ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

বার্ন ইউনিটে গরমে কাতরাচ্ছেন রোগীরা

প্রকাশিত: ০৮:৫৮ এএম, ২৩ মে ২০১৭

রাজধানীসহ সারাদেশে বয়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। একই সঙ্গে কাঠফাটা রোদে জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। সুস্থ মানুষের পাশাপাশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদেরও। বাতাসের অভাবে গরমে কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দগ্ধ রোগীরা।

সরেজমিন ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, পুরুষ-মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

চিকিৎসকরা জানান, দগ্ধ রোগীদের শরীরে প্রাথমিকভাবে প্রচুর পানি ঢালতে হয়। এরপর ড্রেসিং করে রোগীকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে হয়। তাহলে দগ্ধ চামড়া শুকানোর সময় কষ্ট কম হয়।

এদিকে দেশের সর্ববৃহৎ বার্ন ইউনিটের ওয়ার্ডে কিংবা বারান্দায় কোথাও পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক পাখা নেই। স্বজনরা চার্জার ফ্যান কিনে রোগীদের জন্য বাতাসের ব্যবস্থা করেছেন।

ঢামেক বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয় তলার পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার ইউনিটে দেখা যায়, ১০টি বেডের বিপরীতে পাখা চলছে মাত্র চারটি। রুমে একটি এসি থাকলেও তা নষ্ট। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক কর্মকর্তা বলেন, এসি চলে কিন্তু ঠান্ডা বাতাস বের হয় না। তাই বন্ধ রাখা হয়েছে। ওয়ার্ডটিতে দগ্ধ রোগীদের অপারেশনের পর অবজারভেশনে রাখা হয়। তবে এখানে পর্যাপ্ত ঠান্ডা বাতাস থাকা আবশ্যক।

burn

বার্ন ইউনিটের তিন তলার ওয়ার্ডের বাইরের চিত্র আরও ভয়াবহ। পুরুষ ওয়ার্ডের ১৯ জন রোগীর মাথার ওপর ঘুরছে ১১টি পাখা। বাকিরা নিজস্ব টেবিল ফ্যান মাথার পাশের জানালায় বেঁধে বাতাসের ব্যবস্থা করেছেন।

একই তলার বারান্দাতেও এমন অবস্থা। মোট ২৭ জন রোগীর জন্য রয়েছে মাত্র ১১টি পাখা। মহিলা ওয়ার্ডের বাইরে থেকে শোনা গেল এক রোগীর আহাজারি। দেখা যায়, কেউ কাতরাচ্ছেন, কেউ ব্যাথায় কাঁপছেন। এ ওয়ার্ডেও রোগীর সংখ্যার তুলনায় বৈদ্যুতিক পাখার সংখ্যা অর্ধেক।

নীলফামারী থেকে এসে ঢামেক বার্ন ইউনিটিতে ৯৩ দিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৪ বছর বয়সী জুয়েল। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের তার দেহের ২০ ভাগ পুড়ে গেছে। শরীরে দুই ইঞ্চি মোটা ব্যান্ডেজ থাকায় তাকে সব সময় পাখার নিচে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তার। অথচ বার্ন ইউনিটের পুরুষ ওয়ার্ডে তার এবং পাশের বেডের রোগীর মাঝে মাত্র একটি পাখা। ফলে গরম থেকে বাঁচতে চার্জার টেবিল ফ্যান কিনেছেন তিনি। সঙ্গে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছেন স্বজনেরা।

বারান্দায় অবস্থানরত রাশেদুল ইসলাম নামে এক রোগীর স্বজন জীবন বলেন, গরমে আমরাই কাবু হয়ে যাচ্ছি, আর রোগীর তো মরার অবস্থা। হাসপাতালের বারান্দায় জায়গা দিয়েছে এটাই তো অনেক। নিজেদের মতো ফ্যান কিনে এনেছি। দেখি কতদিন গরম থাকে।

এ বিষয়ে ঢামেক বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল জাগো নিউজকে বলেন, গরমে দগ্ধ রোগীদের গা ঘেমে লবণ বের হয়, যা তাদের জন্য ক্ষতিকর। রোগীদের সব সময় ঠান্ডা অথবা স্বাভাবিক পরিবেশে রাখা উচিৎ। তবে বার্ন ইউনিটে ৩০০ বেডের বিপরীতে ৫৫০ জন রোগী ভর্তি। ফলে সবাইকে পর্যাপ্ত সেবা দেয়া কষ্টকর।

তবে যেসব রোগী গরমে কষ্ট করছেন তাদের স্যালাইন খাওয়ানোসহ নানা ধরনের সেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলমান এ দাবদাহ আগামী জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে। এছাড়া দেশের কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

এআর/এএস/আরএস/এমএআর/জেআইএম