ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ভারতে চিকিৎসা শিক্ষার বাজার সৃষ্টির টার্গেট প্রাইভেট মেডিকেলের

প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৫

দেশের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের মালিক কর্তৃপক্ষ প্রতিবেশী দেশ ভারতের বাজারে চিকিৎসা বাজার সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। চলতি বছর (২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষ) ভারতের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে কমপক্ষে ৫০০ ভারতীয় শিক্ষার্থী ভর্তির টার্গেট নিয়ে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছেন তারা।

আসন্ন ভর্তি মওসুমকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের মালিকরা ইতিমধ্যেই দিল্লী, লখনৌ, আহমেদাবাদ, কলকাতা, গৌহাটি ও কাশ্মিরসহ বিভিন্ন প্রদেশ সফর করেছেন। তারা স্থানীয় কনসালটেন্টদের মাধ্যমে বিভিন্ন হোটেলে সভা সেমিনার করে ওই দেশের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তির হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। শুধু তাই নয়, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে  বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এ সংখ্যা ১০০০ জনে উন্নীত করার টার্গেট নিয়ে পরিকল্পনা অনুসারে কাজ  করছেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন একাধিক প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের মালিক কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএমসিএ) মহাসচিব শাহ মো. সেলিমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ ধরনের উদ্যোগের কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের বেশ কিছুসংখ্যক প্রাইভেট মেডিকেলের ভারতের বাজারে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। সে সুনামকে কাজে লাগিয়ে ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে তারা ভারতের চিকিৎসা শিক্ষার বাজার সৃষ্টিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই বছর বিপিএমসিএর পক্ষ থেকে কাশ্মির, কলকাতা ও আসামের গৌহাটিতে সভা সেমিনার করেছেন।

তাদের প্র্রচেষ্টার কারণে গত বছর বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। এবারও তিনিসহ বেশ কয়েকটি মেডিকেল কলেজের মালিক কর্তৃপক্ষ দিল্লি, লখনৌ ও আহমেদাবাদসহ বিভিন্ন প্রদেশ সফর করে সেমিনার করেছেন।

তিনি ব্যক্তিগতভাবে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সাথে সাক্ষাত করে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি আবেদন অনলাইনের মাধ্যমে গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন।চলতি বছর ৫০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে বলে তিনি আশা করছেন।

তিনি  জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলো মোট আসনের শতকরা ৪০ ভাগ আসনে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারে। বর্তমানে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে সবচাইতে বেশি শিক্ষার্থী নেপাল থেকে আসছে। গত বছর পাঁচশতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মালিক ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ভর্তির ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।

প্রাইভেট মেডিকেলে ভর্তির ক্ষেত্রে আর্থিক সঙ্গতির বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত উল্লেখ করে তারা বলেন, নেগেটিভ  মার্কিং পদ্ধতি চালু রেখে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৪০ পাওয়া বাধ্যতামূলক করার কারণে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল এমন পরিবারের অনেকেই শিক্ষার্থীই ৪০ নম্বর পাচ্ছেনা। ফলে গত বছর বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অনেক আসন শূন্য ছিল।

তারা জানান, একটি ভালমানের প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ পরিচালনায় (অবকাঠামো নির্মাণ, বেতনভাতা, যন্ত্রপাতি, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র ইত্যাদি ক্রয়ে)প্রতি মাসে বিপুল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়। দেশি শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে সে খরচ মেটানো সম্ভব হয়না।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জন্য শিক্ষার্থী প্রতি তারা ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা নিয়ে থাকেন। যা দেশি একজন শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি’র দ্বিগুণের বেশি। এ সব কারণেই তারা বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য মরিয়া হয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রকাশিত হেলথ বুলেটিন-২০১৪ অনুসারে বেসরকারি পর্যায়ে ৫৫টি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৮৫০টি।

এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি