ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ওইদিন মারা গেলেই ভালো হতো

ভৈরব | প্রকাশিত: ০৫:৫৪ পিএম, ২০ আগস্ট ২০১৭

শরীরে স্প্লিন্টারের ব্যথা আর যন্ত্রণা নিয়ে আজও দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন ভৈরবের নাজিম উদ্দিন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত জনসভায় দুর্বৃত্তদের গ্রেনেড হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন।

শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা আর যন্ত্রণা নিয়ে ১৩ বছর ধরে বেঁচে আছেন নাজিম। এই ব্যথা আর কষ্ট এতই নিদারুণ যে, ওইদিন মারা গেলেই ভালো হতো বলে জাগো নিউজের কাছে মন্তব্য করেন তিনি।

ভৈরবের নিজ বাড়িতে গত শনিবার অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে তিনি আরও জানান, পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটছে তার। শরীরে এখনও অসংখ্য স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। আরও কয়েকটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন কিন্তু আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে সেটি আর হয়ে উঠছে না। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা অন্ন তুলে দেয়াই দায় হয়ে পড়ছে তার জন্য।

ঘটনার দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২৪ জন। আহত হন অসংখ্য নেতাকর্মী। ওইদিন ভৈরবের কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের আকবরনগর গ্রামের মফিজ উদ্দিন মেম্বারের ছেলে আওয়ামী লীগকর্মী নাজিম উদ্দিনও প্রিয় নেত্রী আইভি রহমানের আহ্বানে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে যোগ দেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই সময় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি খোলা ট্রাকের ওপর নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখছিলেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা গ্রেনেড হামলা চালায়। ওই হামলায় গুরুতর আহত হন আইভি রহমান।

প্রিয় নেত্রীকে রাস্তায় লুটিয়ে পড়তে দেখে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যান নাজিম উদ্দিন। ঠিক সেই সময় আরেকটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হলে তিনিও গুরুতর আহত হন।

jagonews24গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের পিয়ারলেস হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিন মাস সেখানে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন তিনি।

ভারতের চিকিৎসকরা বলেছিলেন, শরীরে থাকা বাকি স্প্লিন্টারগুলো অপসারণ করতে আরও দু-একটি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কিন্তু অর্থের অভাবে এখনও সেটি করাতে পারেননি। ফলে প্রতিনিয়ত নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে তাকে।

নাজিম উদ্দিনকে এখনও নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে সহায়-সম্বল সবকিছুই হারাতে হয়েছে তাকে। নিজের চিকিৎসার ব্যয় মেটাবেন নাকি পরিবারের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেবেন- এ চিন্তায় দিন পার হয় তার।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকার এখন আর আমাদের খবর রাখে না। ১৩ বছর অতিবাহিত হতে চলল এখন পর্যন্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার শেষ হয়নি।

‘বেঁচে থাকতে সেদিনের হামলায় জড়িতদের বিচার দেখে যেতে পারব কি-না জানি না, তবে তাদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেন হয়, সেই দাবি রইল সরকারের প্রতি’ বলেন নাজিম উদ্দিন।

আসাদুজ্জামান ফারুক/এমএআর/এআরএস/আরআইপি

আরও পড়ুন