সরকারের আচরণেই ঠিক হবে আন্দোলনের রূপরেখা : ড. কামাল
>> সমাবেশে বাধা দিলে সরকারকে মূল্য দিতে হবে
>> বিএনপি জামায়াতকে ছাড়লেই আলোচনা ফলপ্রসূ
>> এস কে সিনহার বই হাতে পেলে মন্তব্য করব
আমরা আন্দোলনের মধ্যেই আছি। ঐক্য গঠনের মধ্য দিয়েই আন্দোলনের প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহৎ ঐকমত্য গড়ে তোলার নামই আন্দোলন। আমরা এখন তাই করছি। সরকারের আচরণেই ঠিক হবে আন্দোলনের রূপরেখা। বলছিলেন, গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, আগামীকালের (২২ সেপ্টেম্বর) সমাবেশে বাধা দিলে সরকারকে কঠোর মূল্য দিতে হবে। আশা করি, সরকার জনগণের আবেগ বুঝতে পারবে। আমাদের দাবি মেনে নেবে।
ঐক্য, সমাবেশ, আন্দোলন প্রসঙ্গ নিয়ে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন ফের মুখোমুখি হন জাগো নিউজ-এর।
আগামীকালের সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা মূলত একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। আমরা এ কারণেই জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছি। সমাবেশ নিয়ে সরকারের অবস্থান কী হবে, তা আমরা জানি না। আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার দেয়নি। পরে মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিই। আমরা শহীদ মিনারে ঘোষণাপত্র পাঠ করতে চেয়েছিলাম। সরকার বাধা দিল। আসলে সরকার কী করতে চাইছে, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার না। আমরা চাই সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।
‘সমাবেশে বিশেষ কোনো বার্তা থাকবে কীনা’ এর জবাবে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য নির্বাচন সুষ্ঠু করা। এর জন্য যা করার তাই করবো। আমরা নির্বাচনে অংশ নেব একটি ভালো পরিবেশের মধ্য দিয়ে।
জাতীয় ঐক্যের ঘোষণাপত্রে নতুনত্ব কী, এমনটি জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ঘোষণপত্রে আমরা একটি রাষ্ট্র এবং সরকার কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের সংবিধান ও আইন আছে। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা হলে কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয়। আমরা তাই বলতে চেয়েছি।
যুক্তফ্রন্টে প্রার্থী নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। আমরা যৌথ আলোচনার মধ্য দিয়েই প্রার্থী চূড়ান্ত করবো- বলছিলেন বিশিষ্ট এই আইনজীবী।
জোটে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি আমাদের সঙ্গে দেখা করবে। আমরা আলোচনা করেছি। তারা জামায়াতকে ছেড়ে আসলেই আলোচনা ফলপ্রসূ হবে। তারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে যে, জামায়াত বিএনপির সঙ্গে নেই। মনে রাখতে হবে, জামায়াতের নিবন্ধন নেই। প্রতীক নেই। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের বোঝাপড়া হবে, আমাদের না।
আরও পড়ুন >>সুষ্ঠু নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন অনিবার্য
আসন বণ্টনের ব্যাপারে ড. কামাল বলেন, নির্বাচনে আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়নি। বাম জোটকেও আমরা পাশে চাইছি। যুগপথ আন্দোলন নিয়ে আমরা আলোচনা করছি এখন। জোট যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে, তেমনি যৌথ আান্দোলনও গুরুত্ব পাচ্ছে। আলোচনা সাপেক্ষেই আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটব। সময়ই সব বলে দেবে। কিছুটা অপেক্ষা তো করতেই হয়।
ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, মেজর (অব.) মান্নান সংবাদ সম্মেলনে যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, সবার আসার কথা ছিল না। বি চৌধুরী সাহেব অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে পারেনি। ২২ তারিখে সমাবেশে অনেককেই দেখতে পাবেন।
আরও পড়ুন >>বিএনপির সঙ্গে জোট গঠন এখনও চূড়ান্ত হয়নি
বামফ্রন্টের সমাবেশে পুলিশি হামলার নিন্দা জানিয়ে এই রাজনীতিক বলেন, বাম ফ্রন্টের ঘেরাও কর্মসূচিতে সরকার যেভাবে বল প্রয়োগ করেছে, তা খুবই দুঃখজনক। নির্বাচনের আগে সরকারের এমন অসহিষ্ণু আচরণ ভালো ফল বয়ে আনবে না। আমরা আশা করছি, আমাদের সামনের কর্মসূচিতে সরকার সহনশীল আচরণ দেখাবে।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রকাশিত বই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সিনহার বই হাতে পেলে মন্তব্য করব।
এএসএস/জেএইচ/পিআর