ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

বড় ভাইয়েরা আন্দোলনের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে

প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০১৫

‘আমি আর আন্দোলনে নেই। বড় ভাইয়েরা আন্দোলনের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।’ সংহতি প্রকাশের নামে পাশে দাঁড়ালেও তাদের মূল মিশন ছিল আন্দোলনকে গতিহীন করে দেয়া এবং তারা সুকৌশলে মিশনে সফল হয়েছে। মেডিকেল কলেজের পরীক্ষা ও ফলাফল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে গত কয়েকদিন যাবত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো নিউজের কাছে তাদের এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

বৃহস্পতিবার দুপুর আনুমানিক সোয়া ১২টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার প্রস্তুুতি নেয়। এ সময় ঢাকা মেডিকেল ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের কথিত বড় ভাইয়েরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি ব্যানার নিয়ে সামনে দাঁড়ালে এ নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে তাদেও তীব্র বাদানুবাদ ও এক পর্যায়ে হাতাহাতির অবস্থা তৈরি হয়। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিপাকে পড়ে যায়।

Medical-Student

পরবর্তীতে ওই ব্যানার বাদ দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে টিএসসি হয়ে পাবলিক লাইব্রেরির সামনে আসলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে থাকলেও বড় ভাইয়েরা তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।

এসময় আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাববকদের উদ্দেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে দেশবাসীকে পাশে দাঁড়াতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, বড় ভাইয়েরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি কার্যক্রম প্রতিহত করবেন, বিভিন্ন আন্দোলনে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে পুলিশের সাথে বৈধ দাবি নিয়ে বচসা করবেন, লাঠিচার্জের শিকার ও টিয়ার গ্যাস খাবেন ইত্যাদি নানা কথা দিলেও বাস্তবে তারা সুকৌশলে আন্দোলন স্তিমিত করার গোপন মিশনে এসেছেন।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র মসিউর রহমান এঞ্জেল নামে একজন (ছাত্রলীগ নেতা, যদিও তিনি সে পরিচয় দিতে ইচ্ছুক নন) জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই ব্যানারে তার ছবি ব্যবহার করতে চেয়েছি। আমরা ব্যারিকেড ভাঙ্গতে নিষেধ করেছি কারণ এই ছেলেমেয়েরাই দু’দিন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবে। ব্যারিকেড ভাঙলে পুলিশ মারধর করে আহত করতে পারে। এ চিন্তা থেকেই নিষেধ করেছি। তবে তারা যদি স্বেচ্ছায় সামনে যেতে চায় যেতেই পারে। আমরা বাধা দেবোনা।

Medical-Student

এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ঢামেকে আমরা এই ১৬/১৭বছরের ছেলেরাই পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কলেজে ঢুকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছি, গতকাল শাহবাগে পুলিশের হাতে মার খেয়েছি ও আটক হয়েছি। এভাবে পুলিশ ও আপনাদের আজ্ঞাবহ হয়ে বসে থেকে আন্দোলনে সফলতা আসবে না বলে তারা মন্তব্য করেন।

ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক পরিচয়ে একজন নেতা জানান, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। তারা কোন ব্যানার ব্যবহার করেননি। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) ছাত্রলীগ পরিচয়ে কিছু সংখ্যক মেডিকেল শিক্ষার্থী ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করতে চাইলে তারা বাধা দিয়েছেন। এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডা হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, যৌক্তিক আন্দোলনে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তারা প্রস্তুত।

এ প্রতিবেদক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও শাহবাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবস্থানকালে দেখেছেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের প্রায় সবার অভিন্ন সুরে বক্তব্য ছিল- ‘বড় ভাইয়েরা আন্দোলনের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে।’

# ‘নিরাপত্তাহীনতায়’ ঢামেকে পুলিশি প্রহরায় শিক্ষার্থী ভর্তি চলছে
# হঠাৎ করেই বিক্ষোভে উত্তাল ঢামেক
# মেডিকেলে পুনঃভর্তি পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ (দেখুন ছবিতে)
# ঢামেক অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থান
# আজ থেকে মেডিকেলে ভর্তি শুরু
# পুনঃভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের আন্দোলনে সাড়া নেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের
# মেডিকেলে পুনঃভর্তি পরীক্ষা : দাবি না মানলে ঢাকা অভিমুখী কর্মসূচি

এমইউ/এসএইচএস/পিআর