ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

১০ টাকায় চোখের আলো দিচ্ছে মাওলা বক্স হাসপাতাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জবি | প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৭

‘দাও আলো, দাও জীবন’ এমন স্লোগানে পুরান ঢাকার হাজারও মানুষের চোখে আলো ফিরিয়ে দিচ্ছে মাওলা বক্স সরদার দাতব্য চক্ষু হাসপাতাল। দিন যত যাচ্ছে এ হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা তত বাড়ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মাওলা বক্স সরদার নামের এক পঞ্চায়েত প্রধান পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জ এলাকার দানবীর ছিলেন। জীবদ্দশায় তিনি বহু মানুষের উপকার করেছেন। ১৯৮৭ সালের ১৫ জানুয়ারি মৃত্যুর আগে তিনি ছেলে ও দুই মেয়েকে মানবতার কল্যাণে তার সম্পত্তি ব্যবহারের কথা বলে যান।

বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণে মাওলা বক্সের ছেলে মোহাম্মদ আজিম বক্স পুরান ঢাকার ২৪, মনিমোহন দাস লেনে নির্মাণ করেন মাওলা বক্স মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। ট্রাস্টের অধীনে মানবতার সেবায় চারটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো দুস্থ ও অসহায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ প্রকল্প।

এ প্রকল্পের আওতায় ২৫ শয্যাবিশিষ্ট একটি চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। এরপর একজন চিকিৎসকের অধীনে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯২ সাল থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের পরিধি আরও বেড়েছে। মাত্র ১০ টাকায় আধুনিক ও উন্নতমানের সেবা পেয়ে বেজায় খুশি চিকিৎসা নিতে আসা দুস্থরা।

jabi

শুরু থেকেই আগত রোগীদের চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা নিশ্চিতকল্পে যখন যে ইকুইপমেন্টের প্রয়োজন পড়েছে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। অপারেশনের রোগী পাঁচদিন হাসপাতালে রাখা হত। ওই রোগীর জন্য পাঁচদিনে খাবার সময়মতো নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াতেন হাসপাতালের মালিকের মা।

এমনও হয়েছে বলে জানা যায়, হাসপাতালে খাবার আনার সময় কোনো খাবার নষ্ট হলে মালিকের মা আবার রান্না করে পাঠাতেন। প্রথম দিকে আগত রোগীকে ফ্রি ওষুধ দিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে ওষুধ দেখা যেত ওই রোগী অন্য ফার্মেসিতে বিক্রি করে দিতেন। ২০০৪ সালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফ্রি ওষুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়। ওই সময় থেকে ১০ টাকায় টিকিটের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দিতে শুরু করে।

প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রোগীর সিরিয়াল দেয়া হয়। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। সম্প্রতি শিশুদের জন্য নতুন আরেকটি বিশেষ শাখা চালু করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল শিপটে ২০০ জন রোগী এ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ বিশেষ শাখায় তুলনামূলক কম খরচে সেবা নিচ্ছেন রোগীরা।

jabi

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই রোগীরা ভিড় করছেন। ২০০ জন হলে সিরিয়াল নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। অপারেশনের খরচ তুলনামূলক কম বলে জানান রোগীরা। পাশাপাশি রোগীর চলাফেরা করার জন্য রয়েছে হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় বাগান।

সোমবার কবি নজরুল কলেজের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আজাদ আলাপকালে জাগো নিউজকে বলেন, আমি কিছুদিন আগে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে চক্ষু দেখিয়েছি। কিন্তু আমার মাথা ব্যথা না কমায় ভুগছিলাম। পরে জানতে পারি পুরান ঢাকায় ২৫ শয্যার চক্ষু হাসপাতাল রয়েছে। তাই এসেছি চক্ষু চিকিৎসক দেখাতে।

বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিম বক্স জাগো নিউজকে বলেন, বাবার স্বপ্ন পূরণে কাজ করছি। যতদিন পারি মানবসেবায় কাজ করে যাব। রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে বলে কখনও ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের অনুদান এ হাসপাতালের জন্য নেয়া হয় না। হাসপাতালটি মাওলা বক্স সরদার মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অর্থায়নে চলে। আমি তার রক্ষক মাত্র।

এসএম/বিএ/জেআইএম

আরও পড়ুন