করে ৩৩ রান) সে তুলনায় নিষ্প্রভ।কার্যকর অবদান রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
সে তুলনায় মোহামেডান বোলাররা অনেক বেশি ভালো বল করেছেন। সমীহ আদায়ের পাশাপাশি সাফল্যও বয়ে এনেছেন। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বোলিং লাইন আপে। এ বাঁহাতি স্পিনার ১০ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে সর্বাধিক উইকেট শিকারি।
এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ (৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট), আরিফুল ইসলাম রনি (৭ ম্যাচে ১১ উইকেট), বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ (৭ ম্যাচে ১০ উইকেট) আর পেসার এবাদত হোসেনও (৬ ম্যাচে ৯ উইকেট) ব্যাকআপ করেছেন বেশ। সব মিলে মোহামেডান বোলাররা রান ডিফেন্ডিংয়ে তুলনামূলক সফল।
মোদ্দা কথা, মারকুটে ওপেনার পারভেজ ইমনের ঝড়ো ব্যাটিং, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স ছিল এবারের লিগে আবাহনীর প্রধান চালিকাশক্তি। সে তুলনায় মোহামেডানের ‘অপশন’ অনেক বেশি। আলাদা করে বললে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন আর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং এবং দুই তারকা স্পিনার তাইজুল ও মিরাজের বোলিংটাই মোহামেডানের প্রধান শক্তি। এখন দেখার বিষয়, কাল দুই দলের মাঠের লড়াইয়ে কে জেতে!
এআরবি/এমএমআর/এমএস
বিজ্ঞাপন