যে প্রক্রিয়ায় কার্যকর হবে নিজামীর ফাঁসি
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখে রিভিউ আবেদন খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। এখন রাষ্ট্রপতির কাছে নিজামীর প্রাণ ভিক্ষা চাওয়া, না চাওয়া এবং রাষ্ট্রপতির বিবেচনার উপর নির্ভর করছে রায় কার্যকরের পরবর্তী পদক্ষেপ। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা না চাইলে বা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন খারিজ হলেই কার্যকর করা হবে নিজামীর ফাঁসির দণ্ড।
নিজামীর মামলায় আইনি ধাপের ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, নিজামীর মামলায় সব নিয়ম অনুসরণ করা হবে। তবে দণ্ড কার্যকর করতে নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার প্রয়োজন নেই। গত ১৬ মার্চ যে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তা এখনো কার্যকর রয়েছে। সেই আলোকে শুধুমাত্র রিভিউ খারিজের আদেশের কপি (অনুলিপি) কারাগারে পৌঁছলেই দণ্ড কার্যকর করা হবে।
নিজামীর দণ্ড কার্যকরের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে সরকার তাড়াহুড়ো করবে না। সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর সর্বোচ্চ আদালতও একই আদেশ বহাল রেখেছে। এখন তার একমাত্র বাঁচার উপায় রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা। কিন্তু তিনি প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন কিনা তা তার নিজস্ব ব্যাপার। প্রাণ ভিক্ষা চাইলে কারা কর্তৃপক্ষকে তিনি (নিজামী) অবহিত করবেন। আর আবেদন না করলে যা হবার তাই হবে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, নিজামীর দণ্ড কার্যকর করতে সরকার দিন তারিখ ঠিক করবেন এবং কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকর করবেন। তবে তার আগে আদালত থেকে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) খারিজের সংক্ষিপ্ত অথবা পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশের পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হয়ে কারাগারে যাবে। তখন সরকার তারিখ ঠিক করে দিলেই দণ্ড কার্যকর করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরো বলেন, এর আগে নিয়ম অনুযায়ী নিজামীর দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা না চাইলে দণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাঁধা থাকবে না।
এদিকে, নিজামীর রিভিউ খারিজ করার পর তার পরিবারের সদস্যরা ইতোমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। এছাড়া নিজামীর দণ্ড কার্যকরের আগে নিয়ম অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ পরিবারের সদস্যদেরকে সর্বশেষ দেখা করার সুযোগ দেবেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আল জাগো নিউজকে বলেন, নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করার পর নতুন করে আর কোনো মৃত্যু পরোয়ানা জারির প্রয়োজন নেই। এর আগে যে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ওই নির্দেশনা অনুযায়ী দণ্ড কার্যকর করা যাবে। তবে রিভিউ খারিজের কপি কারাগারে পৌঁছতে হবে।
এদিকে, রিভিউ খারিজের কপি ও সরকারের নির্দেশ পেলেই নিয়ম অনুযায়ী নিজামীর রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ। তবে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আরো একটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে কারা কর্তৃপক্ষকে।
এফএইচ/আরএস/এমএস