পুঁজিবাজারে সম্প্রসারণ হচ্ছে বস্ত্রখাত
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সব চাইতে বেশি অবদান রাখে তৈরি পোশাক শিল্প। পুঁজিবাজারেও এ শিল্পের অংশগ্রহণ থেমে নেই। বিনা সুদে অর্থ সংগ্রহে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিকল্প হিসেবে পুঁজিবাজারে আসছে বস্ত্র খাতের কোম্পানি। এতে করে লভ্যাংশ পাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা, লাভবান হচ্ছে ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ফলে একদিকে নতুন কর্মসংস্থানের সঙ্গে সরকারের বাড়ছে রাজস্ব আয়। অন্যদিকে সম্প্রসারণ হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, ব্যাংক ও বিমাসহ তালিকাভুক্ত ২২ খাতে কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে বস্ত্র খাত। ধস পরবর্তী পুঁজিবাজারে গত ৫ বছরের এ খাতের ২০টি নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে ২০১১ সালে জাহিনটেক্স ইন্ডস্ট্রিজ, ২০১২ সালে এনভয় টেক্সটাইল, জেনারেশন টেক্সটাইল ও সায়হাম কটন মিলস, ২০১৩ সালে আরগন ডেনিমস, ফ্যামলিটেক্স বিডি ও প্যারামাউন্টটেক্স, ২০১৪ সালে মোজাফার হোসাইন স্পিনিং, মতিন স্পিনিং, হাওয়া ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইয়িং, সুহদ ইন্ডাস্ট্রিজ, রতনপুর স্পিনিয় মিলস ও হামিদ ফেব্রিকস, এবং ২০১৫ সালে সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, শাশা ডেনিমস, জাহিন স্পিনিং, ইফাদ অটোস ও তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করে।
আইপিও এ টাকা কোম্পানি সম্প্রসারণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, যস্ত্রপাতি কেনা এবং ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করে। ফলে কোম্পানির অতিরিক্ত খরচ কম হওয়ায় কোম্পানিগুলোর তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে।
ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য মতে, বাজারে তালিকাভুক্ত ৪৩টি কোম্পানির মধ্যে ৩৫ কোম্পানির ‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে। ‘বি’ ক্যটাগরিতে রয়েছে ২টি কোম্পানি। আর পাঁচ কোম্পানি রযেছে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে।
এদিকে গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাতের। এ কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গত বছর ভালো লভ্যাংশ দিতে পারেনি বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। তবে দেশের বিনিয়োগ বাড়লে, ব্যবসা ভালো হলে এ বছর আরো বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে বলে মনে করছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, বস্ত্র খাতের কোম্পানি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হওয়ার প্রধান বাধা প্রতিষ্ঠানের অর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি অর্থিক প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দেয় তবে আরো বেশি কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসবে। পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ হবে।
তবে পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন, কোম্পানির বাস্তাব অবস্থা দেখে আইপিও অনুমোদন দেয়া পরামর্শ দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এসআই/এসএইচএস/এমএস