আরও আছে সেলফি, সরকার থ্রি, কারান-অর্জুন টু
বাহুবলী-২, হুররম বা সারারা। কেবল এসব নামেই থেমে নেই এবারের ঈদের পোশাকের নাম। আরও রয়েছে সরকার থ্রি, কারান-অর্জুন টু, মাত্রা, সেলফি, গ্যালাক্সি, ডিপ এঞ্জেল, পাঞ্চু এমন সব বাহারি নাম।
যদিও একটা থেকে আরেকটা পার্থক্য করা বেশ কঠিন। তবে রাজধানীর দোকানগুলোতে মেয়েদের বাহারি সব পোশাকের গায়ে লাগানো রয়েছে হাল ফ্যাশনের এসব নাম। বছরের অন্য সময় নাম ছাড়াই এসব পোশাক বিক্রি হলেও ঈদ আসলেই নতুন সিনেমা, সিরিয়াল বা উল্লেখযোগ্য চরিত্রের নাম অনুসারে পোশাকের এমন নামকরণ করা হয়।
ক্রেতারা অবশ্য একে বেশি বিক্রির কৌশল হিসেবেই দেখছেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, সিনেমা, সিরিয়াল দেখে ক্রেতাদের মধ্যে এ ধরনের পোশাক পরার প্রবণতা থেকেই পোশাক তৈরি ও বিক্রির ক্ষেত্রে নামকরণের বিষয়টি মাথায় রাখা হয়।
রাজধানীর উত্তরার নর্থ টাওয়ারের লেডিস কর্নারে দেখা যায়, পুতলের গায়ে সাজানো প্রতিটি পোশাকে ভিন্ন ভিন্ন নামের ট্যাগ লাগানো রয়েছে। দোকানটির স্বত্বাধিকারী মো. আল আমিন বলেন, ‘আমরা সাধারণত ভারতের পোশাক বিক্রি করি। সেখান থেকেই এসব নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তাছাড়া এসব নাম থাকলে ক্রেতা আকর্ষণও বাড়ে’ বলেন তিনি। তার দোকানের এসব পোশাকের দাম ২ থেকে ৬ হাজারের মধ্যে বলে জানান তিনি।
দোকানটি থেকে একটু এগুতেই ইন্ডিয়ানা নামের দোকান। পুতুলের গায়ে বাহারি পোশাক সাজানো থাকলেও কোন নাম ট্যাগ নেই। তবে জিজ্ঞেস করতেই উপরে উল্লেখ করা নামগুলো একটানা বলে গেলেন স্বত্বাধিকারী সোহেল আহমেদ।
তিনিও মূলত ভারতের পোশাকই বিক্রি করেন। জাগো নিউজকে বলেন, ভারত থেকে আনা হয় বলে দামটা একটু বেশি। বাহুবলী-টু, কারান অর্জুন-টু, সরকার থ্রি, সারারার মতই ফ্লোর টাচও চলছে। তার দোকানে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকার ফ্লোর টাচ রয়েছে বলেও জানান সোহেল আহমেদ।
নর্থটাওয়ারের ফ্যাশন ডটকমে কেনাকাটা করছিলেন তানজিয়া হুসাইন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বিক্রেতারা বিভিন্ন নামের কথা বলছে ঠিকই কিন্তু নাম দেখে আসলে পোশাক কেনা হয় না। পোশাকের মান, ডিজাইন, সর্বোপরি দামের উপর কেনাকাটা অনেকটাই নির্ভর করে। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে মিল রেখে এবার ঈদের জন্য তিনি লেহাঙ্গা ধরনের পোশাক কিনবেন বলে জানান।
তবে উত্তরার কুশল টাওয়ারের নিউ কামিজ ফ্যাশনের মালিক মো. মনির বলেন, নাম যাই হোক এবার ঈদে লেহাঙ্গা, গাউন আর ফ্লোর টাচের চাহিদা বেশি। এসব পোশাকের ডিজাইন একটু এদিক ওদিক করে ভিন্ন ভিন্ন নাম দেয়া হয়েছে।
ক্রেতারাও বিক্রেতাদের এসবি ‘চালাকি’ সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত আঁচ করা গেল। মেয়ের জন্য জামা কিনতে আসা মুরশিদা খাতুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দোকানে গিয়ে পোশাকের নাম শুনে মাথা গুলিয়ে যায়। একই পোশাকের নাম একেক দোকানে একেক রকম। তাই নাম শুনে নয় পোশাক দেখেই কাপড় কিনতে চাই।’
তবে তার ১৩ বছর বয়সী মেয়ের আবার এসব নামের প্রতি দুর্বলতা আছে বলে জানান মুরশিদা। অভিযোগের সুরে বলেন, ‘ছোটদের মন কাড়তেই এমন বাহারি সব নাম রাখা হয়। এটা বিক্রি বাড়ানোর জন্য দোকানদারদের চালাকি বৈ কিছু নয়।’
এ অভিযোগের সত্যতাও মিলল। ফ্যাশন ডটকমে যে পোশাকটির গায়ে ডিপ এঞ্জেল নামের ট্যাগ লাগোনো আছে, পাশের দোকান ইন্ডিয়ানার বিক্রেতারা সেই একই ডিজাইনের পোশাকের নাম বলছেন পাঞ্চু। জানতে চাইলে ফ্যাশন ডটকমের একজন বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা ভারতের যে ফ্যাশন হাউস থেকে কিনেছি সেখান থেকে এই নামটি দেয়া ছিল। আমরাও সেভাবেই লিখেছি। অন্যরা যদি ভিন্ন নামে চালায় তাতে আমরা কি করতে পারি।’
জেপি/ওআর/পিআর