ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ঈদযাত্রায় থাকছে ভোগান্তির শঙ্কা

জসীম উদ্দীন | প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ২৩ মে ২০১৯

প্রতি বছরই ঈদযাত্রা নিয়ে একরকম আতঙ্ক তৈরি হয়। মহাসড়কে ছোটখাটো সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করার প্রক্রিয়া চলে। ঈদযাত্রা নিরাপদ হবে, যানজট হবে না- এমন ঘোষণা আসলেও ঈদের ২/৩ দিন আগে থেকেই মহাসড়ক স্থবির হয়ে পড়ে। সেই ভোগান্তি পোহাতে হয় ঈদের ঘরমুখো মানুষদের। মহাসড়কের অনেক স্থানে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার অস্বস্তি রয়েছে। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও এবারও যানজট ও জনভোগান্তির আশঙ্কা থাকছে।

তবে এবার ঈদযাত্রায় মহাসড়কে নিরাপত্তা, ভোগান্তি কমানো এবং যানবাহনের শৃঙ্খলায় সমন্বিত উদ্যোগের কথা বলছে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এবার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও সড়কে দায়িত্ব পালন করবে। ইতোমধ্যে সমন্বয় সভা করে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যানুযায়ী, গত ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে দেশের বিভিন্ন সড়কে-মহাসড়কে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এবং এক হাজার ২৬৫ জন আহত হন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৩৩৫টি ঘটনায় ৪০৫ জন নিহত এবং এক হাজার ২৭৪ জন আহত হন। এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক পথের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট করে ২০টি প্রস্তাবনা দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ঈদে বাড়ি যাওয়া মানুষের বড় অংশেরই ভরসা সড়ক-মহাসড়ক। বাসের আগাম টিকিট কেনা যাত্রীরা আগামী ২৯ তারিখের মধ্যে ঈদযাত্রা শুরু করবেন। চলবে ৪ জুন পর্যন্ত। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ঈদঘিরে মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখার চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। এবার নির্মাণকাজ পুরোদমে চলছে। তবে অনেক স্থানে নির্মাণকাজ শেষ হলেও মোটাদাগে শেষ হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ফোর লেনের কাজ চলছে। এ সড়কে চলাচল এখন নাজুকপর্যায়ে। নিত্যদিন স্বাভাবিকভাবে এ সড়কে চলাচলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা বেশি সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে তিনটা ফ্লাইওভারের কাজ। চলছে রাস্তা ঘেঁষে ড্রেন নির্মাণের কাজও। নির্মাণকাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি হচ্ছে প্রতিদিন। কখনও কখনও ক্রেন বিকল হয়ে যানজট তৈরি করছে। যে কারণে এবার রাজধানী থেকে গাজীপুর রুট দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহনগুলোতে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে।

ঈদের সময় এ সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে।

তবে আশার কথা হলো, মহাসড়কে যানজটের অপর নাম চন্দ্রা ও কোনাবাড়ি। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই (২৫ মে) সেই চন্দ্রা ও কোনাবাড়িতে ফ্লাইওভার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এতে ওই এলাকায় যানজট থাকবে না বলে ধারণা হাইওয়ে পুলিশের।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা ও সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী।

গত ২১ মে পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় আইজিপি মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক চলাচল বন্ধ এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া যানবাহন না থামানোর জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সড়কে চাঁদাবাজি হলে সঙ্গে সঙ্গে জানানোর অনুরোধ করে হাইওয়ে পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি এম এ মালেক জাগো নিউজকে বলেন, পরিবহনে চাঁদাবাজি, যাত্রী হয়রানি বরাদাস্ত করা হবে না। আমাদের নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি যে কেউ আমাদের অবহিত করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, কোথাও গাড়ি থেমে থাকবে না। যেখানে একটু সমস্যা আছে সেখানে হাইওয়ে পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি সহযোগিতায় এবার এপিবিএন ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও সড়কে দায়িত্ব পালন করবে। আশা করছি, যানজটের ভোগান্তি ছাড়াই সবাই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।

তবে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ঈদে সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি ও সক্রিয় অবস্থানের কারণে খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ফেরার পথে তদারকি না থাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।

‘ঈদযাত্রা মানে শুধু যাওয়া নয়, কর্মস্থলে ফিরে আসাও। এবার আমরা আশা করব, যাওয়া ও আসার পথে তদারকি থাকবে। আমাদের যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এবার ২০ দফা প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এসব অনুসরণ করলে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হবে না।’

জেইউ/এমবিআর/এমএআর/জেআইএম

আরও পড়ুন