ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

২২তম অধিবেশনে যাননি ১০ এমপি

সিরাজুজ্জামান | প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০১৮

সদ্য শেষ হওয়া সংসদের ২২তম অধিবেশনে যাননি ১০ জন এমপি। ৯ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ কার্যদিবস চললেও তারা একদিনের জন্যও হাজির হতে পারেননি। এমপিদের জন্য সংসদ লবিতে রাখা ডিজিটাল স্বাক্ষর (কস্পিউটারের মাধ্যমে স্বাক্ষর) ও হাজিরা বইয়ের স্বাক্ষর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

সূত্র জানায়, অধিবেশনকালে সদস্যদের উপস্থিতির গড় ছিল ২৪৩ জন। ৩৪৯ জন (মৃত্যুজনিত কারণে একটি আসন শূন্য রয়েছে) এমপির সবচেয়ে চেয়ে বেশি উপস্থিত ছিল যথাক্রমে ২৯০ জন। সংসদ অধিবেশন শুরুর দিন ৯ সেপ্টেম্বর এই উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়। আর সবচেয়ে কম উপস্থিতি ছিল ১১ সেপ্টেম্বর। এদিন ২০১ জন এমপি সংসদের বৈঠকে অংশ নেন।  

এ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), ওমর ফারুক চৌধুরী (রাজশাহী-১), শেখ হেলাল উদ্দীন (বাগেরহাট-১), আমানুর রহমান খান রানা ( টাংগাইল-৩), এ কে এম ফজলুল হক (শেরপুর-৩), সুকুমার রঞ্জন ঘোষ (মুন্সিগঞ্জ-১), সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী (ফরিদপুর-২), আমিনা আহমেদ (মহিলা আসন-৩৪), বেগম রহিমা আখতার (মহিলা আসন-৩৬) এবং জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭) অনুপস্থিত ছিলেন।

সংসদের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগের আমানুর রহমান খান রানা (টাংগাইল-৩) নিজ দলের নেতাকে হত্যার দায়ে দীর্ঘদিন ধরে জেলে আছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জেলে রয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭)। অন্যদিকে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। আর গুরুতর অসুস্থ জনপ্রশাসনমন্ত্রী ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি সংসদ থেকে ছুটি নিয়েছেন এই অধিবেশনে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদবিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, এমপির প্রধান কাজই হলো সংসদে যাওয়া আর আইন প্রণয়ন করা। কিন্তু তা যদি যথাযথভাবে পালন করা না হয় তাহলে জনগণের টাকার অপচয় হয়। 

এদিকে ডিজিটাল স্বাক্ষর-সংক্রান্ত কম্পিউটার ক্রাশ করায় ২১তম অধিবেশনের উপস্থিতি-অনুপস্থিতির তালিকা পাওয়া যায়নি।

২০তম অধিবেশনে যাননি ৩৫ এমপি

জানা যায়, জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে ৩৫ জন এমপি যাননি। ৮ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ কার্যদিবস চলা ওই অধিবেশনে গড়ে ২৭৯ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরুর দিন সর্বোচ্চ ২৫৪ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন। আর সর্বনিম্ন ১৯৬ জন উপস্থিত ছিলেন শেষের দিন। এছাড়া ৩৫ কার্যদিবসের দীর্ঘ ১৯তম অধিবেশনেও যেতে পারেননি ১১ জন এমপি।

২০তম অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ২৮ এমপি অনুপস্থিত ছিলেন। দলটির ভিআইপিদের মধ্যে এই তালিকায় জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১), শিল্পীমন্ত্রী আমির হোসেন আমু (ঝালকাঠি-২), সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীও (ফরিদপুর-২) রয়েছেন।

আর জাতীয় পার্টির অনুপস্থিত ছিলেন ৫ জন এমপি। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাও ছিলেন। এছাড়া একজন স্বতন্ত্র এমপিও অনুপস্থিত ছিলেন। আর খুনের মামলার আসামি হয়ে জেলে থাকায় সংসদে যেতে পারেননি আমানুর রহমান খান রানা (টাংগাইল-৩)।

এমপিদের এই অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদ নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, সংসদের অধিবেশনের শেষ দিন প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এই অধিবেশনেও তারা বক্তব্য রেখেছেন। অথচ সেই দিন সর্বনিম্ন উপস্থিতি ছিল। এতেই প্রমাণিত হয় এমপিরা সংসদবিমুখ।

২০তম অধিবেশনে যাননি যারা

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, শিল্পীমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ছাড়াও ২০তম অধিবেশনে আওয়ামী লীগের মো. দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২), হুইপ ইকবালুর রহিম, (দিনাজপুর-৩), আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), মো. শিবলী সাদিক (দিনাজপুর-৬), মো. ইসরাফিল (নওগাঁ-৬), আ. মজিদ মন্ডল (সিরাজগঞ্জ-৫), ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১), শেখ হেলাল উদ্দীন (বাগেরহাট-১), মীর মোস্তফা আহমেদ রবি (সাতক্ষীরা-২), আলী আজম (ভোলা-২), নাজমুল হাসান (কিশোরগঞ্জ-২), সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯), মো. জাহিদ আহসান রাসেল (গাজীপুর-২), সিমিন হোসেন রিমি (গাজীপুর-৪), নিজাম উদ্দিন হাজারী (ফেনী-২), মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী (নোয়াখালী-৪), দিদারুল আলম (চট্টগ্রাম-৪), এম আবদুল লতিফ (চট্টগ্রাম-১১), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৩), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (পার্বত্য খাগড়াছড়ি), বেগম মনোয়ারা বেগম (মহিলা আসন-১৭), ফিরোজা বেগম চিনু (মহিলা আসন-৩৩), মিসেস আমিনা আহমেদ (মহিলা আসন ৩৪), বেগম রহিমা আখতার (মহিলা আসন-৩৬) অনুপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মো. মশিউর রহমান রাঙ্গা ছাড়াও এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭), লিয়াকত হোসেন খোকা (নারায়ণগঞ্জ-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), সেলিম উদ্দিন (সিলেট-৫), বেগম রওশন আরা মান্নান (মহিলা-৪৭) অনুপস্থিত ছিলেন। আর অনুপস্থিত থাকা স্বতন্ত্র এমপি হলেন তাহজীব আলম সিদ্দীকি (ঝিনাইদহ-২)।

১৯তম অধিবেশনে অনুপস্থিত ১১ এমপি

চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি শুরু হওয়া ১৯তম অধিবেশন চলে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ৩৫টি। বছরের দীর্ঘ এই অধিবেশনেও ১১জন এমপি যেতে পারেননি। এই অধিবেশনে গড়ে ১৯৩ জন উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশন শুরুর দিন সর্বোচ্চ ২৫৫ জন এমপি উপস্থিত ছিলেন। আর ১১ জানুয়ারি সর্বনিম্ন ১৪১ জন উপস্থিত ছিলেন। এ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ৬ জন, জাতীয় পার্টির ৪ জন ও স্বতন্ত্র একজন এমপি অনুপস্থিত ছিলেন।

যারা অনুপস্থিত ছিলেন

এ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪), আ. মজিদ মন্ডল (সিরাজগঞ্জ-৫), এস এম মোস্তফা রশিদী (খুলনা-৪), আমানুর রহমান খান রানা (টাংগাইল-৩), সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (কিশোরগঞ্জ-১) ও হাজী মো. সেলিম ( ঢাকা-৭) অনুপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির এম এ হান্নান (ময়মনসিংহ-৭), বেগম সালমা ইসলাম ( ঢাকা-১) লিয়াকত হোসেন খোকা (নারায়ণগঞ্জ-৩) এবং এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫) অনুপস্থিত ছিলেন। আর স্বতন্ত্র এমপি উষাতন তালুকদারও এই অধিবেশনে যাননি।

সংসদে গরহাজির সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান হুইপ আসম ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য সংসদের চেয়ে এই সংসদ বেশি কার্যকর। এমপিদের উপস্থিতিও তুলনামুলকভাবে ভালো। তবে অনেকেই অসুস্থ ও বিদেশ থাকায় সংসদে আসতে পারেন না। এটা বড় কোনো বিষয় নয়। 

প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের ২৭৪ জন, জাতীয় পার্টির ৪০ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ৭ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ৬ জন, তরিকত ফেডারেশনের ২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ২ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনএফ) ১ জন এবং ১৬ জন স্বতন্ত্র এমপি রয়েছেন। ২৬ কুড়িগ্রাম-২ আসনের জাতীয় পার্টি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরীর মারা গেলেও সেই আসনে উপ-নির্বাচন হবে না। এজন্য আসনটি শূন্য রয়েছে।

এইচএস/এসএইচএস/পিআর

আরও পড়ুন