আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পছন্দ আবদুল হামিদ
পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, বর্তমান রাষ্ট্রপতির ওপর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অগাধ আস্থা রয়েছে। সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম এবং সব ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করে যাওয়ার জন্যই তার প্রতি এ আস্থা।
দলীয় সূত্র জানায়, মহাজোটের অংশ ও বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেবে না বলেই মনে করছে আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে সমঝোতার জন্য তারা জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথাও হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলের নেতারা আরও জানান, পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো আলোচনা হয়নি। তবে দলের শীর্ষ নেতারা যেহেতু আবদুল হামিদকে পছন্দ করেন তাই তাকে দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তাব করা হবে। কোনো কারণে তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে বিকল্প হিসেবে ক্ষমতাসীন দল জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নাম প্রস্তাব করা হবে। তিনিও যদি অপারগতা প্রকাশ করেন তাহলে পরবর্তী পছন্দ সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও সর্ব শেষ শেখ রেহানার নামও আলোচনায় রয়েছে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, এখনই রাজনীতি থেকে অবসরে যেতে চান না সৈয়দ আশরাফ। তাই রাষ্ট্রপতি হতে রাজি নন তিনি। তবে তাকে আবারও রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার জন্য বলা হবে।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী সূত্র জানায়, নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কারণ এ রাষ্ট্রপতি অধিনেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এমন কাউকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হবে না যাতে আগামীর পথচলায় আওয়ামী লীগের অসুবিধা হয়। এ কারণে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না আওয়ামী লীগ। দলীয় এমপিদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপতি পদটি দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। তাই এ পদে সরকার এমন কাউকে নির্বাচন করবেন যিনি দলমত নির্বিশেষে সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকেন এবং সব মহলে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি দল যাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচন করবেন তাতে মহাজোটের শরীক হিসেবে জাতীয় পার্টির আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগ কথা বলবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে এ নেতা বলেন, রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রকাশ্য ভোট দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোট গণনাও হবে প্রকাশ্যে। এরপরই নির্বাচিত হবেন দেশের একুশতম রাষ্ট্রপতি। তবে, একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ শে এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন মো. আবদুল হামিদ। তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ শে এপ্রিল। এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৮ ফেব্রুায়ারি অনুষ্ঠিত হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
এফএইচএস/এএইচ/আইআই