ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

সেই নবজাতককে বাঁচাতে চিকিৎসকদের মানবিক লড়াই

প্রকাশিত: ০৩:৫৮ পিএম, ০৪ এপ্রিল ২০১৭

‘এই একটু দ্রুত গিয়ে দেখ্ তো কোন বাচ্চাটা কাঁদে, আনিশা নাকি অন্য কেউ।’ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক নার্সকে ডেকে কোন্ নবজাতকটি কাঁদছে তা জানতে চান।

নার্স জানালেন, ম্যাডাম, আনিশাই কাঁদছে। চিকিৎসক দ্রুত দুধ খাওয়ানোর নির্দেশ দিলেন। দুধ মুখে দিতেই কান্না থামল তার। মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ১২টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের চোখে এ দৃশ্য ধরা পড়ে।

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, নবজাতক বিভাগের বিশেষ এ ইউনিটটিতে মোট ৩৫ নবজাতক চিকিৎসাধীন থাকলেও ওই একটি নবজাতকের প্রতি চিকিৎসক নার্স সবারই একটু বিশেষ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চিকিৎসক-নার্স জানান,  অন্য সব নবজাতকের পাশে তার বাবা-মা স্বজনরা থাকলেও ওই নবজাতকের পাশে কেউ নেই। তারাই এখন নবজাতকের একমাত্র স্বজন।

২৪ দিন আগে গত ১১ মার্চ  হতভাগ্য এ নবজাতক মেয়ে শিশুটিকে রাজধানীর শাহআলী থানা এলাকার ডাস্টবিনে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় এক যুবকের সহায়তায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেই নবজাতকটি এখনও  সম্পূর্ণ সুস্থ হয়নি। রক্তে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক সমস্যায় এখনও ভুগছে শিশুটি। জম্মের সময় মাত্র ১ হাজার ৭শ’গ্রাম ওজন নিয়ে জম্মানো শিশুটির ওজন তেমন বাড়েনি।

baby

তবে তাকে সুস্থ করে তুলতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক নার্সসহ সবাই গত ২৪ দিন আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে নবজাতক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মনিষা ব্যানার্জী জানান, নবজাতকটি আগামী সপ্তাহ নাগাদ সুস্থ হয়ে উঠবে বলে তারা আশা করেন।সম্পূর্ণ সুস্থ হলেই তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হবে।

তিনি  আরও জানান,  শিশুটির রক্তে ইনফেকশন রয়েছে। অনেক সময় খাবার ভালোভাবে হজম করতে পারে না। জম্মের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মেছে শিশু্টি। গত ২৪ দিনে তার ওজন তেমন বাড়েনি। তবে শিশুটিকে তারা সবাই মিলে সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

মনিষা জানান, শিশুটির অভিভাবক না থাকায় হাসপাতালের পরিচালকই এখন শিশুটির অভিভাবক। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার পর শিশুটিকে কোথায় পাঠানো হবে তা নির্ধারণ করবে পরিচালক। হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হতভাগ্য এই নবজাতককে অনেকেই দত্তক নিতে চাইছেন। অনেকে পরিচালকের কাছে দত্তক নেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে আবেদনও করেছেন। তবে শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদফতরে আজিমপুর শিশুমনি নিবাসে পাঠানো হতে পারে বলে জানান হাসপাতালের একজন দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এমইউ/জেএইচ/ওআর/এমএস

আরও পড়ুন