সবার চোখ খালেদার রায়ে
কী হবে বৃহস্পতিবার! কার পক্ষে যাবে রায়? সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সত্যিই কি সাজা হবে? সাজা হলে, তার ধরন কী হতে পারে? এমন সব প্রশ্ন নিয়েই জাতি তাকিয়ে আছে খালেদার রায়ের দিকে।
রায়ের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই টানটান উত্তেজনা জনমনে। সময় ঘনিয়ে আসতেই সেই উত্তেজনার পারদ যেন ঊর্ধ্বমুখী। রায়কে ঘিরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে। রাজনীতির মাঠে রায় নিয়ে আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনও। নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করতেই সরকার এ মামলায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে, এমন অভিযোগ বিএনপির নেতাকর্মীদের।
অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলছে, খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি বিশেষ রাজনীতি করতে চাইছে।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এ রায়কে কেন্দ্র করে এখন উত্তেজনা মিডিয়াপাড়াতেও। রায়ের খবরেই মিডিয়ায় চলছে শত আয়োজন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ঝড় বইছে রায় নিয়ে। রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমর্থকরা তর্কেও শামিল হচ্ছেন।
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় প্রহর গুণছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরাও। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। রুটিন মোতাবেক পরীক্ষা শেষ হবে কি-না, তা নির্ভর করছে এ রায়ের ওপর। রায়কে ঘিরে ফের আন্দোলন হবে কি-না, হরতাল-অবরোধে ফের জনজীবন ব্যাহত হবে কি-না এমন প্রশ্ন সব মহলে।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা বলছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলই। আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়েই ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার রায় পর্যবেক্ষণ করবে বলে দল দু’টির নেতারা বলে আসছেন আগে থেকেই। রাজপথে আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচিও ঘোষণা করেনি আওয়ামী লীগ-বিএনপি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে দেশজুড়ে। এত নিশ্চিয়তাই যেন এখন অনিশ্চিয়তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তল্লাশি, গ্রেফতার আর দু’দলের নেতাদের পরস্পর হুমকিমূলক আলোচনাই উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
৮ ফেব্রুয়ারি প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রায় দেখব, এরপর সিদ্ধান্ত নেব। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সমাধানের পক্ষে আমরা।
সরকারই পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চাইছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রায় তো সরকারের কথাতেই হচ্ছে, না হলে আগাম অবস্থান নেবে কেন আওয়ামী লীগ। সরকার শত শত নেতাকর্মীকে আটক করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে। সময় বুঝেই সরকারের সব কর্মকাণ্ডের জবাব দেয়া হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আইন এবং আদালতের বিষয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে বিএনপি এ রায় নিয়ে রাজনীতি করত না। খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তার পক্ষে দেশসেরা আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে প্রতিহত করার কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি উল্লেখ তিনি বলেন, দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপি যদি এ রায়কে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করতে চায়, তাহলে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবে আওয়ামী লীগ।
এএসএস/জেএইচ/বিএ/এমএস