বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের প্রধান শত্রু তেলাপোকা!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের বড় শত্রু তেলাপোকা। তাই তেলাপোকা নিধনে ১ জুন থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে বিশেষ ফাইটিং গ্রুপ নামিয়েছেন। এ গ্রুপের সদস্যরা প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি বেড তন্ন তন্ন করে তেলাপোকা খুঁজে বের করে নিধন করা শুরু করেছেন।
ডা. কামরুল হাসান বলেন, তেলাপোকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তেলপোকার উপদ্রবে রোগীরা ঘুমাতে পারছেন না। বিছানা, জানালা ও মেঝেতে অসংখ্য তেলাপোকা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাবার ও ফলমুল ঢেকে রেখেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।
সোমবার স্বাস্থ্য সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাংবাদিকদের সঙ্গে `শিক্ষা, গবেষণা, সেবা ও মানুষের প্রত্যাশা` শীর্ষক মুক্ত আলোচনাকালে ঠাট্ট্রাচ্ছলে ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, ২৪ মার্চ ভিসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তেলাপোকার কারণে রোগীদের দুর্ভোগের খবরটি বারবার তার কানে এসেছে। তাই ১ জুন থেকে বিশেষ স্কোয়াড নামানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কী করা উচিত তা নিয়ে আলোচনাকালে বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় এখনো জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী শিক্ষা, গবেষণা ও সেবা প্রদান করতে পারেনি। তিনি বলেন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা অন্যতম অনুসঙ্গ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৫৪টি গবেষণা পরিচালিত হলেও অর্থাভাবে অনেক সময় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।
তিনি ভারতের স্বনামধন্য অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স-এর ১৫শ’ শয্যার হাসপাতালের বাজেট ১৬শ’ কোটি টাকা উল্লেখ করে বলেন, সমসংখ্যক বেডের হাসপাতালে সরকারিভাবে মাত্র ১৫০ কোটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রাপ্ত আয় থেকে ব্যয় মেটানো হচ্ছে। মোট বাজেটের শতকরা ৮০ ভাগ বেতনভাতায় চলে যায়। আর্থিক ও স্থান সংকুলানের অভাব থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
আলোচনা সভায় প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. রুহুল আমিন মিয়া, সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, কমিউনিটি অপথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধক্ষ্য অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান, রেজিস্ট্রার আসাদুল ইসলাম, ডেন্ট্রিস্টি ফ্যাকাল্টির ডিন আলী আজগর মোড়ল ও হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভুইয়া উপস্থিত ছিলেন।
ভিসি জানান, মুক্তিযোদ্ধারা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক ডেস্ক খোলা হয়েছে। দর্শনার্থী নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পাস চালু হয়েছে। বিভিন্ন অনুষদের ডিন সাংবাদিকদের নেতিবাচক প্রতিবেদনের পাশাপাশি ইতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরার অনুরোধ জানান।
হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম সভাপতি তৌফিক মারুফের পরিচালনায় স্বাস্থ্য সাংবাদিকদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা ও উন্নয়ন সম্পর্কে ফোরাম সাধারণ সম্পাদক বদরুদ্দোজা সুমন, প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল, ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের, জাগো নিউজের বিশেষ সংবাদদাতা মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, চ্যানেল আইয়ের জান্নাতুল বাকেয়া কেকা, দৈনিক ইনকিলাবের মাইনুল হাসান সোহেল, সংবাদের সেবিকা দেবনাথ, নয়াদিগন্তের হামিম কবীর, সময় সংবাদের প্রসূন আশীষ, বনিক বার্তার আইনাল হোসেন ও আলোকিত বাংলাদেশের নেছারউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
# ঢাকা মেডিকেল : দূর হলো পঁচা লাশের গন্ধ
বিএ/আরআইপি