ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

জবি ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে আবারো বিবাহিত-অছাত্ররা

প্রকাশিত: ০৫:০৩ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষিত হতে যাচ্ছে দীর্ঘ তিন বছর পর। তবে এবারও কমিটিতে শীর্ষ পদে বিবাহিত, অছাত্র ও জামায়াতের আদর্শপুষ্ট নেতারা নেতৃত্বে আসছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। নতুন কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে প্রকৃত ছাত্রত্বধারী ছাত্রদলের কর্মীদের মাঝে।

সংগঠনের একাধিক কর্মী জানান, বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সুপার ফাইভ কমিটির কোনো নেতা সক্রিয় নন। দলের ক্রান্তিলগ্নে তারা মাঠে ছিলেন না।

কারণ হিসেবে জানা যায়, জবি শাখা ছাত্রদলের বর্তমান নেতারা তৎকালীন কলেজের শিক্ষার্থী হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রদল কর্মীরা মেনে নিতে পারেনি। ফলে সুপার ফাইভ কমিটির তিন বছরে কোনো কাজ করতে পারেনি। এমনকি দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি তারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগ যেখানে ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করছে, সেখানে বিবাহিত ও অছাত্রদের দিয়ে ছাত্রদলের সংগঠন পরিচালনা করা হচ্ছে। যা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলকে একটি অগ্রহণযোগ্য ও অকার্যকর সংগঠনে পরিণত করেছে।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে জবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র ও জুনিয়র ফরমেট করে দুই ধরনের খসড়া কমিটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই এ কমিটির অনুমোদন করবেন। তবে এ দুই কমিটিতে হবু নেতাদের ছাত্রত্ব নেই বলে অভিযোগ ওঠেছে।   

জানা যায়, সিনিয়র ফরম্যাটে জবি শাখা ছাত্রদলের রফিকুল ইসলাম রফিক- সভাপতি, আসিফ রহমান বিপ্লব- সহ-সভাপতি, ওমর ফারুক কাউসার- সাধারণ সম্পাদক, শাখাওয়াত হোসেন/জাকির হোসেন উজ্জ্বল -যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাদিকুর রহমান সাদিককে -সাংগঠনিক সম্পাদক করে খসড়া কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, জুনিয়র ফরম্যাটের জবি ছাত্রদলের ওমর ফারুক কাউসার -সভাপতি, আসাদুজ্জামান আসলাম -সহ-সভাপতি, সাদিকুর রহমান সাদিক -সাধারণ সম্পাদক, জাকির হোসেন উজ্জ্বল -যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, হিমেলুর রহমানকে -সাংগঠনিক সম্পাদক করে খসড়া কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম রফিক বিবাহিত ও এক কন্যা সন্তানের বাবা। রফিকুল তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ওমর ফারুক কাউসার ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া তিনি মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। যেখানে ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র আছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের কোনো পদ পাবেন না।

শাখাওয়াত হোসেন জগন্নাথ কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা জামায়াতে ইসলামের টিকিট নিয়ে ১৯৯১ সালে শরীয়তপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ছিলেন। এছাড়া আসাদুজ্জামান আসলাম ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

সাদেকুর রহমান সাদিক অর্থনীতি, জাকির হোসেন উজ্জ্বল জবির ভুগোল ও পরিবেশ, অর্থনীতি বিভাগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এরা উভয়েই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এছাড়া মেহেদী হাসান হিমেল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তবে এদের কারো ছাত্রত্ব নেই বলে অভিযোগ ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৭ম ব্যাচের সক্রিয় ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন কর্মীরা বলেন, আপনারা তো দেখছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ভাইয়েরা আসেন না। ছাত্রলীগের রোষানলে তারা পড়েন না। আমরা ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসি, নিয়মিত আমরা বসি। অছাত্রত্ব দিয়ে জবি ছাত্রদল চলতে পারে না। এর প্রমাণ ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি দেখেছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ফয়সাল আহমেদকে সভাপতি ও ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ওমর ফারুক মুন্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে সুপার ফাইভ কমিটি গঠন করা হয়। সিনিয়র সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র যথাক্রমে রাজীব রহমান ও খন্দকার আল আশরাফ মামুনের নাম ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এসএম মহসিন বিশ্বাসকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।

এসএম/এআরএস/আরএস/আরআইপি