ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

পোল্ট্রি খামার করে স্বাবলম্বী রবিউল

প্রকাশিত: ০৮:৩৮ এএম, ১১ মার্চ ২০১৬

ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী সরদার পাড়া গ্রামের এস এম রবিউল ইসলাম বেকারত্বের সঙ্গে সংগ্রাম করে আজ একজন সফল পোল্ট্রি খামারি।

মৃত হাজী নকিম উদ্দিন সরদারের পাঁচ ছেলে তিন মেয়ের মধ্যে রবিউল সপ্তম। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলেজে ভর্তি হলেও বিএ পরীক্ষা দেয়া হয়নি। নিজ বসতবাড়ির পাশেই পোল্ট্রি খামার করে সংসারের অর্থের যোগান দেন রবিউল। রবিউল নিজে পোল্ট্রি খামার করে এলাকার অন্যান্য বেকার যুবকদের পোল্ট্রি খামারে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

রবিউল জানান, বাবা একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন রবিউল। অর্থের সংকট হওয়ায় যুব উন্নয়ন থেকে পোল্ট্রি, গবাদি পশু ও মাছের উপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ বাড়িতেই ২০০০ সালে লেয়ার জাতের ২৫০টি মুরগি পালন শুরু করেন। সেই থেকে আর থেমে থাকেননি রবিউল। মুরগি পালন করে তিনি গোটা বছরের পারিবারিক ডিমের ও মুরগির চাহিদা মেটানোর পর ডিম ও মুরগি বিক্রি করে বাড়তি কিছু আয়ও করতে থাকেন। এরপর থেকে তিনি তার খামারকে প্রসারিত করতে থাকেন। বর্তমানে তার খামারে ২১ হাজার মুরগি রয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার সোনালি ও দুই হাজার বয়লার। প্রতিদিন তিনি ১১ হাজার ডিম বিক্রি করে থাকেন।

রবিউল বলেন, বর্তমানে খামারে ১৪ জন নিয়মিত শ্রমিক রয়েছে। ডিম বিক্রির টাকা থেকে যে মুনাফা পেয়েছি তা দিয়ে চার বিঘা জমি ক্রয় করেছি।

হাজী নকিম উদ্দিন সরদার পোল্ট্রি খামারের সত্ত্বাধিকারী রবিউল আরও বলেন, ইতোমধ্যে এলাকার বেকার যুবকদের জন্য নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ চালু করেছি।

তিনি বলেন, মুরগির বিষ্ঠা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব একটি বড় মাপের বায়োগ্যাস প্লান্ট করেছি। এতে নিজের পরিবারের রান্নার কাজ শেষ করে অন্য ৯টি পরিবারে সাপ্লাই দিতে পেরেছি। এতে কিছুটা হলেও রান্নার কাজে দেশের গাছ, কাঠ বেঁচে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমার আর্থিক অবস্থা এবং পোল্ট্রি খামার দেখে এলাকার অনেক বেকার ছেলে পোল্ট্রি ও গবাদি পশুর খামার করে তারাও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

রবিউল বলেন, সহজ শর্তে কোন ব্যাংক-বীমা কিংবা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ প্রদান করলে আগামীতে একটি হ্যাচারি ও বড় মাপের গবাদি পশুর খামার স্থাপন এবং খামারটি আরও বেশি প্রসারিত করতে চাই। একই সঙ্গে এলাকার বেকার ছেলেদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার ইচ্ছে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে না ঘুরে পোল্ট্রি খামার করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। এতে বেকারত্ব ঘুচবে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। তিনি শিক্ষিত বেকার যুবকদের পোল্ট্রি খামার করার আহ্বান জানান।

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন বলেন, রবিউল ইসলাম পোল্ট্রি খামার করে এখন ঈশ্বরদীতে একজন মডেল খামারি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। রবিউল পোল্ট্রি খামার করে কিছুটা হলেও দেশের মুরগি ও ডিমের চাহিদা পূরণ করছেন। সেই সঙ্গে পুষ্টির যোগানও দিচ্ছেন। রবিউল সঠিক পদ্ধতিতে পোল্ট্রি খামার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। রবিউলের দেখাদেখি ওই এলাকার যুবকদের মধ্যে পোল্ট্রি খামারের প্রতিযোগিতা চলে এসেছে। রবিউল এভাবে তার পোল্ট্রি খামারের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারলে আগামীতে আরও ভালো করবে বলে আশা করছি।

এসএস/পিআর