ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

অর্জনের সাড়ে চার দশক যুবলীগের

প্রকাশিত: ০১:২২ এএম, ১১ নভেম্বর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধে বিধ্বস্ত বাংলার জনপথ। দেশে ফিরে পুনর্বাসনে আত্মনিয়োগ করেছেন স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নয়া স্বপ্ন আর চ্যালেঞ্জ নিয়ে সংগঠনের পুনর্গঠনেও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম যুব সংগঠন বাংলাদেশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠা। মূল সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৯৭২ সালে ১১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী যুবলীগ গঠন করেন।

প্রতিষ্ঠাকালীন যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যুবনেতা বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন শেখ ফজলুল হক মনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে থাকে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য এবং উদ্যোম নিয়ে যাত্রা শুরু করেন   তাতে আওয়ামী যুবলীগ বিশেষ ভূমিকা পালন করতে থাকে। তবে ওই সময়ে যুবলীগের কিছু নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য বঙ্গবন্ধুর সরকারকে বিশেষ সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনিও নিহত হন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মূল সংগঠনের সঙ্গে ঝিমিয়ে পড়ে আওয়ামী যুবলীগের কার্যক্রমও। তবে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে যে কয়টি জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে, তার প্রতিটিতেই নেতৃত্ব দিয়েছে যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে যুবলীগের মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে বগুড়া এবং চট্টগ্রামে দুই যুবলীগ নেতা নিহত হন। খন্দকার মোশতাক এবং সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সময় অসংখ্য যুবলীগ নেতাকর্মী গ্রেফতারও হন।

১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে যুবলীগ আবার নতুন করে সংগঠিত হতে থাকে। এ সময় এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগই সর্বাগ্রে নেতৃত্ব দিতে থাকে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত শহীদ নূর হোসেন ছিলেন যুবলীগের একজন সক্রিয়কর্মী।

যুবলীগের নেতৃত্বের এমন ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যায় ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে এবং ২০০৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপক্ষের আন্দোলনেও। এই সময় সারাদেশেই মূল আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আন্দোলন করতে গিয়ে যুবলীগের অসংখ্যা নেতাকর্মী হতাহতের শিকার হন। মামলা-গ্রেফতার মোকাবেলা করতে হয় অনেককেই।

তবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। যুবলীগের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অন্তর্কোন্দোলে জড়িয়ে পড়ায় মহাজোট সরকারকেও সমালোচনায় পড়তে হয়। দল এবং সরকার প্রধানের পক্ষ থেকেও যুবলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিকবার উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায়।

২০১২ সালের ১৪ জুলাই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসে চেয়ারম্যান পদে ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে মো. হারুনুর রশিদ নির্বাচিত হন। সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাগো নিউজকে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ যুবলীগ। এই সংগঠন জাতির কল্যাণে নিবেদিত। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই গণতান্ত্রিক সকল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এরই ধারাবাহিকায় আমরা বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূলে যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম যুব সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ। বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন এ দেশের যুবসমাজের মধ্যমণি। তিনিই এর প্রতিষ্ঠকালীন সভাপতি। আমরা তার আদর্শকে ধারণ করেই সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অর্জন মানেই স্বাধীনতার অর্জন, দেশের অর্জন।

যুবলীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ প্রসঙ্গে হারুনুর বলেন, ‘যুবলীগে তারুণ্যের শক্তি কাজ করে। যুব সমাজের সর্ববৃহৎ সংগঠন এটি। ব্যক্তি অপরাধের দায় একটি সংগঠন নিতে পারে না। এরপরেও আমরা এ বিষয়ে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করে চলছি।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সাড়ে ৮টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণিসহ সব শহীদের কবরে শ্রদ্ধা জানাবে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগ কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

এএসএস/বিএ

আরও পড়ুন