ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রশ্নে আ.লীগের ‘না’

ফজলুল হক শাওন | প্রকাশিত: ০৭:১৫ পিএম, ০৫ মে ২০১৮

সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী অক্টোবরেই নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। বিএনপিসহ কয়েকটি দল ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার’র দাবি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এ ধরনের সরকার প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষনেতার সঙ্গে জাগো নিউজ’র কথা হয়। এ বিষয়ে তারা স্রেফ ‘না’ বলেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষায়, ‘সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেভাবেই অর্থাৎ সরকারের অধীনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির দাবি, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন একটি সহায়ক সরকার গঠন করে তার অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এটা না করে নির্বাচনে গেলে জনগণ তা মানবে না।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা চালু করতে হবে। ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং ভোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ শেখ হাসিনার অধীনে কখনই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’

গত বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে বলেন, ‘নির্বাচন হচ্ছে একটি দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। কোন পার্টি নির্বাচন করবে, কোন পার্টি নির্বাচন করবে না- এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। একজনের দলীয় সিদ্ধান্তের ওপরে আমি তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না যে, তোমাদের নির্বাচন করতেই হবে। না করলে ধরে নিয়ে যাব জেলে- এটা বলব?’

সংবিধানের বিধান অনুসারে, বিদ্যমান সরকার ক্ষমতায় থাকতেই পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দিলেও সরকারের ওপর এর প্রভাব পড়বে না। সংবিধানের ৫৭ (৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোনোকিছুই অযোগ্য করিবে না।’

সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘এর অর্থ হচ্ছে যিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত স্বপদে বহাল থাকবেন। অর্থাৎ এ বিধান অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বপদে বহাল রেখেই নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করবে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তার সরকারের মন্ত্রিসভার ক্ষেত্রেও সংবিধানের একই বিধান প্রযোজ্য হবে।’

বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, দশম সংসদ নির্বাচনের আগে যেভাবে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করে নির্বাচনকালীন সরকার করা হয়েছিল, এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও তাই করা হবে। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের সেই নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় আমন্ত্রণ জানানোর কোনো সুযোগ নেই।’

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নেই। আর সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকার নামে কোনো বিধানও নেই। বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হলে শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেই আসতে হবে।’

‘কোনো শর্ত দিয়ে বা ছাড় দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে হবে, তার কোনো প্রয়োজন নেই’- যোগ করেন তিনি।

অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপির জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। দেশে দল আরও আছে। একদল নির্বাচনে না এলেও নির্বাচন যথানিয়মেই হবে। তবে, বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের নির্বাচনে আসতেই হবে।’

সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু এক প্রশ্নের জবাবে জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংবিধানে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো বিধান নেই। নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকার স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করে যাবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে তার দায়িত্ব পালন করবে। সুতরাং বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

এফএইচএস/এমএআর/এমআরএম/আরআইপি

আরও পড়ুন