বীমাকার্ডে স্বাস্থ্যসেবা : সুরক্ষা পাচ্ছেন ৩০ হাজার পরিবার
দেশে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’নামে স্বাস্থ্যবীমা (হেলথকার্ড)প্রকল্প অচিরেই চালু হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ হাজার দরিদ্র পরিবারকে স্মার্ট স্বাস্থ্যবীমা কার্ড প্রদান করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বীমার আওতায় কার্ডধারী প্রতিটি পরিবারের সদসরা বছরে ৫০ হাজার টাকার চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে লাভের সুযোগ পাবেন। এ জন্য তাদের কোন প্রকার টাকা ব্যয় করতে হবে না। প্রাথমিকভাবে কার্ডধারীদের কালিহাতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অর্থাৎ সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রায় অর্ধশত রোগের সুচিকিৎসা লাভের সুযোগ পাবেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ) সিদ্ধান্তের আলোকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সকলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ কার্যক্রম শুরু করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে কালিহাতি, মধুপুর ও ঘাটাইল এ তিন উপজেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু অর্থছাড়ে বিলম্ব ও সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে আপাতত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে শুধুমাত্র কালিহাতি উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি শুরু হবে। এজন্য ইতোমধ্যেই ৩০ হাজার পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জানুয়ারির ১ম সপ্তাহ থেকে বীমা কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত পরিবারের কাছে স্মার্টকার্ড বিতরণ করবেন। পরবর্তীতে আরো দুই উপজেলায় এ কার্যক্রম চালু হবে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, স্বাস্থ্যবীমা কার্ড যাদের দেয়া হবে তারা সকলেই দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করছেন। মূলত তিনটি শর্তপূরণ সাপেক্ষে দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের চিহ্নিত করা হয়। যে সকল পরিবারের বসবাসের ঘরবাড়ি, জমিজমা ও স্থায়ীভাবে উপার্জনের উপায় নেই তারাই এর আওয়াতাভুক্ত।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, স্মার্টকার্ডের আওতায় ৩০ হাজার পরিবারের সদস্য সাধারন জ্বর, ঠাণ্ড, কাঁশি থেকে শুরু করে হাড় ভাঙ্গা, গল ব্লাডার, এপেনডিসাইটিস, হার্নিয়া, হার্ট, কিডনিজনিত দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাসহ ৫০ ধরনের চিকিৎসা বিনামূল্যে পাবেন।
তিনি আরো জানান, প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে গ্রিন ডেল্টা ইনসুরেন্স কোম্পানি সরকারিভাবে স্বাস্থ্যবীমা কার্ড প্রণয়ন ও বীমার অর্থ পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
চুক্তি অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বছরে বীমা কোম্পানিটিকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পরিশোধ করবে। স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের দেয়া তালিকা অনুযায়ী বীমা কোম্পানিটি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে স্মার্ট হেলথ কার্ড প্রদান শুরু করবেন।
জানুয়ারির দ্বিতীয় থেকে কার্ডধারীরা হাসপাতালে চিকিৎসা লাভের সুযোগ পাবেন। পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া প্রকল্প কার্যক্রম মূল্যায়ন করে পরবর্তীতে সারাদেশে দরিদ্রদের জন্য এ ধরনের কার্ড চালুর চিন্তাভাবনা তাদের রয়েছে বলে জানান তিনি।
এমইউ/এসএইচএস/এএইচ/আরআইপি