আসন বাড়ছে না প্রাইভেট মেডিকেলে
এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির অনুমতি চেয়ে বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ কর্তৃপক্ষের করা আবেদন নাকচ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১৫-২০১৬) অতিরিক্ত একটি আসনেও নতুন করে আর কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন আসন সংখ্যা বৃদ্ধি কমিটির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, চলতি বছর সকল বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির হার খুবই আশাব্যঞ্জক। সুতরাং চিকিৎসা শিক্ষার সঠিক মান বজায় রাখতে নতুন করে আসন বৃদ্ধি করার কোন প্রয়োজন নেই। রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নীতি নির্ধারক কর্মকর্তা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর সাধারণ আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বিগত বছর বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে বহু আসন শূন্য ছিল। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আসন সংখ্যার প্রায় ৬ গুণ পাশ করে আসন সংখ্যার বিপরীতে শিক্ষার্থীদের বেশি চাহিদা থাকায় নির্ধারিত ভর্তি শেষ হওয়ার আগেই প্রায় দেড় ডজন মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিটি কমপক্ষে ৫টি থেকে ১০টি করে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিলেন।
বিশেষ করে ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজগুলো আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য একাধিক মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছিলেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভর্তি ফি ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকার সিলিং বেঁধে দিলেও চাহিদা বেশি থাকায় ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা দেয়ার গোপন শর্তে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির অপচেষ্টা চালাচ্ছিল।
অভিযোগ রয়েছে- কোনো কোনো মেডিকেল কলেজ একটি আসন বৃদ্ধির জন্য প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকা উৎকোচ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বলে জানা যায়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্তে তারা চরম হতাশ।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের কঠোর মনোভাবের কারণে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির আবেদনটি নাকচ করতে বাধ্য হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ঢাবি ভিসি বলেছেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর আসন সংখ্যা বৃদ্ধি নয়, শিক্ষার মানোন্নয়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবু শফি আহমেদ আমিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে কোন বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি না করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) মহাসচিব শাহ মো. সেলিমের কাছে চলতি শিক্ষাবর্ষে আর কোনো আসন সংখ্যা বৃদ্ধি না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। এ ব্যাপারে তাদের কিছুই বলার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি