প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কোণঠাসা বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ড!
বাঙালির অন্যতম প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির ঐতিহ্য প্রকাশের একটি প্রধান উৎসব। এ উৎসব উপলক্ষে আগে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাতো কার্ড দিয়ে। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানানোর ধরন। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় যেন কোণঠাসা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানানোর কাগুজে কার্ড।
ডিজিটাইলেজশনের যুগে এসে উৎসব ঠিকই আছে কিন্ত পাল্টেছে শুভেচ্ছা জানানোর ধরন। এক্ষেত্রে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক, ভাইবার, ইমো, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো। এছাড়াও মোবাইলে ফোনকল, এসএমএস, ই-মেইলের ব্যবহার যুক্ত হয়েছে আরো আগেই।
বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য বাংলা নববর্ষের ঠিক আগে আগে রাজধানীর প্রিন্টিং হাউজগুলো পার করতো ব্যস্ত সময়। তৈরি করতো বিভিন্ন ধরনের বাহারি কাগুজে কার্ড। শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ক্রেতারা সেই কার্ড কিনতে ভিড় জমাতেন সেই সব প্রিন্টিং হাউজগুলোতে। কিন্তু ডিজিটাইলেজশনের যুগে এসে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে শুভেচ্ছা জানানোর পদ্ধতি।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় কার্ডের বাজার পুরানা পল্টন। পুরানা পল্টনের আজাদ প্রোডাক্টস, আইডিয়াল প্রোডাক্টস, রয়েল প্রোডাক্টসহ প্রথম সাড়ির প্রিন্টিং হাউসগুলো ঘুরে দেখা যায়, নতুন বছরের কার্ডের জন্য ক্রেতাদের একেবারে ভিড় ছিল না। প্রায় ফাঁকা পরে আছে এই হাউসগুলো।
প্রিন্টিং হাউসগুলো তুলনামূলক ফাঁকা দেখে পুরানা পল্টনের আজাদ প্রোডাক্টসের সহকারী ব্যবস্থাপক আশিক কুমারের কাছে কার্ড বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় সব মাধ্যমে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়। এছাড়াও মোবাইলে ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমেও শুভেচ্ছা আদান প্রদান করেন অনেকে। এজন্য আগের তুলনায় বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ড কম বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, খুচরা বিক্রি প্রায় নেই বললেই চলে কিন্তু কর্পোরেট অফিস, রাজনৈতিক দল, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শুভেচ্ছা জানানোর জন্য এখনো আমাদেরকে কার্ড তৈরির অর্ডার দেয়।
অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফর্মগুলোর ব্যবহার ক্রমেই বাড়ায় সবাই এর মাধ্যমেই শুভেচ্ছা আদান প্রদানে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। অনেকে মোবাইল ফোনের প্যাকেজ এসএমএসের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান। বৈশাখের শুভেচ্ছা কার্ড ঐতিহ্য হারাতে বসেছে প্রায়, তারপরও অনেকে আছেন, যার শখ করে এখনো এই চিরায়ত ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা করছেন।
কিছুদিন আগেও কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন সবাই। কার্ড ছাড়া যেন আনন্দই জমতো না উৎসবের। অথচ কালের পরিক্রমায় ই-কার্ড, সামাজিক মাধ্যম, ই-মেইল, এসএমএসের আড়ালে কার্ড পাঠানোর ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
এএস/বিএ