ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

উন্নয়নের সঙ্গে অপচয়ও হচ্ছে

মামুন আব্দুল্লাহ | প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ০৪ জুন ২০১৮

আ হ ম মুস্তফা কামাল, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মুস্তফা কামাল এখন পর্যন্ত তিনবার এমপি হিসেবে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২০১৪ সালে তৃতীয় মেয়াদে কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কুমিল্লা জেলার (দক্ষিণ) আহ্বায়কেরও দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।

বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদের ধারাবাহিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশে এক ইঞ্চিও জায়গা পাওয়া যাবে না, যেখানে এ সরকারের উন্নয়নের ছাপ লাগেনি। তবে উন্নয়নের সঙ্গে অর্থের অপচয় হচ্ছে, ডিসটরশনও (সূচক নির্ণয়ে কিছুটা বিকৃতি) হচ্ছে। অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণে এমন হচ্ছে। এখন অভিজ্ঞতা বেড়েছে। আগামীতে ক্ষমতায় আসলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের পাশাপাশি অপচয়ও রোধ করা সম্ভব হবে।’

planmp-2

‘ভালো কাজ করলে জনগণ আবারও ভোট দেয়’- এমন বিশ্বাসও রাখেন মন্ত্রী।

সম্প্রতি জাগো নিউজ’র সঙ্গে কথা হয় অভিজ্ঞ গাণনিক এ রাজনীতিকের। কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে দেশের চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়া, আসন্ন বাজেট, অর্থনীতির ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন খাতের সংস্কার নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মামুন আব্দুল্লাহ। দুই পর্বের ধারাবাহিকের প্রথমটি থাকছে আজ।

জাগো নিউজ : ক্ষমতার পালাবদলের কথা শোনা যায়। এ অবস্থায় আপনারা আগামী নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : ক্ষমতায় কে আসবে সেটা নির্ধারণ করবে জনগণ। আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি কাজ নিয়ে, যাচ্ছি উন্নয়ন নিয়ে। খালি হাতে তো যাচ্ছি না। এদেশে আমরা যা করেছি, আগের কোনো সরকারই কোনো সময় তা করতে পারেনি।

planmp-2

জাগো নিউজ : আপনার কি মনে হয় আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসতে পারবে?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : বাংলাদেশের এমন এক ইঞ্চি জায়গাও পাওয়া যাবে না, যেখানে
এ সরকারের সময় উন্নয়নের ছাপ লাগেনি। অনেকে বলেন, আমরা সুশাসন দিতে পারিনি। এটা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে আমরা উন্নয়ন দিয়েছি। এদেশের নিয়ম হলো, সরকার পরিবর্তন হলে সব বদলে ফেলা হয়। নামও বদল হয়। এ সরকারের আমলে ১৫শ প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে সাড়ে তিনশটি মেগা প্রকল্প। ক্ষমতার বদল হলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সেটা জনগণ হতে দেবে না।

জাগো নিউজ : উন্নয়নের নামে অর্থ অপচয় হচ্ছে। আপনিও সেটা মানবেন…

আ হ ম মুস্তফা কামাল : আমি মনে করি, আমাদের উন্নয়নে অপচয় হচ্ছে। ডিসটরশনও (সূচক নির্ণয়ে কিছুটা বিকৃতি) হচ্ছে। এটি শুধু আমাদের আমলেই নয়, অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। তবে আমরা আবার ক্ষতায় আসলে এ ধরনের অপচয়, ডিসটরশন আর রাখব না। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করব।

আমাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি ছিল। এখন অভিজ্ঞতার আলোকে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারব। আমাদের তো সময় দিতে হবে। সময় না দিলে কীভাবে উন্নয়ন হবে?

planmp-2

আমাদেরও ভুল থাকতে পারে। তবে আমার বিশ্বাস, জনগণ আমাদের আবার ফিরিয়ে আনবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ভালো কাজ করলে জনগণ আবার ভোট দেয়। এখন জনগণকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। জনগণ ভালো সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করি। কারণ তারা জানে ক্ষমতার পালাবদল হলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। যেসব মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, তা
পিছিয়ে গেলে দেশও কয়েকশ বছর পিছিয়ে যাবে। এটা জনগণ ভালো করেই জানে।

জাগো নিউজ : বিনিয়োগ ঘাটতিও রয়ে গেছে। কর্মসংস্থান কাঙ্ক্ষিত হারে হচ্ছে না। এ বিষয়ে কী বলবেন?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : আমাদের সমস্যা ছিল। এজন্য এতদিন বিনিয়োগ হয়নি। এটার জন্য যেসব সমস্যা ছিল সেটা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমাদের এখন আর গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি নেই। বিদ্যুৎ নিতে আমরা নিজেরাই আমন্ত্রণ জানিয়েছি বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে। শিগগিরই আমরা দুই হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছি। দেশে নতুন করে ১০০টি ইকোনমিক জোন করা হচ্ছে। এর পেছনে দুটি উদ্দেশ্য আছে। একটি হলো- যত্রতত্র শিল্পকারখানা গড়ে ওঠা রোধ করা, যা হবে এই ইকোনমিক জোনে হবে। অপর উদ্দেশ্য হলো- শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ করা। যে অঞ্চলে এই ইকোনমিক জোন হবে, সে অঞ্চলের মানুষ সেখানে কাজ করতে পারবে। এতে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে। বেকার সমস্যার সমাধান হবে।

জাগো নিউজ : প্রকল্প অনুমোদন হয়, সময়ও নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু সময় মতো কাজ শেষ হয় না। অনেক পুরনো এ অভিযোগ। সমাধান কবে হবে?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : আমরা আমাদের কাজের গতি ফিরিয়ে এনেছি। এজন্য শুধু দেশীয় অর্থায়নে নয়, বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর প্রকল্পেও ভালো অগ্রগতি হয়েছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে ২০২০ সালে ভারতকেও ছাড়িয়ে যাব আমরা। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এটি এসেছে।

planmp-2

জাগো নিউজ : এজন্য বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : আমরা আমাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। এখন প্রয়োজন এর প্রতি নজর দেয়া। আমরা সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাব। আমাদের সক্ষমতার জায়গাগুলো ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে। সেজন্য আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। এখন বিশ্ব অর্থনীতিতে হাঁটার সময় এসেছে আমাদের।

জাগো নিউজ : বিশ্ব অর্থনীতিতে হাঁটার কথা বললেন। এজন্য প্রস্তুতি কেমন?

আ হ ম মুস্তফা কামাল : আমাদের অসম্ভব সক্ষমতার জায়গা হলো মানবসম্পদ। সেটাই আমরা এখনও সম্পদে রূপান্তর করতে পারিনি। এখনও দেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম। ২০৬১ সালেও দেশের ৬০ ভাগ মানুষ কর্মক্ষম থাকবে। এ লম্বা সময় আমরা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সুবিধা (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট) ভোগ করতে পারব।

কর্মক্ষম হলেও আমাদের অধিকাংশ যুবশক্তি এখনও মডার্ন টেকনোলজি সম্পর্কে ততটা জানে না। তারা জানে না টেনো টেকনোলজি, বায়ো টেকনোলজি কী? কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, মেটারিয়াল সাইন্স সম্পর্কে জানে না, এমনকী ব্লক চেইন সম্পর্কেও জানে না। ইদানিং রোবটিক সাইন্স সম্পর্কে কিছুটা জানছে। এসব সমস্যা সমাধানে আমরা এবারের বাজেটে গুরুত্ব দেব।

এমএ/এমএআর/জেআইএম

আরও পড়ুন