ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

মিশন ‘খুলনা টু গাজীপুর’

ফজলুল হক শাওন | প্রকাশিত: ০১:২৭ এএম, ২৩ মে ২০১৮

খুলনার পর এবার আওয়ামী লীগের টার্গেট গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দিকে। এ সিটি কর্পোরেশনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হতে চায়।

ক্ষমতাসীন দলের মূল লক্ষ্য হলো- খুলনার মতো গাজীপুরেও জয়ের জন্য স্থানীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা। কোনোভাবেই যেন এ ঐক্যে ফাটল না থাকে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের বিশ্বাস, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে জাহাঙ্গীরের পক্ষে কাজ করলে এবং মাঠে নামলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনেও জয় সুনিশ্চিত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মনে করেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় নেতাদের ঐক্যটা অত্যন্ত জরুরি। গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বিষয়টি তুলে ধরেন।

রাজনৈতিক আলোচনা উঠলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গাজীপুরের বিষয়ে আমি কোনো সমস্যা, কোনো ঝামেলা বা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দলীয় কোনো কোন্দল যাতে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কে প্রার্থী এটা বাদ দিয়ে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সকলকে ঐক্যবব্ধভাবে কাজ করতে হবে।

স্থানীয় সব এমপি ও নেতাকর্মী যাতে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবব্ধভাবে কাজ করে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক ও প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিকে বিশেষ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে গত রোববার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা গাজীপুরে সমন্বয় সভা করেছেন। সভায় যোগ দেয়া এক আওয়ামী লীগ নেতা জাগো নিউজকে জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে সমন্বয় সভার অন্যতম দিক ছিল গাজীপুরে দলীয় কোন্দল নিরসন। এছাড়া এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয়লাভের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কী কী কৌশল অবলম্বন করলে গাজীপুরবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন বা নৌকার জোয়ার উঠবে- সেসব কৌশল ঠিক করা।

সমন্বয় সভায় নেতারা বলেন, খুলনার জনগণ সরকারের উন্নয়নের কারণে ভোট দিয়েছেন। সরকারের সাফল্য তৃণমূল জনগণের মাঝে পৌঁছানো হয়েছে বলে নৌকার বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। তাই বর্তমান সরকারের উন্নয়নের বার্তা গাজীপুরের জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের জন্য নৌকার কোনো বিকল্প নেই।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা এবং সারা দেশে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গাজীপুরের নেতাদের নির্দেশ দেন।

সমন্বয় সভায় উপস্থিত থাকা আওয়ামী লীগের অপর এক নেতা জাগো নিউজকে বলেন, খুলনার চেয়ে গাজীপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বেশি বেগ পেতে হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খুলনার তালুকদার খালেক একজন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা। এর আগে তিনি খুলনার মেয়র ছিলেন, এমপি ছিলেন। মেয়র থাকাকালে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তিনি অনেক কাজ করেছেন। এছাড়া সেখানে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা কোনো বিরোধ ছিল না। কিন্তু গাজীপুরের বিষয়টি একেবারেই আলাদা। এখানে প্রার্থী নতুন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলও আছে। যে কারণে দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা পর্যন্ত চেষ্টা করছেন এখানকার কোন্দল মেটানোর। এসব কারণে বেগ পেতে হবে গাজীপুরে।

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ মনে করে দলত্যাগী, পরীক্ষিত ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ- এমন কাউকে মনোনয়ন দিলে তাকে বের করে আনা সহজ হতো। স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান সবুজ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানত উল্লাহ নির্বাচনে জাহাঙ্গীরের পক্ষে কাজ করলে বিজয় ছিনিয়ে অনা সম্ভব হবে।

গাজীপুরে সমন্বয় সভা করে আসা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেকোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্থানীয় নেতাকর্মীদের গুরুত্ব অনেক বেশি। কেন্দ্র থেকে আমরা যা পারব না স্থানীয় নেতারা তা পারবেন। কারণ তারা সেখারকার ভোটার। তাদের পরিবারের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজন, সবারই ভোট আছে। সে কারণে স্থানীয় নেতারা যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকেন আমরা তার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি।’

দলটির অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে উন্নয়ন করতে পারে, সেটা দেশের মানুষ জানে। মানুষ এটাও জানে যে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হলে এলাকার উন্নয়ন হবে, মানুষ কিছু পাবে। এ কারণে সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই ভোট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘জনমত জরিপ করে খুলনা ও গাজীপুরে প্রার্থী দেয়া হয়েছে। খুলনায় আমরা বিজয়ী হয়েছি, গাজীপুরেও জয়ের আশা করছি।’

এফএইচএস/এমএআর/বিএ

আরও পড়ুন