ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

আদালতে উপস্থিত হন না মামলার সাক্ষী

জাহাঙ্গীর আলম | প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

২০১৫ সালে বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হয়। তাদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

ওই ঘটনার প্রায় দুই বছর পর কামাল নামে একজনকে আসামি করে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু অভিযোগ গঠনের পর আজ পর্যন্ত কোনো সাক্ষীই আদালতে সাক্ষ্য দিতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় ঝুলে আছে আলোচিত ওই মামলার বিচার কার্যক্রম।

আরও পড়ুন >> সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করে না পুলিশ

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। পুলিশের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাক্ষীদের ঠিকানায় যে সমন জারি করা হয়েছে তা তামিল হচ্ছে। সাক্ষীরা সম্মানিত ব্যক্তি। তাদের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আটটি ধার্য তারিখ পার হয়েছে। এর মধ্যে কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় দেরি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানো। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হলে তাদের জেরা করব। আমার আসামি কামাল এ মামলায় খালাস পাবে- এটা আমার আশা।

boishak-01.jpg

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুন কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট, ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ৬ মে , ২৬ জুন, ৯ আগস্ট, ২১ অক্টোবর এবং চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটির সাক্ষীর জন্য ধার্য তারিখ থাকলেও কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির হননি। আগামী ১৭ জুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

জেএ/এমএআর/এমএস

আরও পড়ুন