ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

পণ্যের মতো চাইনিজ ডাক্তারও ‘ভেজাল’!

প্রকাশিত: ০২:৩২ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

বিদেশের যেকোনো মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে দেশে ফিরে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রাকটিস বা চাকরির জন্য রেজিস্ট্রেশন কোয়ালিফাইং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত সাত বছরে চীন, রাশিয়া, ইউক্রেন, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইউএই ও অস্ট্রেলিয়া থেকে পাস করে এসে যোগ্যতা নির্ধারণী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন অনেকে। তাদের মধ্যে চীনের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা চিকিৎসকের সংখ্যাই বেশি।

বিএমডিসি সূত্রে জানা গেছে, চীন থেকে পাস করা চিকিৎসকরা সংখ্যায় যেমন বেশি তেমনি তাদের মধ্যে অকৃতকার্যের সংখ্যাও বেশি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের রেজিস্ট্রেশন কোয়ালিফাইং পরীক্ষায় মোট ১৬১ এমবিবিএস চিকিৎসক অংশগ্রহণ করেন। এতে মাত্র ১৭ জন পাস করেন।

এর আগে এপ্রিল মাসের কোয়ালিফাইং পরীক্ষায় ৪৭ জনের মধ্যে মাত্র ১৭ জন পাস করেন। ফেল করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে চীন থেকে পাস করা চিকিৎসকের সংখ্যাই বেশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএমডিসির এক কর্মকর্তা কৌতুকচ্ছলে বলেন, চাইনিজ পণ্যের মতো চাইনিজ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা শিক্ষাবিষয়ক পড়াশোনায়ও ‘ভেজাল’ রয়েছে।

তিনি বলেন, সেখানে এমনও মেডিকেল কলেজ রয়েছে, যেখানে টাকা-পয়সা দিয়ে ভর্তি হয়ে একদিনও ক্লাস না করে এমবিবিএস পাসের সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।

তবে অন্য এক কর্মকর্তা ওই কর্মকর্তার বক্তব্যের একটি অংশের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করে বলেন, চীন থেকে পাস করা কিছু কিছু এমবিবিএস চিকিৎসকের জ্ঞানের পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। এ দেশের কোনো কোনো এমডি বা এমএস কোর্সের শিক্ষার্থীর চেয়ে তারা চিকিৎসা শিক্ষা বিষয়ে ভালো ধারণা রাখেন। পরীক্ষায় তারা অনেক ভালো নম্বর পান।

এ বিষয়ে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার ডা. জে এইচ বসুনিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি নির্দিষ্ট কোনো দেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসার মান নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, নিয়মানুসারে পরীক্ষায় পাস করে যারা যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারছেন তাদের রেজিস্ট্রেশন সনদ দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, ২০১১ সাল থেকে বছরে দুবার- এপ্রিল ও অক্টোবরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রি-ক্লিনিক্যাল ১০, প্যারা ক্লিনিক্যাল ২০ ও ক্লিনিক্যাল বিষয়ে ৭০ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পদ্ধতিতে (সত্যি/মিথ্যা) পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। এক ঘণ্টা ৪০ মিনিটের পরীক্ষায় পাস নম্বর ৬০।

কোয়ালিফাইং পরীক্ষা শুক্রবার

আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ভবনে রেজিস্ট্রেশন কোয়ালিফাইং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের পরীক্ষায় এমবিবিএসে ১৬৩ জন এবং ডেন্টাল কলেজ থেকে পাস করা চারজনসহ মোট ১৬৭ জন অংশগ্রহণ করবেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চীনের ১৩৬ জন, রাশিয়ার ১২, ইউক্রেনের সাত, ভারতের পাঁচ, মালয়েশিয়ার দুই, পাকিস্তানের দুই, মিসরের এক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়া থেকে পাস করা একজন চিকিৎসক রয়েছেন।

বিএমডিসি সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ পরীক্ষায় একটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের মধ্যে ছোট ছোট চারটি অংশে প্রশ্ন ছিল। ভুলের জন্য নেগেটিভ মার্কিং থাকায় বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী পাস তো দূরের কথা ১০০ নম্বরের মধ্যে মাইনাস নম্বর পান। শুক্রবারের পরীক্ষায় ১ নম্বরের ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটার নতুন নিয়ম হয়েছে।

এমইউ/এমএআর/আরআইপি

আরও পড়ুন