ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

আলতাফ মাহমুদের শেষ শব্দ দুটি এখনও চিকিৎসকের কানে বাজছে

প্রকাশিত: ০৬:১৭ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদের শেষ শব্দ দুটি এখনও বাজছে চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) নিউরোসার্জন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কানে। রোববার তার মৃত্যুর পর জাগো নিউজকে এ কথা জানান ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

‘হাউ আর ইউ ফিলিং নাউ’। শনিবার সকালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন সাংবাদিক নেতা আলতাফ মাহমুদকে এ প্রশ্নটি করলে তিনি দুই হাত নেড়ে স্পষ্ট স্বরে ‘বেটার বেটার’ বলে জবাব দিয়েছিলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্যারালাইজড রোগীদের অস্ত্রোপচারের পর হাত বা পা নেড়ে দেখে তারা অস্ত্রোপচারে কতটুকু উন্নতি হয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন। আলতাফ মাহমুদের নিজ মুখে বলা ‘বেটার বেটার’ শব্দ দুটি এখনও কানে বাজছে বলে জানান তিনি। অস্ত্রোপচার পরবর্তী সময়ে তারা বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কা করলেও সে ধরনের কোনো শারীরিক জটিলতা দেখা না দেয়ায় তারা আশাবাদী ছিলেন।

তিনি বলেন, বিশ্বাস হতে কষ্ট হচ্ছে তিনি (আলতাফ মাহমুদ) আর বেঁচে নেই।  

কখন থেকে আলতাফ মাহমুদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলো এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল সকালে আইসিইউতে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছি। দিব্যি সুস্থ ছিলেন। হাত পা নেড়ে আগের চেয়ে ভাল বলে জানাচ্ছিলেন। আইসিইউ থেকে বাইরে বেরিয়ে তার ছেলে ও অন্যান্যদের এ তথ্যটি জানাতে পেরে খুব ভাল লেগেছিল। এরপর চলে এলেও আইসিইউ’র চিকিৎসকদের কাছ থেকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার তথ্য জেনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান তিনি।

Dr.-Konokতিনি জানান, রাতের বেলা চিকিৎসকরা তাকে জানান, আলতাফ মাহমুদের তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তার বুকের এক্সরে করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি ও হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি ও আইসিইউ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হাসপাতালে ছুটে যান। এক্সরেতে তার হার্টের অবস্থা ভাল থাকলেও লাং এ পানি জমেছে দেখা যায়। তার সবাই রাত ১২টা পর্যন্ত উপস্থিত থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন।

কনক কান্তি বড়ুয়া জানান, যখন তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন তখন তার শারিরীক অবস্থা খুবই স্বাভাবিক ছিল। রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন, অক্সিজেন গ্রহণের মাত্রাসহ সব কিছু খুবই নিয়ন্ত্রিত ও স্বাভাবিক ছিল।

ভোর ৫টায় তারা খবর পান আলতাফ মাহমুদের শারীরিক অবস্থার আবারো অবনতি হয়েছে। সিনিয়র চিকিৎসকরা তাদের পরামর্শ অনুসারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে থাকেন। সকাল ৭টার দিকে তারা এসেও চেষ্টা চালান। কিন্তু সকালে সাড়ে ৮টায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।

অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিএসএমএমইউ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে চিকিৎসা করেছেন। সাধ্যমতো চেষ্টা না করলে তাদের মনে কষ্ট থাকতো। জীবন-মৃত্যু ঈশ্বরের হাতে। তাই চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালালেও তাকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এমইউ/এসএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন