ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

ভাড়ার তালিকা টাঙানো নেই বাসে

প্রকাশিত: ০৮:৩১ এএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

রোববার থেকে লোকাল সার্ভিস হিসেবে চলাচল শুরু করা রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসগুলোতে রাখা হয়নি নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা। এতদিন বাসগুলোতে ভাড়ার তালিকা ঝুলিয়ে রাখা হলেও আজ থেকে সব বাস লোকাল চলার সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর অধিকাংশ বাসেই পাওয়া যায়নি ভাড়ার তালিকা।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) নিয়ম অনুযায়ী, নতুন নিয়মে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বড় বাসে ১ টাকা ৭০ পয়সা ও মিনিবাসে ১ টাকা ৬০ পয়সা। এছাড়া বড় বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা ও মিনিবাসে ৫ টাকা।

বিআরটিএর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরের প্রজ্ঞাপন অনুসারে ১৪১ পৃষ্ঠার তালিকায় পৃথক রুটের নির্ধারিত ভাড়ার কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে লেখা রয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা যাবে না।

বিআরটিএ ও পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ মিললে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। এজন্য ঢাকা মেট্রো এলাকায় চলাচলকারী বাসের ভাড়া নির্ধারণ করেছে রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটি।

কিন্তু নতুন নিয়মে বাসগুলো লোকাল হলেও যাত্রীদের সঙ্গে চিটিং করেই চলেছে সিটিং নামধারী বাসগুলো। মালিকপক্ষের দোহাই দিয়ে আগের নিয়মেই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া নিয়মানুযায়ী স্টপেজগুলো থেকে যাত্রী না নিয়ে গেট লক করে চলাচল করছে আগের সিটিং সার্ভিসের বাসগুলো। কিন্তু ভাড়া আদায়ে কোনো তালিকা দেখাচ্ছে না চালক-হেলপাররা।

vara

রোববার সকাল ৮টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত কল্যাণপুর, কলেজগেট, আসাদগেট, ফার্মগেট পর্যন্ত সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর কল্যাণপুর শিশুমেলা এলাকায় দেখা যায়, আগের সিটিং নিয়মে চলাচলকারী বাসগুলো দাঁড়িয়ে যাত্রী নিলেও দ্রুত আবার স্টপেজ ছেড়ে যাচ্ছে। মোহাম্মদপুর থেকে উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর, সাভার থেকে গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী, মিরপুর-১২ ও মিরপুর চিড়িয়াখানা রুট থেকে নারায়ণগঞ্জ ও গুলিস্তান-ডেমরা রুটে চলাচলকারী বাসগুলো আগের মতো যাত্রীদের থেকে ভাড়া আদায় করছে।

এছাড়া লাব্বাইক, ওয়েলকাম, ভূঁইয়া পরিবহন, তেঁতুলিয়া, স্বজন, তানজিল ও এভারেস্ট পরিবহন যাত্রীদের কাছ থেকে আগের মতো সিটিং সার্ভিসের ভাড়া আদায় করছে। কিন্তু নিয়মমতো কোনো ভাড়ার তালিকা নেই বাসে।

এ প্রসঙ্গে খাজাবাবা পরিবহনের হেলপার মনির জাগো নিউজকে বলেন, বাসে ভাড়ার তালিকা আছে, তবে তা কখনও টাঙানো হয়নি। কোনো যাত্রী দেখতে চাইলেই কেবল দেখানো হতো। নতুন নিয়মে সিটিং বাস এখন লোকাল হওয়ায় ভাড়া কমে গেছে। ফলে ভাড়ার তালিকা এখন যাত্রীরা দেখতে চাইছেন।

লাব্বাইক বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ভাড়ার তালিকা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বাসের ভিআইপি টিকিট চেকার বাশার বলেন, ভাড়ার তালিকা বাসেই টাঙানোর কথা। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ারও কথা নয়। বিষয়টি দেখছি।

vara

ওয়েলকাম বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি নজরে আনা হলে সংসদ ভবনের সামনে ওই বাসের টিকিট চেকার জনি বলেন, হেলপার অসদুপায়ে বেশি ভাড়া চেয়ে বসতে পারে। সেজন্য বাসের সব যাত্রীকে বলা হচ্ছে কেউ তালিকার বাইরে ভাড়া দেবেন না।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ বলেন, ভাড়া নির্ধারিত থাকবে। নির্ধারিত ভাড়ার তালিকাও থাকবে। সুতরাং অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। তবুও কোনো পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান বলেন, পরিবহন মালিকরা সম্মত হয়েছেস কোনো বাস এখন সিটিং চলবে না। কোনো বাস বেশি ভাড়া নিতে পারবে না। নির্ধারিত ভাড়ার যে তালিকা রয়েছে তা বাসে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। যাতে যাত্রীরা তালিকা দেখে ভাড়া মেটাতে পারেন।

তিনি বলেন, রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের কোনো অনুমোদন নেই। অননুমোদিত যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুধু সিটিং সার্ভিস বন্ধ নয়, যাত্রী হয়রানি রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানীর পাঁচটি স্থানে অভিযান চলবে। আসাদগেট, বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ডে সড়কের পশ্চিম পাশে, রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে, আগারগাঁওয়ে (আইডিবি ভবন), যাত্রাবাড়ী চাইপাই রেস্টুরেন্টের সামনে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। সপ্তাহে তিন দিন অভিযান চলবে বলে তিনি জানান।

জেইউ/বিএ/এসআর/জেআইএম

আরও পড়ুন