ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

সড়কে কেউই মানছে না উচ্চ আদালতের নির্দেশনা

মুহাম্মদ ফজলুল হক | প্রকাশিত: ০৪:২০ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২১

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দেশের উচ্চ আদালত প্রতিটি গাড়িতে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্থাপন, শব্দদূষণ রোধে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ, ফুটপাতে মোটরবাইক চালানো বন্ধ ও দখলমুক্ত করাসহ বেশকিছু নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এসব নির্দেশনার অধিকাংশই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না। কেউই সঠিকভাবে মানছেন না আদালতের নির্দেশনা।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে সড়ক দুর্ঘটনারোধ, হাইড্রোলিক হর্ন, নদীদূষণ বন্ধসহ জনগুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন সময়ে রিট আবেদন করা হয়। এসব মামলায় বিভিন্ন সময়ে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনাও আসে।

মানবাধিকার কর্মী ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবির) এর চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা জনস্বার্থে শব্দদূষণ রোধে এবং গুলিস্তান থেকে পুরান ঢাকার ফুটপাত উদ্ধারে মামলা করেছি। এর মধ্যে মামলার রায় ও নির্দেশনা এসেছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, জনস্বার্থে আদালতের নির্দেশনার পরও তা কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

তিনি বলেন, হয়তো সক্ষমতার অভাব না হয় মানসিকতার সমস্যা। সংশ্লিষ্টরা আদালতের আদেশকে ইগনোর করছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা, উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে বছরের পর বছর ধরে তা উপেক্ষিতই রয়ে গেছে বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা, অশিক্ষিত, অর্ধ-শিক্ষত ও মাদকাসক্ত চালক, সড়কে গাড়ি চালানোর তীব্র প্রতিযোগিতা, বেপরোয়া গতিও দুর্ঘটনা ঘটার কারণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু চালকরা তুলনামূলক কম গতিতে নিয়ন্ত্রণে রেখে যানবাহন চালানোর কারণে দুর্ঘটনা কম ঘটে বলেও মনে করেন তারা।

সড়কে নানা অব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরেই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। ২০০৯ সালের জুনে বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের (পরে প্রধান বিচারপতি) নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে ২০১০ সালের মধ্যে দেশের সব সড়কযানে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র স্থাপন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা, সব ট্রাফিক সদর দপ্তরে গতি নিয়ন্ত্রক মনিটরিং ব্যবস্থা স্থাপনসহ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

স্বরাষ্ট্র, সংস্থাপন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ-কে (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) এসব নির্দেশনা কার্যকর করতে বলা হয় রায়ে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওই রায় বাস্তবায়ন করা হয়নি।

এ ছাড়া ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিচারপতি জিনাত আরার নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সড়ক দুর্ঘটনারোধে পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন। এতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা-২০০১-এর ৮ বিধি অনুযায়ী মহাসড়কের পাশে ১০ মিটারের মধ্যে স্থাপনা তৈরিতে অনুমতি দেওয়ার বিধান বাতিল, নির্দেশনার পাঁচ বছর পর চালকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস নির্ধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে ডিভাইডার তৈরি এবং পথচারীদের জন্য প্রয়োজনীয় আন্ডারপাস নির্মাণ, স্কুলের সিলেবাসে ট্রাফিক নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা এবং মোটরযান অধ্যাদেশ আইন সংশোধন করে অপরাধের সাজা ও জরিমানার পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলা হয়।

কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও হাইকোর্টের এসব নির্দেশনা ও আদেশ যেমন বাস্তবায়ন হয়নি, তেমনি সড়কে মৃত্যুর মিছিলও থামেনি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজধানীর প্রায় সব ফুটপাত হকারদের দখলে; যা ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ। এ ছাড়া ফুটপাত দখলে থাকায় জনভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে।

মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, সদরঘাট এলাকার ফুটপাতে এ চিত্র আরও ভয়াবহ। অথচ ফুটপাত দখলমুক্ত করতে একাধিকবার হাইকোর্ট থেকে আদেশ ও নির্দেশনা এসেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় এ চিত্র পাল্টায়নি খুব একটা।

২০০১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক রায়ে রাজধানীর ফুটপাত ও চলাচলের পথকে জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী এবং পথচারীদের জন্য পরিচ্ছন্ন ও উন্মুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অধিকাংশ ফুটপাতই হাঁটার অনুপযুক্ত। ফুটপাতগুলোতে অবাধে চলছে ব্যবসা। অথচ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যাক্ট অনুযায়ীও রাস্তায় বা জনগণের চলাচলের জায়গায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ছাড়া গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফুটপাতগুলো এখনও হকারদের দখলে। প্রতিনিয়ত জনসাধারণকে ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

এদিকে ২০১৭ সালে রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশে যানবাহনে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আদেশে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) ও ট্রাফিক পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। এ রায়ের পর কিছুটা কমলেও বর্তমানে রাজধানীতে হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার আবারো বাড়ছে বলে জানান মনজিল মোরসেদ।

একই বছর সারা দেশের মহাসড়কে অবৈধ নসিমন, করিমন ও ভটভটি চলাচল বন্ধে সার্কুলার জারি করতে সরকারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ১০ জেলার মহাসড়ক থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার বাহন নসিমন, করিমন প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

ওই আদেশে বলা হয়েছিল এর পরের এক সপ্তাহের মধ্যে এসব যানবাহন প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এই নির্দেশনা প্রথম সপ্তাহে কিছুটা কার্যকর দেখা গেলেও গত দুই বছরে সামান্য পরিবর্তন দেখা যায়নি মহাসড়কগুলোতে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর তৎপরাতা বাড়লে তাদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও কোথাও কোথাও এসবের তোয়াক্তা করে না চালকরা।

২০১৮ সালে চট্টগ্রাম থেকে থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকা ফেরার পথে বাস থেকে ফেলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েলকে হত্যার দায়ে হানিফ পরিবহনের একটি বাসের চালক, হেলপার আর সুপার ভাইজারকে ২০২০ সালের ১ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

রায়ে দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ার পেছনে কিছু কারণ চিহ্নিত করে চার দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সেগুলো হলো:

১. গাড়ি ছাড়ার পূর্বে চালক, তার সহকারী ও সুপারভাইজার মাদক সেবন করেছে কিনা জানতে গাড়ি ছাড়ার আগে কাউন্টারে, পথে বিরতির স্থানে এবং গাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানোর পর মোট তিন দফা ডোপ টেস্ট করাতে হবে।

২. গাড়ির চালক, তার সহকারী ও সুপারভাইজার প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে ‘অভদ্র আচরণ’করেন। বাসের সুপারভাইজার, হেলপার যেন যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ না করেন, সেটা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাদের অবশ্যই ‘নম্র ভদ্র’ আচরণ করতে হবে। গাড়ি চালানোর বিষয়গুলোর পাশাপাশি যাত্রীদের সঙ্গে আচরণের বিষয়েও তাদের কাউন্সেলিং ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. মহাসড়কে প্রতি তিন কিলোমিটার পর পর চালক ও যাত্রীসহ সবার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আধুনিক বাথরুম ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে, যা বিনা পয়সায় ব্যবহার করা যাবে। সেজন্য বাস মালিকরা সরকারের সড়ক বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারিত হারে চাঁদা দেবেন।

৪. মহাসড়কে বাসের গতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য সিসিটিভি স্থাপন করে, তার মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের ওপর নজরদারি জোরদার করতে হবে।

২০২০ সালের ১ নভেম্বর ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘এ রকম অনেক পায়েল মারা যায়, যাদের কথা আমরা জানতে পারি না। সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন হত্যার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যা বলাটা বোধ হয় ভুল নয়।’

এর আগে ২০১৮ সালে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে হোটেল রেডিসনের সামনে দুই বাসের প্রতিযোগিতার বলি হয় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল করিম ও একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী দিয়া খানম ওরফে মিম।

এরপরে সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামলে প্রায় অচল হয়ে পড়ে দেশ। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংসদে পাস হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাসে ওঠার সময় পেছন থেকে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। এ দুর্ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আবারও রাস্তায় নামে।

অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে আরও বলেন, ‘রোড ম্যানেজমেন্ট যতো দুর্বলতা থাকবে ততোই দুর্ঘটনা ঘটবে। রোড ম্যানেজমেন্টর মধ্যে অনেকগুলো বিষয় আছে সেটা হলো, যানবাহন, রাস্তার ধরণ, যারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও চলকদের আইন কানুন সঠিকভাবে জানা।’

তিনি বলেন, ‘ধরুণ মহাসড়ক। মহাসড়কে যে স্পিডে গাড়ি চালাবে সেখানে কিন্তু অবস্টাকশন থাকবে না। দোকান পাট, ব্যবসা বাণিজ্য দিয়ে আমাদের মহাসড়কের আশে-পাশে দখল করে রাখে অনেকে। এ ব্যাপারে আমরা জনস্বার্থে মামলা করেছিলাম, সেখানে ২২ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তার কার্যক্রমও শুরু হয়েছিল, কিন্তু কিছু কিছু জেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করায় সেই কার্যক্রম অনেকটা আবার স্তিমিত হয়েছে। এ ছাড়া করোনার সময়েও কিছুটা স্তিমিত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত ট্রাফিকও নেই। সরকার সেই ব্যবস্থা করতে পারে না। আর সড়কে মহাসড়েক গাড়িগুলোও ফিটনেস ছাড়া। সেখানে প্রভাবশালীদের গাড়ি, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদেরও ফিটনেসবিহীন গাড়ি আছে, এসব গাড়িতো কেউ নিয়ন্ত্রণ করেন না। ফিটনেসবিহীন গাড়ি থাকলে তো দুর্ঘটনা ঘটবেই।

মনজিল মোরসেদ বলেন, আর একটা হলো ড্রাইভিং লাইসেন্স। প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি গাড়ি চালাতে হয়। প্রশিক্ষণ ছাড়া তো হাজার হাজার ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে। তাদের কোনো লাইসেন্সই নেই, সেক্ষেত্রে তো দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের কোনো লক্ষণও থাকবে না।

তিনি বলেন, বিশেষ করে লং রোডে যারা ড্রাইভ করেন, লেবার ল’(শ্রম আইন)-তে আছে যে, তাদের আট ঘণ্টা ওপরে ডিউটি করা যাবে না। তারা ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ডিউটি করেন। একটা মানুষ তারতো শারীরিক সক্ষমতা থাকবে তাই না। যখন আপনি ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ডিউটি করবেন, তখন তো মস্তিষ্ক ও হাত-টাত কিছুই ঠিক মতো কাজ করবে না। চোখে ভাসবে শর্ষে ফুল, সহজেই দুর্ঘটনা ঘটবে। এই সমস্ত দুর্বলতার জায়গাগুলো নিয়ন্ত্রণ বা কঠিন করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘দেশে জনসংখ্যা, যানবাহনসহ সবকিছু বেড়েছে, সমস্যাও বেড়েছে। তাই কিছুক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আদালতের নির্দেশনার পরও যে তা কার্যকর হচ্ছে না তা কিন্তু নয়। যেসব নির্দেশনা সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করতে পারে, কিন্তু করে না সেক্ষেত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যবস্থা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ যদি সচেতন না হয়, তাহলে রাষ্ট্রই বা কী করবে? তাই শুধু সরকারের ওপর নির্দেশ দিলেই হবে না, জনগণকে আরও মনোযোগী ও সচেতন হতে হবে। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা সহ সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’

এফএইচ/এসএইচএস/জিকেএস