রামপুরা-মেরাদিয়া সড়ক যেন মরণ ফাঁদ
রামপুরা-মেরাদিয়া সড়ক যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা এ সড়কে চলাচলকারীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এলাকাবাসী জানায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কজুড়ে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গর্তের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকে যাত্রীরা। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরও তখন যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খেতে হয়।
এছাড়া ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে চললেও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক থেকে পিচ উঠে গেছে। প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ সড়কটির অধিকাংশই খানাখন্দে ভরা। সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণের জন্য বড় বড় গর্ত খুঁড়ে রেখেছে ঢাকা ওয়াসা। ফলে বৃষ্টি হলে সড়কজুড়ে কাদা মাটি আর পানি মিলে-মিশে বিশ্রী অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।
রামপুরা টেলিভিশন ভবন থেকে বনশ্রী বি ব্লক পর্যন্ত সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে পিচ দেখা যায় না। সড়কের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি বড় বড় গর্ত রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, চিটাগাং রোড, ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ, রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, কাকরাইল, মগবাজারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে।
এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী আঁচিল পরিবহনের চালক মোরশেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগ কে শোনে? সিটি কর্পোরেশন কি দেখছে না? মেরাদিয়া হাট থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত ভোগান্তি। ছোট্ট এই পথটি অতিক্রম করতে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি।
বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থী তাসফিয়া ইমতি জাগো নিউজকে জানায়, আগে রিকশা ভাড়া ২০-২৫ টাকা নিতো। কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় এখন ৫০ টাকা দিলেও আসতে চায় না। গত কয়েকদিন আগে গর্তে পড়ে রিকশার চাকা ভেঙে যায়। আমিও পড়ে যাওয়ায় সব বই ভিজে গেছে। পরে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে বলে জানায় ইমতি।
বনশ্রী বি ব্লকের স্বপ্ন সুপার মার্কেটের সামনে রয়েছে বড় একটি গর্ত। এর পাশেই সিটি কর্পোরেশনের ময়লার বড় বড় দুটি কনটেইনার। একদিকে ময়লার দুর্গন্ধ অন্যদিনে গর্তে আটকে থেকে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পাহাতে হয়।
এদিকে সড়কের বেহাল দশা দেখে ছোটখাটো যানবাহন, মাইক্রোবাস, মোটরসইকেল ও রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন বিকল্প রাস্তা হিসেবে বনশ্রীর বিভিন্ন সংযোগ সড়ক ব্যবহার করছে। এতে আবাসিকের বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলামকে ফোন করলেও পাওয়া যায়নি। তবে ডিএনসিসির অঞ্চল-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত হোসেন বলেন সড়কটি সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত নয়।
এমএসএস/এএইচ/পিআর