ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

৬০ বছর আগলে আছেন বঙ্গবন্ধুর বাইসাইকেল!

প্রকাশিত: ০৭:০৪ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫

১৯৫৪ সালের কথা। যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে ওয়াজেদ চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালাতে রাজবাড়ী এসেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে সময় তিনি ১০/১২ জন সঙ্গী নিয়ে একটি বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামের পর গ্রাম চষে বেড়িয়েছেন। চেয়েছেন ভোট।

ওই বাইসাইকেলটির মালিক রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের ৮১ বছর বয়স্ক আব্দুল ওয়াজেদ মন্ডল। ৬০ বছরের সেই স্মৃতির বাইসাইকেলটি সযত্নে আগলে রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। সাইকেলটি জাদুঘরে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হলেও তা চিঠি চালাচালির মধ্যেই এখনও সীমাবদ্ধ রয়েছে।

আব্দুল ওয়াজেদ মন্ডল বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ধানমন্ডির বাড়িতে প্রথম দেখাতেই বঙ্গবন্ধু তার কাছে সেই সাইকেলটি কোথায় আছে জানতে চেয়েছিলেন। সাইকেলটি ফেরত না দিয়ে নিজের কাছে রাখার আবদার করলে হেসে তাকে অনুমতি দিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, `আমি মরে গেলে সাইকেলটি জাদুঘরে দিয়ে দিস।`

তিনি বঙ্গবন্ধুকে জানান, রাজাকাররা তার বাড়ি লুট করে তাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। জবাবে বঙ্গবন্ধু তাকে বলেছিলেন, `আমার দেশকেও ওরা নিঃস্ব করে দিয়েছে। আমার দেশও গরিব, তুইও গরিব। ভাবিস না, সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।`

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত সাইকেলটি দেখতে তার বাড়িতে প্রায়ই লোকজন আসেন। কেউ কেউ সাইকেলটি জড়িয়ে ধরে আবেগে কেঁদে ফেলেন। তা দেখে তার বুক গর্বে ভরে ওঠে। সাইকেলটি এবার জাদুঘরে দিয়ে দিতে পারলে দায়িত্ব শেষ। আরেকটি ইচ্ছা বঙ্গবন্ধু কন্যার সাক্ষাৎ পাওয়া। তার প্রত্যাশা শেষ ইচ্ছা দুটি পূরণে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সাড়া দেবেন।

এলাকাবাসী জানান, তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। তবে ছেলেবেলা থেকেই দেখছেন এই বাইসাইকেলটিকে। যে সাইকেলটি চালিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তারা আরও বলেন, মাঝে মধ্যেই আব্দুল ওয়াজেদ মন্ডল সাইকেলটি ঘর থেকে বের করে আনেন এবং পরম মমতায় তা পরিষ্কার করেন। কখনো কখনো তাকে সাইকেলটি জড়িয়ে ধরে কাঁদতেও দেখেছেন। তারাও সাইকেলটি জাদুঘরে রেখে তা সাধারণ মানুষের দেখার আহ্বান জানান।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, আব্দুল ওয়াজেদ মন্ডলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তারা তার বাড়িতে গিয়েছেন এবং বাইসাইকেলটি দেখেছেন। বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ তা জাদুঘরের পাঠাতে ইতোমধ্যেই পত্র পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসলেই সাইকেলটি জাদুঘরে পাঠানো হবে।
 
এসএস/পিআর