ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

নকল ক্যাসপারস্কি বিক্রি করে কোটিপতি গডফাদার শহীদ

প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দীর্ঘদিন ধরে এন্টিভাইরাস ক্যাসপারস্কির ট্রায়াল ভার্সন ডাউনলোড করে সিডি রাইট করে আসছিল একটি চক্র। এন্টিভাইরাস ক্যাসপারস্কির প্যাকেটের হুবহু তৈরি করে পাসওয়ার্ড ছাড়াই বাজারে বিক্রি করছিল চক্রটি। এ এন্টিভাইরাসটি বিক্রি করে চক্রটির গডফাদার শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ এখন কোটিপতি।

চক্রটি শুধু যে নকল ক্যাসপারস্কির এন্টিভাইরাসই বিক্রি করে আসছে তা না, বিভিন্ন ধরণের গেইম, সিডি নকল করে চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে বাজারজাত করছে। আর এগুলো কিনে প্রতারিত হচ্ছেন অসংখ্য কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ব্যবহারকারী।

সম্প্রতি রাজধানীর ৪২৯ মালিবাগ মোড়ের একটি বাসা থেকে অনিল দাস ও মো. আব্দুল হালিম নামে চক্রটির দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
 
এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি কপি রাইটার, ২টি কম্পিউটারের সিপিইউ, ২৫০টি ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি ২০১৬ এর ডিভাইস, ২৫০টি ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি ২০১৬ এর এ্যাক্টিভেশন বই, দুইশ ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি ২০১৬ এর খালী কভার, ১৫০টি বিভিন্ন গেমসের কপিরাইট সিডিসহ বিপুল পরিমান সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে চক্রের মূলহোতা শহীদুল ইসলামকে রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পিবিআই। এ ঘটনায় ডিএমপি’র শাহজাহানপুর থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে এন্টিভাইরাসের ট্রায়াল ভার্সন ডাউনলোড করে পরে তার ডিভিডি আকারে রূপ দেয়। আসল এন্টিভাইরাসের মতই কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা এটি পুরোপুরি ইনস্টল করতে সক্ষম হলেও সেটি কোন কাজ করে না। ফলে ভুক্তভোগী হয় ক্রেতারা।

এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এতে কম্পিউটারের গোপন নথির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পাইরেসি তো আছেই। নকল ক্যাসপারস্কি তৈরির গডফাদার শহীদুল এতদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের আড়ালে থেকে বিভিন্ন উপায়ে নকল ক্যাসপারস্কি তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল। সে সাইবার ও সফওয়ার সংক্রান্ত ভালো দক্ষতা অর্জন করেছে বলে জানান তিনি।
 
তিনি আরো জানান, স্থানীয় লোকজন তাকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর হিসেবে জানতো। আবার কখনো কখনো বিভিন্নস্থানে ক্যাপটেন পরিচয় দিত। তার দুই সহযোগী হালিম ও অনিল তাকে সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন হিসেবে জানতো।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, অরিজিনাল ক্যাসপারস্কি এন্টিভাইরাসের দাম ৯৯০ টাকা। কিন্তু সে নকল ক্যাসপারস্কির দাম রেখেছে ১০৯৯ টাকা। তবে ডিসকাউন্ট দিয়ে মার্কেট ধরে রেখে ব্যবসার জন্য ৯৯০ টাকাই বিক্রি করে আসছিল। এভাবে নকল ক্যাসপারস্কি এন্টিভাইরাস বিক্রি করে শহীদ এখন কোটিপতি।
 
তবে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, শহীদ বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) এর সৈনিক হিসেবে কর্মরত ছিল। রাজশাহী সেক্টর হেডকোয়াটার্স হতে সে ১৯৯৮ সালে অবসরে যায়। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানাধীন হকপাড়া এলাকায়।
 
পিবিআই-এর এ বিশেষ পুলিশ সুপার আরো বলেন, পিবিআই প্রথম নকল এন্টিভাইরাস তৈরি ও বাজারজাতকারক এই চক্রটিকে ধরতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে সফল হলো।

জেইউ/জেএইচ