ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

চীনের দখলে বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষার বাজার

প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৫

দেশের মেডিকেল শিক্ষার বাজার দখল করেছে চীন। গত পাঁচ বছরে প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেডিকেল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোট ২০৬ শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাস করে দেশে ফিরে এসেছেন। মোট শিক্ষার্থীর শতকরা ৯০ ভাগই চীনের মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থী।  জাগো নিউজের অনুসন্ধানে এমন তথ্য জানা গেছে।   

বিএমডিসির নীতিমালা অনুসারে, বিদেশের যে কোনো মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাসকৃত ডিগ্রিধারী ডাক্তাররা দেশের যে কোনো চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাইলে বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ বাধ্যতামূলক। এ জন্য শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে বিএমডিসির অধীনে বিশেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়।

২০১১ সাল থেকে বিএমডিসি কর্তৃপক্ষ বছরে দুইবার বিদেশি মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা ডাক্তারদের জন্য প্রি-কোয়ালিফাইং রেজিস্ট্রেশন পরীক্ষা গ্রহণ করে আসছেন। আগামী ৩০ নভেম্বর ৯ম বারের মতো ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে এ প্রি-কোয়ালিফাইং রেজিস্ট্রেশন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিএমডিসির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন পরীক্ষায় মোট ৫৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। তন্মধ্যে ৩৯ জনই চীনের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক অবশিষ্টরা রাশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ইউক্রেন ও ফিলিপাইন থেকে পাস করা।   

বিএমডিসির রেজিস্ট্রার ডা. জাহেদুল হক বসুনিয়া সোমবার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বিদেশ থেকে যত ডাক্তার পাস করে দেশে ফিরছেন তাদের সিংহভাগই চীনের।

তিনি আরো জানান, আমাদের দেশের মতো চীনে মেডিকেল কলেজ নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নেই, সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ও গাইড লাইনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পড়ানো হয়।  

জানা গেছে,  ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট বারের পরীক্ষায় প্রি-কোয়ালিফাইং রেজিস্ট্রেশন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বছরওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১১ সালে ৩০, ২০১২ সালে ২৫, ২০১৩ সালে ৫৪, ২০১৪ সালে ৬৬ ও ২০১৫ সালে ৩১ জন অংশগ্রহণ করেছে। একই সময়ে পাস করেছে যথাক্রমে ২৭, ১৪, ৪৬, ৪৭ ও ২৬ জন। অংশগ্রহণকারী ও পরীক্ষায় পাসকৃত চিকিৎসকদের মধ্যে চীনের ডিগ্রিধারীর সংখ্যাই বেশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএমডিসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, ডাক্তারি পাসের জন্য পরীক্ষার ফলাফল (জিপিএ ) বাধ্যতামূলক না হওয়া ও কম খরচে পড়াশুনার সুযোগ থাকায় দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা চীনে যাচ্ছেন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চীনে ইংলিশ ভার্সনে যে সকল মেডিকেল ফ্যাকাল্টি পরিচালিত হচ্ছে তার অধিকাংশগুলোতেই পড়াশুনার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

তারা বলেন, চীনে পরীক্ষায় এসেসমেন্ট পদ্ধতি খুবই দুর্বল। বিদেশি শিক্ষার্থীরা চাইলে পড়াশুনা করে কিংবা না করে নির্দিষ্ট বছর শেষে ডিগ্রি পাওয়ার সুযোগ থাকে। তাদের পূর্ব অভিজ্ঞতায় দেখেছেন যারা সত্যিকার অর্থে মেডিকেল শিক্ষা গ্রহণ করেন তারা অত্যাধিক ব্রিলিয়ান্ট আর যারা নিছক ডিগ্রি নেন তারা খুবই দুর্বল চিকিৎসক হয়ে থাকেন।
 
চীনে মেডিকেল শিক্ষার বাজার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার ডা. জাহেদুল হক বসুনিয়া জাগো নিউজকে বলেন, চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফ্যাকাল্টিতে যাওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজ খবর নিতে হবে।

কম টাকা টিউশন ফি’র অফার পেয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, চীন সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত হওয়ার পাশাপাশি যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যেই কয়েক ব্যাচ শিক্ষার্থী পাস করে বের হয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া উচিত।

এমইউ/এসকেডি/এএইচ/পিআর