ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিশেষ প্রতিবেদন

কতটুকু প্রস্তুত হেমায়েতপুর?

প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৭

সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, হাজারীবাগে চালু সব ট্যানারি বন্ধ করতে হবে। ট্যানারিগুলো সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কতটুকু প্রস্তুত হেমায়েতপুরের এ শিল্প নগরী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চামড়া শিল্প নগরীতে কারখানা নির্মাণে চরম স্থবিরতা বিরাজ করছে। বেশির ভাগ কারখানাই নির্মাণাধীন। কাজ বন্ধ রয়েছে এমন সংখ্যাও কম নয়। কয়েকজন ট্যানারি মালিক কারখানা নির্মাণে শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু কাজ চলছে খুবই ধীরগতিতে। এ অবস্থায় সহসাই হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তর সম্ভব হবে কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

hemayetpur

সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরীতে সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ প্লটে ভবন নির্মাণাধীন। নিরাপত্তাকর্মীরা বলছেন, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। কাজ কবে শুরু হবে তারা তা জানেন না।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই শিল্প নগরীতে ৫২টি কারখানার ট্যানিং ড্রাম (কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়া করার ড্রাম) ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে। ইতোমধ্যে ৪৪টি কারখানা তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। চালু হওয়ার অপেক্ষায় আরো কিছু কারখানা।

কারখানা চালু প্রসঙ্গে ‘চাইনিজ ট্যানারি’র দায়িত্বে থাকে শহীদুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছয় মাস ধরে কাজ বন্ধ। ফের কবে কাজ শুরু হবে জানি না।’

hemayetpur

এই শিল্প নগরীতে উৎপাদনে যাওয়া বড় ট্যানারির মধ্যে ‘এপেক্স’ অন্যতম। এর এক পাশে বিসিকের অফিস, অন্য পাশের প্লটটি খালি পড়ে আছে। এপেক্স’র সামনের ‘মুক্তি ট্যানারি’র কাজ অর্ধেক হয়ে বন্ধ। পাশের প্লট ‘ক্রিসেন্ট ট্যানারি’র। এর পাশের প্লটও খালি পড়ে আছে।

‘মুক্তি ট্যানারি’র নিরাপত্তাকর্মী আরিফ বলেন, ‘অনেক দিন ধরে কাজ বন্ধ। কবে আবার শুরু হবে জানি না। যদি এখন কাজ শুরু করা হয় তবে বছর দেড়েক লাগবে কারখানা চালু করতে।’

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) সহকারী প্রকৌশলী সোহেলি সাদেক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৪৪টি কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। আমরা মালিকপক্ষকে সবরকম সহযোগিতা করছি। যেহেতু মালিকদের এখন আর হাজারীবাগে থাকার সুযোগ নেই, তাই আশা করছি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করবেন তারা।’

hemayetpur
 
বিসিক সূত্রে জানা যায়, দূষণমুক্ত চামড়া শিল্প নগরী গড়তে শিল্প মন্ত্রণালয় সাভারের হেমায়েতপুরে প্রকল্প নেয় ২০০৩ সালে। বিসিক ১৩ বছর ধরে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঢাকার হাজারীবাগের ১৫৪টি কারখানা এ নগরীতে জমি বরাদ্দ পেয়েছে। এখন পর্যন্ত ৮৬টি প্লটে ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

হেমায়েতপুরের কার্যক্রম প্রসঙ্গে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে বলেন, ‘সেখানে কোনো প্রতিষ্ঠানই পুরোপুরিভাবে কার্যক্রম শুরু করেনি। যারা ওখানে কাজ করছেন তারা সর্বোচ্চ ওয়েট ব্লু পর্যন্ত করেছেন। কাঁচা চামড়া পাকা করার ক্ষেত্রে ওয়েট ব্লু হওয়া মানে ২৫ শতাংশের মতো কাজ সম্পন্ন হওয়া। অর্থাৎ চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ৭৫ শতাংশ কাজ এখনও হাজারীবাগেই হচ্ছে।’  
 
সার্বিক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সব প্রতিষ্ঠানই সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে ওয়েট ব্লু কাজ কারার মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েছে। এখন ক্রাস্ট ফিনিশের জন্য আমাদের তিন-চার মাস সময় লাগবে। আমরা কোর্টে ওই সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু কোর্ট তা রিজেক্ট করে দিয়েছেন। আমাদের প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের রফতানি আদেশ এখন পেন্ডিং। সাভারে এখনও গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়নি। সুতরাং হাজারীবাগে উৎপাদন বন্ধ করে দিলে হেমায়েতপুরে আমরা উৎপাদন করতে পারব না।’

এমএ/এমএআর/আরআইপি

আরও পড়ুন