ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

তোরণের ছেঁড়া ব্যানারে ঝুলছেন মন্ত্রীরা

সায়েম সাবু | প্রকাশিত: ১০:০২ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

৩১টি বাঁশের খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা তোরণটি কবে তৈরি করা হয়েছে, তা মনে নেই সড়কের পাশের দোকানীদের। তোরণের জন্য আগে বিএনপির’র দখলে ছিল জায়গাটি। পট পরিবর্তনের পরেই দখলে নেয় সরকার দলীয় সংগঠন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।

সময় গড়িয়েছে এক দশক প্রায়। এই সময়ে তোরণে খুঁটির জোর বেড়েছে বহুগুণ। আগে এত্ত বড় ছিল না তোরণটি। প্রতি বছর ব্যানারের আয়তন ও ওজন বাড়ছে। আগে কাপড়ের ওপরে হাতে লেখা ব্যানার টাঙানো হতো। এখন রঙিন ঝকঝকে ডিজিটাল, প্যানাপ্লেক্স ব্যানারে শোভা পায়। বাঁশের সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন।

toron-(3)

এতো আয়োজন, এতো রূপ তোরণটিতে! তবুও বেরসিক ঝড়-বাতাস রক্ষা দেয় না। ব্যানারের রূপ ঝলসানোতে ধুলাবালিও কম যায় না। তবে বিশেষ দিবস এলেই ফের ঝলক মারে তোরণে।

রাজধানীর অন্যতম প্রবেশ মুখ মোহাম্মদপুর-বসিলা ব্রিজ। কেরানীগঞ্জকে নগরের সঙ্গে সংযুক্তকারী সড়কটিতে লাখো মানুষের যাতায়াত নিত্যদিন। কিন্তু আটকে যেতে হয় মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডেই। ব্যস্ততম এই সড়কের কোথাও কোথাও হাঁটুসম ধুলার স্তর। ধুলার আধাঁর একেবারে বসিলা ব্রিজ পর্যন্ত। ধুলি-ময়লার আবরণ ভেদ করে দিনে গাড়ি চললে মনে হয় ধোঁয়াশায় ঢাকা, আর রাতে মনে হয় কুয়াশার চাদরে মোড়া। সরু সড়কের দু’পাশে শত শত গাড়ি পার্কিংয়ে রেখে আরও সরু করা হয়েছে। এক কিলোমিটার সড়কে ডজন খানিক গতিরোধক গতি এমনিতেই ঝিমিয়ে দেবে যে কারোরই। কোনো জনপ্রতিনিধি কোন যুগে পা রেখেছিলেন সড়কে, তারও চিহ্ন মিলবে না এর বেহাল দশায়।

toron-(3)

ঠেকে ঠেকেই বসিলা ব্রিজ পার হওয়া। কিন্তু ব্রিজের দক্ষিণ মুখে এসেই একেবারে থমকে যেতে হল। বৈশাখের আগে থেকেই নাকি এখানে থমকে যাচ্ছে যাত্রীরা। ব্যস্ততম এই সড়কেই বিশাল আকৃতির পাশাপাশি কয়েকটি তোরণ। সড়কের মধ্যখানেও ডজন খানিক বাঁশের খুঁটি পোতা। দু’পাশে বাঁশের ছোড়াছুড়ি। হেলানো খুঁটিও কয়েকটি যুক্ত তাতে। যেন ঠিক সড়কের মাঝখানে মাছ ধরার চড়কা জাল পাতা। আর তোরণের ব্যানার বাতাসে ছিঁড়ে একেবারে ফাতা ফাতা। ছেঁড়া ব্যানারের কিছু অংশ নিশানার মতো আকাশ পানে উড়ছে। কিছু অংশ সড়ক ছুঁই ছুঁই করে দুলছে। ছেঁড়া ব্যানারে ঝুলছে স্থানীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ছবিও। আছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ছবিও। আর ছেঁড়া ব্যানারে ঝুলে থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবিটি একেবারেই বেমানান ঠেকছিল।

toron-(3)

ব্যানারে ঢাকা ব্যানার। একটি ছিঁড়ে আরেকটির খানিক অংশ বেরিয়ে আছে। কোনোটিতে ১৫ আগস্টের শোক, কোনোটিতে বিজয় দিবস-স্বাধীনতা দিবস ঈদ বা নববর্ষের শুভেচ্ছা বাণী। যেন চেতনার ফাঁক দিয়ে আরেক চেতনার উঁকি দেয়া। সৌন্দর্যহানিকর এবং চলাচলে বিঘ্নকারী তোরণগুলো দেখার যেন কেউ নেই। আশপাশের লোকজনও তাতে হাত দেয়ার সাহস পান না।

toron-(3)

কথা হয় সড়কের পাশে খান ইলেকট্রনিক্সের দোকানদার মামুনের সঙ্গে। বলেন, অনেকেই এখানে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। আর কেমন দেখাচ্ছে, তা তো নিজ চোখেই দেখতে পারছেন। আমরাও দেখে যাই। নেতাদের ছবি দিয়ে তোরণ করা। কার সাহস আছে সেখানে হাত দেয়া!

এএসএস/জেএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন