ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ঐক্যফ্রন্টের ‘ব্যথায়’ বিএনপি, অবহেলায় ২০ দল

খালিদ হোসেন | প্রকাশিত: ০৮:৫০ পিএম, ২৪ মার্চ ২০১৯

পরীক্ষিত মিত্রদের অবহেলা করে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে মাতামাতি করছে- এমন অভিযোগ ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতাদের। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এ জোটের কোনো বৈঠক না হওয়ায় বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

২০ দলীয় জোটের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জোটের অন্যতম শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে মাতামাতি করছে। ২০ দলীয় জোট এখন অবহেলিত। সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা শিগগিরই ২০ দলের সভা ডাকব।’

এ প্রসঙ্গে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘বর্তমানে জোটের কোনো কর্মসূচি নেই, বৈঠকও হয় না। তবে, আমরা দলীয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি।’

জোটের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা বিএনপির ইচ্ছা। বিএনপির সঙ্গে জোট করেছি, তারা যখন ডাকবে তখন যাব। আমরা তো আর বিএনপির জন্য দল করিনি, করেছি জনগণের জন্য, দেশের জন্য। তাই আমরা নিজেদের দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২০ দলীয় জোটের কোনো সভা হয়নি জানিয়ে ইরান বলেন, ‘বিএনপি তো এখন ঐক্যফ্রন্টের ব্যথায় আছে, দৌড়াদৌড়ি করছে। ঐক্যফ্রন্টের যে দলগুলো রয়েছে তাদের মানববন্ধনের চেয়ে অন্যকিছু করার ক্ষমতা নেই। এরা কোনো দিন বিক্ষোভ কর্মসূচি দেবে না। কারণ বিক্ষোভ কর্মসূচি দিলে রাস্তায় নামতে হবে, পুলিশের পিটুনি খেতে হবে।’

২০ দলীয় জোট অস্তিত্ব সঙ্কটে কিনা- জানতে চাইলে ইরান বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। কিন্তু বিএনপি এ মুহূর্তে মনে করছে না যে, ২০ দলীয় জোটের কার্যক্রম প্রয়োজন। ২০ দলীয় জোটকে এখন কর্মসূচিহীন বা নিষ্ক্রিয় বলতে পারেন, অস্তিত্ব সঙ্কটে নয়।’

তিনি বলেন, ‘আশা করেছিলাম, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপি শক্ত কর্মসূচি দেবে, রাজপথে নামবে। আমরা বিগত আন্দোলনের পরীক্ষিত শরিক। বিগত আন্দোলনে আমাদের শরিক দলগুলো বিএনপির পাশাপাশি প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে। এ কারণে আন্দোলন যদি করতে হয় আমাদের লাগবে। বিএনপি ঘুরেফিরে আসুক, তারা পিটি-প্যারেড করে আসুক। তারা হয়তো সময়ক্ষেপণ করছে।’

‘জোটের কর্মসূচি নিয়ে আমরা চিন্তিত নই, এ নিয়ে আমাদের কোনো তাড়া নেই।’

ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রাকিব বলেন, ‘ইলেকশনের পর ২০ দলের যৌথ কোনো প্রোগ্রাম হয়নি।’ বিএনপির অপর যে জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ তো কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২০ দল কি নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, ২০ দল নিষ্ক্রিয় হবে না। ঐক্যফ্রন্টের কিছু দায়-দায়িত্ব আছে, ওই যে সংসদে যাওয়া, না যাওয়া। ঐক্যফ্রন্টের আরেকজন এমপি আছেন তো, আরও কিছু প্রবলেম আছে। কিন্ত আমরা এগুলোতে ইনভলব হচ্ছি না। আমরা যারা ২০ দলে আছি তারা তো ঐক্যফ্রন্টেও আছি। কিন্তু ২০ দলের যে ফোরাম, এটার কোনো প্রোগ্রাম হচ্ছে না।’

আপনারা যারা ২০ দলীয় জোটে আছেন, তারা সভা করার তাগিদ অনুভব করছেন কিনা- জানতে চাইলে আব্দুর রাকিব বলেন, ‘তাগিদ অনুভব করছি। কিন্তু মেইন যে সমস্যা, সেটা হলো ইলেকশনে এটা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিটা দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন এটা নিয়ে সমন্বয়ের যে উদ্যোগ, সেটা হচ্ছে না। অবশ্য, জানুয়ারিতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে একটা উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।’

তিনি বলেন, “২০ দল আছে, ২০ দল ‘নাই’ হয়ে যায়নি। ‘নাই’ হওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ২০ দল আছে, থাকবে।”

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কাছে ২০ দলীয় জোটের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ২০ দলীয় জোটের কোনো মিটিং হয় না। আমাদের প্রধান শরিক বিএনপি কখন মিটিং ডাকবে আমরা সেই অপেক্ষায় আছি। মিটিং ডাকলে আমরা সেখানে আলোচনা করব। এর বেশি কোনো তথ্য আমাদের কাছে নাই।’

‘আমরা জোটে আছি। বিএনপি আমাদের প্রধান শরিক। আমরা জোটের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। ওনারা আমাদের সঙ্গে নিয়ে কীভাবে অগ্রসর হবেন- সেই নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। আমাদের মধ্যে প্রধান সিদ্ধান্তগ্রহণকারী হচ্ছে বিএনপি তথা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সিদ্ধান্তগ্রহণকারী ড. কামাল হোসেন। এখানে এ তফাৎটা আছে। আমরা ২০ দলীয় জোটে চাইলেই কোনো কিছু করতে পারব না। ঐক্যফ্রন্ট তাদের প্রোগ্রাম নিয়ে আগাতেই পারে।’

কেএইচ/এমএমজেড/এমএআর/পিআর

আরও পড়ুন