ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

দুর্নীতিবাজ যেই হোক টুঁটি চেপে ধরবই

সায়েম সাবু | প্রকাশিত: ১০:১০ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশ নেন। নির্বাচিতও হন। এরপর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট এ আইনজীবী।

নির্বাচন, মন্ত্রিসভা এবং নিজের পরিকল্পনা নিয়ে জাগো নিউজের মুখোমুখি হন। ‘দুর্নীতি রোধে সরকার জিরো টলারেন্স’ উল্লেখ করে রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় যে চমক দেখিয়েছেন, তার প্রতিফলন দেশবাসী কাজের মাধ্যমে দেখতে পাবেন। দীর্ঘ আলোচনায় জামায়াত এবং বিচার ব্যবস্থার প্রসঙ্গও গুরুত্ব পায়। দুই পর্বের সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো আজ

জাগো নিউজ : প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। এরপর মন্ত্রিসভাতেও ঠাঁই পেলেন। কী বলবেন এ অর্জন নিয়ে?

আরও পড়ুন >> আইন মন্ত্রণালয় এখন ঠুঁটো জগন্নাথ

রেজাউল করিম : আমার এ অর্জন জনগণের। মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শতভাগ আস্থা রাখছেন বলেই আমি নির্বাচিত হতে পেরেছি।

সব নির্বাচিত প্রতিনিধির কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে। আমি মনে করি, সরকার এবং আমার নিজের চ্যালেঞ্জগুলো অভিন্ন।

আমার মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদফতর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ সব প্রতিষ্ঠানকে আরও গতিশীল এবং স্বচ্ছ করতে চাই।

জাগো নিউজ : আপনি স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন। এ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দফতরের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। দুর্নীতি রোধে কতটুকু চ্যালেঞ্জ নিতে পারবেন বলে মনে করেন?

রেজাউল করিম : দুর্নীতির অভিযোগ আমাদের কাছেও আসছে। এ নিয়ে অনেক মুখরোচক কথাও শোনা যায়। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরই সবাইকে স্পষ্ট বলেছি, আমি কোনো অনিয়ম, দুর্নীতিকে বরদাশত করব না। দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলেই প্রমাণ সাপেক্ষে নজিরবিহীন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জাগো নিউজ : এর আগের মন্ত্রীরাও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন, পারেননি। বরং অভিযোগ মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও…

রেজাউল করিম : আমি দুর্নীতিমুক্ত করার চ্যালেঞ্জ নেবই। আমি গতানুগতিক কাজে বিশ্বাসী নই। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

জাগো নিউজ : উন্নয়নের সঙ্গে ‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন’ কথাটিও এখন সামনে আসছে। শহুরে উন্নয়ন নাগরিক জীবনকে অস্বস্তিতে ফেলছে…

রেজাউল করিম : অন্যরা কী করেছেন, তার দায় আমার নয়। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরই বলেছি, কোনো অপরিকল্পিত উন্নয়ন হবে না। অনিয়মের মাধ্যমে কোনো অবকাঠামো যদি শুরু হয়ে থাকে তাহলে সেগুলোও আমি খতিয়ে দেখব। যদি তা বন্ধ করতে হয়, আমি অবশ্যই তা করব। সে সাহস এবং দৃঢ়তা আমার আছে।

জাগো নিউজ : খেলার মাঠ দখল হচ্ছে। পার্কের জায়গাও উধাও। ব্যক্তির পাশাপাশি সরকারি অব্যবস্থাপনাও এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। আপনার কী বক্তব্য?

আরও পড়ুন >> দেশে এখনও পরিপূর্ণ আইনের শাসন বাস্তবায়ন হয়নি

রেজাউল করিম : সর্বসাধারণের জন্য কোনো খেলার মাঠ এবং পার্ক যদি দখল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই সে সব উদ্ধার করব। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে। সব অন্যায় ও দুর্নীতির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স।

চিত্তবিনোদনের জন্য পার্ক ও খেলার মাঠ একটি সমাজের মানুষের জন্য অতি জরুরি। কোনো মহলের স্বার্থের কারণে যদি নাগরিকের অধিকার হরণ হয়, তা উদ্ধারের জন্য যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার তা নেয়া হবে।

জাগো নিউজ : উন্নয়নের অব্যবস্থাপনায় অন্যান্য মন্ত্রণালয়, দফতরও সম্পৃক্ত। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতাও এর জন্য দায়ী…

রেজাউল করিম : আমি মনে করি, কোনো মন্ত্রণালয় বা দফতর আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে কাজ তার ব্যবস্থাপনায় আমাদেরই সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়ার কথা। সংশ্লিষ্টরা সহায়ক হিসেবে থাকবে। ঠিক অন্যদের বেলায় গণপূর্ত সহায়ক হবে। কিন্তু কেউ কারও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, এমনটি করার কথা নয়।

jagonews

এটি বুঝতে পারলে সমন্বয় এমনিতেই হবে। এর জন্য বিশেষ কোনো অনুকম্পা থাকবে না।

জাগো নিউজ : নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অভিজ্ঞ, জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের সরিয়ে দেয়ায় সমালোচনাও হচ্ছে…

রেজাউল করিম : যারা আগে ছিলেন তারা চমৎকারভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আমরা এসেছি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আস্থার মধ্য দিয়ে। তার এ আস্থা বাস্তবে রূপ দেয়া আমাদের কর্তব্য। আমরা আমাদের নিষ্ঠা ও সততা দিয়ে আস্থার প্রতিফলন ঘটাতে পারব বলে মনে করি।

মন্ত্রিসভায় আমরা যারা নতুন এসেছি, আমরা একেবারে আনকোরা বা আনাড়ি নই। জাতীয় নেতা তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় যখন প্রথম সদস্য হন, তখন তার বয়স ছিল ২৭ বছর। আমার বয়স এখন ষাটের কোঠায়। মন্ত্রিসভায় নতুন যারা আসেন তাদের অভিজ্ঞতা থাকে না। তবে শুরুর অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের চেয়ে বেশি, এটি বিশ্বাস করতেই পারি।

জাগো নিউজ : এবারে দুই-তৃতীয়াংশ নতুন মন্ত্রী। আপনি কি মনে করেন এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ কোনো বার্তা দিলেন?

রেজাউল করিম : এখন তারুণ্যের বাংলাদেশ। তারুণ্যদীপ্ত মন্ত্রিসভা করার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতিকে বার্তা দিলেন যে, অধিক কর্মস্পৃহা ও গতিশীলতা নিয়ে সরকার মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকছে।

সিনিয়র মন্ত্রীদের অনেকের বয়স ৭০ পার হয়েছিল। তারা চিরদিন আমাদের মাঝে থাকবেন না। নতুনদের জায়গা না দিলে নেতৃত্বের ঘাটতি থেকে যায়। প্রধানমন্ত্রী টিম লিডার থেকে নতুনদের প্রশিক্ষিত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। আমি মনে করি, এ মন্ত্রিসভা পূর্বের যেকোনো মন্ত্রিসভা থেকে অধিক গতিশীল হবে।

জাগো নিউজ : এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের প্রধান অন্তরায় কোন বিষয়টিকে মনে করছেন?

আরও পড়ুন >> দেশ মানুষ ও বিচার বিভাগের কল্যাণেই আইন প্রণয়ন

রেজাউল করিম : আমি সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি রোধে গুরুত্বারোপ করব। আমি দায়িত্ব নিয়ে প্রথম দিনেই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসেছি।

আমি তাদের বলেছি, শেখ হাসিনা পরিশ্রমী এবং সৎ হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী। সততায় তিনি শীর্ষে। তার মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়ে আমরা দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স। আমরা কোনোভাবেই দুর্নীতিকে বরদাশত করব না। দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন, আমরা তার টুঁটি চেপে ধরবই। হয়তো একটু সময় লাগতে পারে।

জাগো নিউজ : এক্ষেত্রে কোনো প্রতিকূলতা আসতে পারে কিনা?

রেজাউল করিম : দুর্নীতিবাজরাই আমাদের প্রতিবন্ধকতা। তারা নানাভাবে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন। সুবিধাভোগী হাউজিং সেক্টরে, গৃহায়নে, রাজউকে যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তারা আমাদের কাজের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

কিন্তু আমরা জানি, এ বাধা কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়। আমরা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সৎ ও স্বচ্ছ কর্মধারা অব্যাহত রাখব।

এএসএস/এনডিএস/এমএআর/আরআইপি

আরও পড়ুন