যাত্রী ছাউনি নাকি দোকান
ব্যাংক পাড়া নামে খ্যাত রাজধানীর মতিঝিল।প্রতিদিন লাখো মানুষের আনাগোনা। রাজধানীর বেশিরভাগ গণপরিবহনের যাত্রা শুরু ও শেষ হয় মতিঝিল থেকে। তাই যাত্রীদের সুবিধার্থে মতিঝিল এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি যাত্রী ছাউনি। যাত্রীদের বসা বা বিশ্রামের জন্য তৈরি হলেও এখন হকারদের দখলে এসব ছাউনি। হরেক রকম পণ্যের ঝলকে চেনার উপায় নেই যাত্রী ছাউনি। মতিঝিল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
মতিঝিল এলাকায় যেকয়টি যাত্রী ছাউনি রয়েছে তার সবগুলোই রয়েছে চরম অব্যবস্থাপনায়। এগুলো দেখবালের যেন কেউ নেই। কোনো যাত্রী ছাউনির নিচে চলছে আড্ডা, কোথাও আবার দখল করে চলছে ব্যবসা। গণপরিবহন থামার স্থানে যাত্রী ছাউনি স্থাপনের কথা থাকলেও অনেক জায়গায় বাস না থামলেও রয়েছে ছাউনি। আবার অনেক জায়গায় বাসের কাউন্টার আছে কিন্তু নেই যাত্রী ছাউনি।
মতিঝিল আদমজী কোর্টে এলাকায় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের বিপরীত পাশে দুটি যাত্রী ছাউনি থাকলেও এখানে কোনো গণপরিবহন থামতে দেখা যায়নি। আদমজী কোর্ট এলাকার সামনে অবস্থিত যাত্রী ছাউনিতে চলছে চা’র দোকান। অন্যটিতে যাত্রী না থাকলেও চলছে আড্ডা।
এদিকে পূবালী পেট্রল পাম্পের এক পাশে একটি যাত্রী ছাউনি থাকলেও বিআরটিসির বাস কাউন্টারের সামনে ছাউনি নেই। ফলে যাত্রীরা রাস্তায় রোদে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে বাসের অপেক্ষায়।
শাপলা চত্তর এলাকায় সোনালী ব্যাংকের সামনে রয়েছে একটি যাত্রী ছাউনি। হকাররা দখল করে এমনভাবে পসরা সাজিয়েছে যে বাহির থেকে বোঝার উপায় নেই এটি যাত্রী ছাউনি। প্যান্ট, গেঞ্জি, বেল্টসহ বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে ছাউনির নিচে। শুধু যাত্রী ছাউনি নয় ফুটপাটও দখল করেছে তারা। ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছে হকাররা। আর দুর্ভোগে পড়ছে পথচারী ও যাত্রীরা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব ফুটপাতসহ এসব যাত্রী ছাউনির নিয়ন্ত্রণকারী চাঁদাবাজরা প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব টাকা নেয়। তাদের নির্ধারিত লোকেরা ফুটপাতের নিজ নিজ পছন্দের জায়গা দখল করে এবং চাঁদার টাকা উঠায়।
মতিঝিলের প্যান্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা দেয় যাত্রী ছাউনির ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ক্ষমতাশীল দলের এক নেতা এ টাকা নেয়। এর উপর মাঝে মধ্যে পুলিশও বাড়তি টাকা দাবি করে।
যাত্রী ছাউনি দখল করে ব্যবসা কেন করছেন জানতে চাইলে এই ব্যবসায়ী বলেন, এখানে ব্যবসা করা ঠিক না। তবে আমি না করলে আরেকজন করবে। এটি দখল হয়েই থাকবে। যদি দখলমুক্ত করতে হয়, তাহলে যারা চাঁদা নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এসআই/জেএইচ/পিআর