ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

সফটওয়্যার নির্ধারণ করবে শিক্ষক বদলির যোগ্যতা

মুরাদ হুসাইন | প্রকাশিত: ০৫:১০ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯

অনিয়ম-দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি কার্যক্রম সফটওয়্যারের আওতায় আনা হচ্ছে। আগামী বছর পাইলটিং হিসেবে কয়েকটি জেলায় এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। ২০২১ সাল থেকে সব শিক্ষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এর আওতায় আনা হবে। ফলে বদলি হতে আর কাউকে ধরনা দেয়ার প্রয়োজন হবে না।

মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র জানায়, শিক্ষক বদলি কার্যক্রম আধুনিকায়ন করতে প্রায় দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে একটি সফটওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। এ সফটওয়্যারে শিক্ষকদের আমলনামা সংযুক্ত করা হবে। প্রথমে বদলি হতে ইচ্ছুক শিক্ষকদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপর সফটওয়্যার নির্ধারণ করবে, সে আসলে বদলি হওয়ার যোগ্যতা রাখে কি না। সফটওয়্যারটি তৈরি করতে প্রায় ছয় মাস লাগতে পারে। প্রথম পর্যায়ে পাইলটিং হিসেবে কয়েকটি জেলার শিক্ষক বদলি করা হতে পারে। পরে সব জেলায় এ পদ্ধতির আওতায় আনার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, শিক্ষকরা একটি পদের বিপরীতে একাধিক আবেদন করতে পারবেন। তাদের জ্যেষ্ঠতা, যোগ্যতা, কর্মজীবনের অর্জন ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী শিক্ষকদের বদলি করা হবে। বদলির জন্য শিক্ষকদের শূন্য থাকা সাপেক্ষে একাধিক বিদ্যালয় চয়েজ দেয়া হতে পারে। আবেদনকারীর আবেদন কোন পর্যায়ে রয়েছে তার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে তা দেখতে পারবেন। একাধিক বিদ্যালয়ে আবেদন করলেও যোগ্যতার ভিত্তিতে শূন্য থাকা সাপেক্ষে আবেদকারীকে একটি বিদ্যালয় নির্বাচিত করতে হবে। তবে ঢাকায় বদলির বিষয় আগের মতো মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর ন্যস্ত থাকবে বলে জানা গেছে। এ পদ্ধতিতে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও বদলি করা হতে পারে।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিগত সময়ের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য একটি আধুনিকমানের সফটওয়্যার তৈরি করে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষক বদলির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথমে পাইলটিং হিসেবে কয়েকটি জেলার সহকারী শিক্ষক বদলি করা হতে পারে। এটি সফল হলে সব শিক্ষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, বদলি কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় এলে অনিয়ম ও শিক্ষক হয়রানি বন্ধ হবে। শিক্ষকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন তাই বদলি কার্যক্রম অনলাইনে চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলে ঘরে বসেই শিক্ষকরা আবেদন জমা দিতে পারবেন। ঢাকায় এসে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। যোগ্যতা অনুযায়ী বদলির আদেশ জারি করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি বছর তিন মাসজুড়ে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম চলে। জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হয়, ৩১ মার্চ পর্যন্ত বদলির জন্য আদেশ জারি করা হয়। চলতি বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক বদলির শেষ সময় ছিল গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত। বদলির জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত শিক্ষক ভিড় করেন অধিদফতরে। বদলির তদবিরে দালালদেরও দৌরাত্ম্য কম ছিল না। পরিস্থিতি সামাল দিতে বেশ কয়েক দিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) প্রবেশ গেট বন্ধ রাখা হয়।

বদলির শেষ সময়ের (৩১ মার্চ) পরও বেশ কয়েক দিন এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে ৩১ মার্চের পর ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সহকারী শিক্ষক বদলি করা হলেও বদলি নির্দেশের দিন হিসেবে ৩১ মার্চ উল্লেখ করা হয়।

সহকারী শিক্ষক বদলিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে মন্ত্রী-এমপি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের তদবিরে ভারে কাতর হয়ে পড়ে। এসব তদবিরে কিছু কিছু ব্যক্তিকে বদলিও করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে যোগ্যতার ভিত্তিতেই সবাইকে বদলি করা হয়েছে বলে দাবি করেন ডিপিই’র দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতেই সফটওয়্যার পদ্ধতিতে সহকারী শিক্ষক বদলি করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এমএইচএম/জেএইচ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন