মুক্তিযোদ্ধা কল্পনা সাহা-জীবন যুদ্ধেও সফল
গোপালগঞ্জের এক অদম্য বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা কল্পনা রানী সাহা জীবন যুদ্ধে সফল এক নারী। মুক্তিযুদ্ধে তিনি যেমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি জীবনযুদ্ধে সকল বৈরীতা ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সফল হয়েছেন। চারপাশে প্রথার অসম দেয়াল ভেঙে তার অবিরাম এগিয়ে চলা। কোনো বাধাই রুদ্ধ করতে পারেনি তার চলার পথ। দেশ প্রেম, অবিচল আত্মবিশ্বাস, দৃঢ় মনোবল ও ঐকান্তিক ইচ্ছা তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে।
সামাজিক ট্যাবু ও বাধার অচলায়তন ভেঙে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন ক্রমাগত সফলতার শিখরে। তিনি এখন সমাজে একজন প্রতিষ্ঠিত নারী। তার সন্তান সন্ততিরা সরকারি বিভিন্ন উচ্চ পদে সমাসীন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ছাত্রজীবনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর, তার এখন চাওয়া-পাওয়ার কোনো কষ্ট নেই। তবে যে উদ্দেশ্যে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তার কতটুকু পূরণ হয়েছে-এ নিয়ে রয়েছে তার নানা অনুযোগ। তারপরও! মুক্তিযুদ্ধ তার গর্ব-তার একমাত্র অহংকার।
গোপালগঞ্জ শহরের আমেনা স্কুলের পাশে নিজ বাড়িতে কল্পনা রানীর সঙ্গে জাগো নিউজের কথা হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগাঁথা স্মরণ করে কথার ভাজে ভাজে তিনি শোনালেন তার মনের কিছু কথা। সঙ্গে ছিলেন গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি এস এম হুমায়ূন কবীর।
জাগো নিউজ : জাগো নিউজের পক্ষ থেকে অাপনাকে শুভেচ্ছা ।
কল্পনা : আপনাকে ধন্যবাদ।
জাগো নিউজ : কেমন আছেন ?
কল্পনা : ঈশ্বর ভালো রেখেছেন।
জাগো নিউজ : অাপনি কি স্কুল জীবন থেকে রাজনীতিতে সচেতন ছিলেন ?
কল্পনা : হ্যাঁ, তখন আমি গোপালগঞ্জ বীণাপানি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সারাদেশে অসহযোগ আন্দোলন চলছে। অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা শহরে মিছিল বের করলে আমাদের স্কুল থেকে আমরা বই খাতা রেখে ওই মিছিলে যোগ দিতাম। আমার কণ্ঠ বলিষ্ট ও ভরাট হওয়ায় আমি নিজেই স্লোগান ধরতাম। আমার কণ্ঠে উচ্চারিত জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠতো রজপথ। সেসময় সবাই আমার স্লোগানের খুব তারিফ করতেন।
জাগো নিউজ : মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে এমন কোনো ভাবনা তখন আপনাকে তাড়া করত কি?
কল্পনা : তাড়া করত । ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে রাত-দিন মাঠ-ঘাট চষে বেড়িয়েছি। প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। সকালে বেরিয়েছি-আর রাতে ফিরেছি। অনেকে অনেক রকম কথা বলেছেন। কান দেইনি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্টতা অর্জন করার পর যখন ক্ষমতা হস্তান্তরে পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠি তালবাহানা শুরু করল তখন বুঝতে বাকী রইল না-কি ঘটতে যাচ্ছে।
জাগো নিউজ : কোনো প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ?
কল্পনা : বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বিষয়টি আমাদের কাছে আরও পরিষ্কার হলো। তৎকালীন কায়েদা অাজম কলেজের শরীর চর্চার ডেমোনেস্ট্রেটর আবুল হোসেন ভূঁইয়া আমাদের বীণাপানি স্কুল মাঠে শরীর চর্চা ও ডেমি রাইফেল দিয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন। আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ২৫ মার্চ কাল রাতের পর আমরা জানতে পারলাম পিস কমিটি গঠিত হচ্ছে। যে কোনো সময় শহরে পাকিস্তানি আর্মি ঢুকে পড়বে। মানুষ হত্যা ও জ্বালাও-পোড়াও করবে।
জাগো নিউজ : আপনার দেখা মুক্তিযুদ্ধের কিছু স্মৃতিচারণ করবেন কি ?
কল্পনা : গোপালগঞ্জে পাক আর্মি আসছে খবর পেয়ে বাবা আমার মা জ্যোতিরূপা সাহা ও আমাদের দুই বোনকে নিয়ে পায়ে হেঁটে বাগেরহাটের চিতলমারীতে চলে গেলেন। আমরা দুই বোন। ছোট বোন সুচিত্রা সাহা তখন অনেক ছোট। দু’তিন দিন পর ওখান থেকে শিবপুর গ্রামে চলে যাই। সেখানে একটি মুসলিম বাড়িতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়। কয়েক দিনে বেশ আপন করে নিয়েছিল ওরা। তখন কে হিন্দু, আর কে মুসলিম ভাবতে পারিনি।
জাগো নিউজ : তারপর।
কল্পনা : সেখান থেকে নড়াইল জেলার বড়দিয়ায় আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাই। বাবার সঙ্গে আমাকে পায়ে হেঁটে বেশি চলতে হতো। পাকিস্তানি আর্মিরা বড় মেয়েদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায় এ ভয়ে বাবা কখনও আমাকে ছাড়তেন না। মা এবং ছোট বোন কখনও নৌকা বা লঞ্চে চলাচল করলেও - আমি তা পারিনি।
জাগো নিউজ : এরপর।
কল্পনা : মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রোমন্থন করতে গেলে অনেক কথা এসে যায়। বলি না ভালো-বলছি যখন ধৈর্য ধরে আমার কথা আপনাকে শুনতে হবে বলে তিনি আবদার করলেন। ভারতে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন বাবা। যে কথা, সেই কাজ। বড়দিয়া থেকে নৌকায় করে আমরা লোহাগাড়া উপজেলার কোলাদীঘলিয়া গ্রামে চলে যাই। সেখান থেকে হাটতে হাটতে যখন রাত হয়ে যেত তখন কোনো একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। ভোরে আবার হাটা শুরু করতাম। এভাবে এক সময় আমরা রায়গ্রাম আশ্রয় কেন্দ্র পৌঁছলাম। মূলত ওই স্কুলটি ছিল সকলের আশ্রয়স্থল। যশোর রোড পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে হবে। সকলে সেখানে অপেক্ষা করতাম কখন সে সুযোগ আসবে।
জাগো নিউজ : পাকিস্তানি আর্মিদের সামনে পড়েছিলেন কখনও?
কল্পনা : না। বহরের মধ্যে আমিই প্রথম যশোর রোড পার হলাম। পাকিস্তানি আর্মিদের টহল গাড়ির শব্দ শুনতে পেলাম। মনে হয়েছিল কাছাকাছি কোথাও পাক বাহিনী এসে পড়েছে। ভাগ্যিস ততক্ষণে আমরা গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়েছি।
আমার ছোট বোন সুচিত্রা হাঠতে পারত না। মা ওকে কোলে করে হাটতেন। এভাবে বিভিন্ন বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে ইছাখালি নদী পার হয়ে ভারতে পৌছি।
জাগো নিউজ : কার অনুপ্রেরণা আপনাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বেশি উৎসাহ জুগিয়েছে ?
কল্পনা : বাবা। আমরা তখন গোপালগঞ্জ শহরের সাহা পাড়ার ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। আমার বাবা রনজিৎ কুমার সাহা ছিলেন একজন সাধারণ কাপড় ব্যবসায়ী। আমার জীবনে আমার বাবার মতো মুজিব পাগল মানুষ আর কখনও দেখিনি। ইসলামপুর, বাবুরহাট, টাঙ্গাইল, পাবনাসহ বিভিন্ন জায়গায় মোকাম করতে যেতেন বাবা। ফিরে আসার সময় সেখান থেকে কিছু অর্থ সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন। যা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে তহবিল হিসেবে জমা করতেন।
জাগো নিউজ : কীভাবে মুক্তি যুদ্ধে অংশ নিলেন?
কল্পনা : আমার ইচ্ছায় বাবা আমাকে সঙ্গে করে কলকাতা থিয়েটার রোডে বাংলাদেশ মিশনে নিয়ে যান। সেখানে তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. ফরিদ উদ্দিন আহম্মদের সঙ্গে দেখা করেন।
বাবা বলেন, মেয় বড়, ট্রেনিংয়ে যেতে চায়-দেশে ফিরে যেতে চায়। ফরিদ কাকা বললেন, মা-রে, ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদের ট্রেনিং দিচ্ছে না। তবে তোকে আমি একটা ঠিকানা দিচ্ছি। ওই ঠিকানায় যা। বাবা-মেয়ে পাকসার্কাসের রওনা দিলাম। সাজেদা আপার (বর্তমানে সংসদ উপনেতা) সঙ্গে দেখা করলাম। আপা বললেন শনিবার আসো।
জাগো নিউজ : সাজেদা আপার কথায় ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলেন?
কল্পনা : হ্যাঁ গিয়েছিলাম। ওইদিন ইন্টারভিউ বোর্ডে আমাকে ডাকা হলো। আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি এখান থেকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছো ? আমি বললাম হ্যাঁ। তারপর বললেন, দেশ স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে দেখা হবে না। বাবা-মা আছে কিনা ? আমি বললাম আছে।
সাজেদা আপা বললেন, এমনও হতে পারে আর কোনো দিন ওনাদের সঙ্গে দেখা হবেনা। এমন হতে পারে ৫-১০ বছর চলতে পারে এ যুদ্ধ। তুমি কি প্রস্তুত ? চিন্তা করে দেখ। আমি বললাম, থাকবো দেখেই মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। বাবা চলে আসলেন-আমি থেকে গেলাম।
জাগো নিউজ : কোথায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলেন?
কল্পনা : এরপর আরো কয়েকজন মেয়েসহ আমাকে গাড়িতে করে গোবরা ট্রেনিং সেন্টারে ( বাংলাদেশ নার্সিং ক্যাম্প) নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে আমাদের প্রশিক্ষণ শুরু হলো। পরে সাজেদা আপা আমাদের বললেন, তোমরা যুদ্ধ করতে চাও? আমি যে জন্য এনেছি এবং তোমরা যা করবে সেটাও একটা যুদ্ধ। কারণ আমাদের যে সব ভাইরা আহত হয়ে আসবে তাদের দেখার জন্য কেউ থাকবে না। সবাই অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে গেলে অসুস্থ হলে দেখবে কে? যুদ্ধ কতদিন স্থায়ী হবে বলা যায়না। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে তোমরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করবে। এরপর কলকাতার নীল রতন হাসপাতালে পুরোদমে আমাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হলো।
জাগো নিউজ : কোথায় মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা করেছেন?
কল্পনা : কিছুদিন পর আমাদের আগরতলা নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমরা আহত ভারতীয় সেনাদের সেবা যত্ন করি। তারপর বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালে আমাদের নিয়ে গেল। টিন সেডের অস্থায়ী হাসপাতালের মেঝেতে কয়েক’শ আহত মুক্তিযোদ্ধা শোয়া দেখলাম সেখানে। সে কি ভয়াবহ দৃশ্য, না দেখলে কল্পনা করাও কঠিন। কারো হাত, পা, মুখের একপাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্যপাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত শরীর-মাথায় গুলি। আমাদের দায়িত্ব পড়লো ওইসব আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থ করে তোলার। ক্ষতস্থান ওয়াশ করা, ইনজেকশন দেয়া, ব্যান্ডেজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন অপারেশনে ভারতীয় ও বিদেশি ডাক্তারদের সহযোগিতা করতাম।
জাগো নিউজ : দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে খবর পাওয়ার পর আপনার অনুভূতি কেমন ছিল?
কল্পনা : আগরতলা যাওয়ার ১৪ দিনের মাথায় হঠাৎ এক রাতে চিৎকার শুনতে পেলাম। দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। সে কি আনন্দ। তাবু থেকে সবাই বেরিয়ে আসলাম। আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম। অনেকক্ষণ কেঁদে ছিলাম সেদিন। ২৭ ডিসেম্বর আমাদের সার্টিফিকেট দেয়ার পর মা-বাবার কাছে চলে আসি। এর দুই-তিন দিন পর বাবা, মা ও ছোট বোনসহ আমারা গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হই। গোপালগঞ্জে আসার পর পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার সেবার জন্য আমাকে ঢাকায় ডাকা হযেছিল। সামনে পরীক্ষা থাকায় আমার আর যাওয়া হয়নি।
জাগো নিউজ : আপনার পড়ালেখা সর্ম্পকে কিছু বলুন?
কল্পনা : গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে বিএ পড়েছি।
জাগো নিউজ : বিয়ে ?
কল্পনা : ১৯৮০ সালে শহরের কাপড় ব্যবসায়ী সুনীল কুমার সাহার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমার এক ছেলে ও দুই মেয়ে। বেশ ভালো সময় কেটে যাচ্ছে ওদের নিয়ে।
জাগো নিউজ : আপনার সন্তানরা কে কোথায় কি করছে?
কল্পনা : বড় ছেলে ভাস্কর সাহা ৩০ তম-বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ সার্ভিসে চাকরি করছে। বর্তমানে ও যশোরের এএসপি (সার্কেল)। বড় মেয়ে তোড়া সাহা জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রত্নতাত্তিক বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করে বর্তমানে রাষ্ট্রয়াত্ত ওষুধ কোম্পানি ইডিসিএল-এর সিনিয়র অডিট অফিসার হিসেবে কাজ করছে। আর ছোট মেয়ে অমৃতা সাহা ছাত্রী। এ বছর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ থেকে বোটানিতে অনার্স পাশ করেছে।
জাগো নিউজ : মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোনো সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন কিনা?
কল্পনা : হ্যাঁ। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর ২০০৯ সাল থেকে কল্যাণ ভাতা পাচ্ছি।
জাগো নিউজ : জীবনে এতদূর এলেন কীভাবে?
কল্পনা : ছোটবেলা থেকেই সংগ্রাম করে আসছি। স্কুল জীবন, মুক্তিযুদ্ধ তারপর সংসার জীবন সব মিলিয়ে কষ্টই করতে হয়েছে একসময়। আজ আমার কোনো কষ্ট নেই। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এতেই যত আমার আনন্দ। আর আনন্দ এই যে আমার সন্তান সন্ত্রতিরা আজ প্রতিষ্ঠিত। এ বৃদ্ধ বয়সে এখন শুধু মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবছি। যে যুদ্ধ আমাদেরকে দিয়েছে একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা ও একটি চেতনা যা আমৃত্যু লালন করে যেতে চাই।
জাগো নিউজ : মুক্তিযুদ্ধের ৪৪ বছর পর এ সম্পর্কে আপনার কোনো আক্ষেপ আছে কিনা ?
কল্পনা : অবশ্যই আছে। যে চেতনা ও আদর্শ নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম তা আজ ভুলুণ্ঠিত। জঙ্গিবাদ ও সম্প্রদায়িকতা আমাদেরকে অসহিষ্ণু করে তুলছে। আমরা যেভাবে এগুচ্ছিলাম তা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারদের প্রাধান্য বাড়ছে। আমরা এর থেকে ত্রাণ পেতে চাই। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
এমএএস/পিআর