ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ২৭ মে ২০১৭

আসন্ন ২০০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা কিছুটা রেহাই পাচ্ছেন। তাদের করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে।

বর্তমানে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় থাকলে তাকে কর দিতে হয় না। আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে এ সীমা বাড়িয়ে দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ২৫ হাজার টাকা বাড়ানো হচ্ছে। এর ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

অব্যাহতভাবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়াসহ মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে এবার করমুক্ত আয়সীমা দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, টানা দুই অর্থবছর এ অবস্থা শেষে এবার তাতে পরিবর্তন আসছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ালে মধ্যবিত্তের ওপর নতুন করে চাপ বাড়বে। একই সঙ্গে আরও নিম্ন আয়ের মানুষ করের আওতায় আসবে। তাই করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হলে সেটা সামাজিক ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে যৌক্তিক হবে। এছাড়া বাজেটে সাধারণ মানুষের কথা আরও যত্নসহকারে বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন তারা।

এ বিষয়ে এনবিআরের করনীতি বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনা করেই করমুক্ত আয়সীমা আরও ২৫ হাজার টাকা বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। এর ফলে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে সামান্য নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এবং সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের আবাসিক মিশনের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় আনা উচিত। বছর বছর না বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির সূচকভিত্তিক স্থায়ী পদ্ধতির মাধ্যমে এ সীমা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হয়। এতে অল্প আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

এ অর্থনীতিবিদের মতে, অল্প আয়ের মানুষের কাছ থেকে কর আহরণ করতে যে খরচ হয় এবং যে কর পাওয়া যায়, তাতে সরকারের পোষায় না। করমুক্ত আয়সীমা দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত রাখলে বেশি লোক করজালে ঢুকে পড়েন। কেননা মানুষের আয় বাড়লে তারা করের আওতায় চলে আসবেন। যেকোনো দেশের কর প্রশাসন চায়, করমুক্ত আয়সীমা যেন বেশিদিন স্থির রাখা যায়। অবশ্য এতে সমস্যাও আছে। যেমন বেশি লোক করের আওতায় ঢুকে পড়লে কর ব্যবস্থাপনায় বেশি জনবল দরকার হয়। এতে খরচ বাড়ে। আবার করমুক্ত আয়সীমার কিছুটা ওপরে থাকা করদাতাদের কাছ থেকে খুব বেশি করও পাওয়া যায় না।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ব্যক্তি দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা করমুক্ত আয়সীমা হলে আনুপাতিক হারে আগের মতোই করহার বসবে। পৌনে তিন লাখ টাকার পরের চার লাখ টাকা আয়ের জন্য ১০ শতাংশ, তার পরের পাঁচ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরের ছয় লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ, এরপরের ৩০ লাখ টাকার জন্য ২৫ শতাংশ এবং অবশিষ্টাংশের জন্য ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে।

তবে এবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বক্তৃতায় ভবিষ্যতে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির একটি স্থায়ী রূপরেখা দিতে পারেন বলেও জানা গেছে। সম্প্রতি বাজেট-সংক্রান্ত পরামর্শক সভায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে করমুক্ত আয়সীমা বছরে ১০ হাজার ডলার। বহু বছর তিনি এ স্তরের মধ্যেই কর দিয়েছেন। তিনি আগামী বাজেটে এমন একটি করমুক্ত সীমা নির্ধারণ করে দিতে চান, যাতে বহু বছর তা বহাল থাকে।

এমএ/এমএআর/আরআইপি

আরও পড়ুন