ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ফরিদপুর তথ্য বাতায়ন : গরমিল দেখার কেউ নেই!

প্রকাশিত: ০৪:৪৯ এএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

তথ্য জানার অধিকার সবার। জেলার কোথায় কি আছে, কি সেবা কিভাবে পাওয়া যাবে? তথ্য নিয়ে স্থান-কাল-পাত্র জেনে সেবা গ্রহণ করলেই সঠিক সেবা পাওয়া সম্ভব। আর সেই তথ্য সেবা দিতেই ৬৪টি জেলার নামে তথ্য বাতায়ন খোলা হয়েছে। (www.faridpur.gov.bd) ফরিদপুর জেলার তথ্য বাতায়নে জেলার পরিচিতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, ভৌগোলিক ও অর্থনীতিসহ অনেক অজানা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে।

ফরিদপুর জেলা তথ্য বাতায়ন যে নিয়মিত হালনাগাদ করা হয় না তা এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করলেই বোঝা যায়। দায়সারাভাবে সরকারি এই ওয়েবসাইটটি পরিচালিত হওয়ায় তথ্য বাতায়নটি আজ তথ্য বিভ্রাটে পরিণত হয়েছে। এই তথ্য বাতায়নে অনেক তথ্য থাকলেও ওয়েবসাইট তৈরির পর অনেক কিছুই হালনাগাদ করা হয়নি।

এমনকি ভুল পথে গেলেও সংশোধন করার কেউ নেই। জেলা প্রশাসকের `ফন্ট ডেক্স` এ সাহায্য পেতে ওয়েবসাইটের হোম পেজ থেকে জেলা প্রশাসন-জেলা প্রশাসক-জনগণনের সভা মেনুতে ক্লিক করলে যে নীল রং এর `ফন্ট ডেক্স` অপশানটি আসবে সেখানে ক্লিক করলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের ফন্ট ডেক্স-এ কর্মচারীদের নাম মোবাইল নম্বরের তথ্যটি ভেসে উঠে। যেটা নিচের ছবিতে দেখা যাচ্ছে।

Faridpur-Comilla
 
১৯১৭ সালে শহরের প্রাণকেন্দ্র আলীপুরে জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। জরুরি বিভাগ, বর্হিবিভাগ এবং অন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা প্রদান, রোগীদের বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা, যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ রোগীদের বিনামূল্যে কফ পরীক্ষা এবং ওষুধ সরবরাহ করাসহ বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সর্ম্পকিত সেবা প্রদান করা হয়। এমন তথ্যই উল্লেখ আছে তথ্য বাতায়নে।

কিন্তু জেনারেল হাসপাতালের এই সেবাগুলো পেতে যে নম্বরটি উল্লেখ আছে সেটি চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বর। ওই নম্বরটিতে ফোন করে জানা যায় তিনি গোপালগঞ্জ হাসপাতালে কর্মরত। তিনি আরও বলেন, গত মার্চ মাসে তিনি ফরিদপুর থেকে বদলি হয়েছেন।
তথ্য বাতায়নের হোমপেজের নিচের অংশে `স্বাস্থ্য` মেনু থেকে `হাসপাতাল ও ক্লিনিক` বিভাগে ক্লিক করলে এই চিত্রটি দেখা যায়।

Health

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নামের তালিকায় চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিনের নাম রয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু দিন আগে তিনি বদলি হয়ে গেছেন। বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ফারজানা সিদ্দিকা। তবে তার নাম এখনও তথ্য বাতায়নে উঠেনি।

Faridpur

জেলা প্রশাসক ডিজিটাল গার্ড ফাইলে কোনো ধরনের তথ্য নেই। বিভিন্ন শাখা ভিত্তিক ফরম যেমন- ট্রেজারি, নেজারাত, অ্যাসিড বিক্রির লাইসেন্স ফরম, এমআরপি ফর্ম, শিক্ষা ও কল্যাণসহ বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য শাখার নাম উল্লেখ থাকলেও সেখানে কোনো ধরনের ফরম পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসন কর্তৃক পালিত ১০টি দিবস উল্লেখ থাকলেও অন্যান্য দিবসের বিষয়ে তেমন কিছু উল্লেখ নেই।

জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূচিতে কি সেবা কিভাবে পাবেন এমন তালিকাতে সেবার নামসমূহ আছে কিন্তু সেবাগুলো কিভাবে কোথায় পাওয়া যাবে তার কোনো বিস্তারিত তথ্য সেখানে দেয়া নাই।

ফরিদপুর থেকে ঢাকা যেতে যাত্রী প্রতি ১৮০ টাকা ভাড়া উল্লেখ আছে। কিন্তু যাতায়াতের জন্য ভাড়া বিষয়ক যে তথ্য আছে তাতে বাস্তবতার কোনো মিল নেয়। গোল্ডেন, আজমেরী, সূর্যমুখী, বিকাশ, আনন্দ পরিবহনের উল্লেখিত যাতায়াত ভাড়ার বিপরীতে বর্তমানে বাড়তি প্রায় ১’শ টাকা গুণতে হয়। এমন তথ্য দেখে যে কেউ আশ্চার্য হতে পারেন বা বিভ্রাটে পড়তে পারেন বলে মনে করেন ফরিদপুর নিউ মার্কেটের স্বর্ণময়ী সেনেটারি দোকান ব্যবসায়ী মানব সাহা।

বাতায়নের হোম পেজের (কাভার পেজে) অন্যান্যে ই-সেবা লিংকটির তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তাদের তালিকার অবস্থা হ-য-ব-র-ল। প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম থাকলেও সিভিল সার্জনের নামের ঘরে `কবতকবত` লেখা আছে। তবে কোনো অফিসের যোগাযোগের নম্বর নেই।

Faridpur

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন কর্মকর্তা ডা. অসিত রঞ্জন দাস জাগো নিউজকে বলেন, আমি বিষয়টি দেখবো। আর এখন থেকে যাতে নিয়মিত সাইটটি হালনাগাদ করা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশ দিবেন বলেও জানান।

জেলার সাইবার ক্যাফে ব্যবসায়ী মো. শাওন শেখ বলেন, জেলার অনেক তথ্য এই ওয়েবসাইটটিতে পাওয়া যায়। কিন্তু নিয়মিত অনেক তথ্যই হালনাগাদ করা হয় না। এছাড়া অনেকে পেজে ক্লিক করে (Access denied- You are not authorized to access this page) এই কথাটি ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন।

Faridpur
 
তথ্য বাতায়নের এই দায়সারা তথ্য ভাণ্ডারটি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুস সবুর জাগো নিউজকে বলেন, এই ওয়েবসাইটটি প্রথমে আমাদের অফিস থেকেই পরিচালিত ও হালনাগাদের কাজটি করা হতো। পরে নিয়মিত হালনাগাদ ও সংযোজন-বিয়োজনের কাজটি সহজ করতে প্রত্যেকটি দফতরকে তাদের আলাদা আইডি ও পাসওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। তাই তথ্য বাতায়নের কাজটি নিজ নিজ দফতরগুলো পরিচালনা করে থাকে। তারপরও বিষয়গুলো আমরা নজর রাখি বা ওয়েবসাইটে হালনাগাদ সংক্রান্ত কোনো ধরনের সমস্যা হলে আমরা সেটা দেখে থাকি বা পরামর্শ দেয়। যে বিষয়গুলো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে আছে সেগুলো আমরা আজই ঠিকঠাক করে দিচ্ছি বলেও তিনি জানান।     

এসএস/এমএস