অভাব আমার মেয়েটিকে অন্ধ করে দিল
আলো পড়লেই বাম চোখটি জ্বল জ্বল করত পাঁচ বছর বয়সী শিশু ইলমার। তখন অবশ্য তার বয়স ছিল তিন বছর। এরপর দিনমজুর বাবা মেয়েকে নিয়ে আসেন রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারেন ইলমার চোখের পেছনের অংশে টিউমার হয়েছে। এতে দিন দিন চোখটি তার নির্দিষ্ট স্থান থেকে সামনের দিকে বেরিয়ে পড়ছে।
চিকিৎসকরা ইলমার বাবা রেজাউল করিমকে জানান, দ্রুত অপারেশন করে তুলে না ফেললে চোখটি বের হয়ে আসবে। মেয়ের ভালোর জন্য রাজি হয়ে যান বাবা। এরপর ২৫ দিন সেখানে চিকিৎসাধীন থেকে ইলমার অপারেশন সম্পন্ন হয়। চিকিৎসক ওই সময় ইলমার বাবাকে জানান, তার অন্য চোখের পেছনেও টিউমার হয়েছে, যে ওষুধ দেয়া হচ্ছে সেটা নিয়মিত না খেলে একই সমস্যা অন্য চোখের ক্ষেত্রেও হবে। ঢাকা থেকে ফিরে মেয়েকে কিছুদিন ওষুধ খাওয়ানো হয়। এতে কিছুদিন ভালো ছিল ইলমা। ওষুধের দাম সাধ্যের বাইরে হওয়ায় একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায় ওষুধ কেনা। আস্তে আস্তে শুরু হয় ইলমার চোখের সমস্যা।
দুই মাস হলো চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী ইলমার ডান চোখটিতেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অর্ধেক বেরিয়ে এসেছে চোখটি। এবারও তাকে ঢাকার একই হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা জানান ভারত ছাড়া এ চিকিৎসা সম্ভব নয়। এজন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন।
শনিবার রাতে জাগো নিউজকে এভাবেই বলছিলেন ইলমার বাবা দিনমজুর রেজাউল করিম। তার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার তৈলটুপি গ্রামে।
রেজাউল করিম জানান, স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করে ইলমা। কিন্তু চোখের পেছনে যে তার টিউমার হয়েছে সেটা জেনেছি অনেক পরে। অভাব আমার মেয়েটিকে অন্ধ করে দিল। ওই সময় ঠিকমতো ওষুধ খাওয়ালে হয়তো আজ এ অবস্থা হতো না। চিকিৎসক তাকে ভারতে নিয়ে যেতে বলেছেন। কিন্তু আমার দুটি মাটির ঘর ছাড়া কিছুই নেই।
তিনি জানান, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভালোই কাটছিল সংসার। কিন্তু গত তিন বছর ধরে মেয়ের যন্ত্রণা আমাদের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভারতে নিয়ে চোখে কর্ণিয়া সংযোজন করলে আমার মেয়ে আবারও দেখতে পাবে। কিন্তু কোথায় পাব এত টাকা। চোখের সামনে সন্তানের যন্ত্রণায় জর্জরিত আমি।
ইলমাকে কেউ সহায়তা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারবেন তার বাবার ০১৭২৩-৩১৮১৯১ নম্বরে।
এমএএস/আরআইপি